অভিষেকেই দিনটা নিজের করে নিলেন আগারওয়াল
স্কোর
প্রথম দিন শেষে
ভারত ৮৯ ওভারে ২১৫/২ ( আগারওয়াল ৭৬, পূজারা ৬৮*, কোহলি ৪৭*; কামিন্স ২/৪০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে থেকেও অভিষেক হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও হয়ত মাঠে নামা হতো না মায়াঙ্ক আগারওয়ালের। লোকেশ রাহুল ও মুরালি বিজয়ের বাজে ফর্ম আর পৃথ্বী শ'য়ের ইনজুরিই খুলে দিয়েছে আগারওয়ালের ভাগ্যের দরজা। মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে সুযোগ পেয়েই নিজের আগমনী বার্তা দিয়েছেন তিনি। সেঞ্চুরি না পেলেও ৭৬ রানের ঝকঝকে এক ইনিংসে ভারতের ‘ওপেনিং-দুশ্চিন্তার’ অনেকটাই সমাধান করলেন আগারওয়াল। দিনের শেষভাগে বিরাট কোহলি ও চেতেশ্বর পূজারার ব্যাটিং দৃঢ়তায় প্রথম দিন শেষে অস্ট্রেলিয়াকে বেশ অস্বস্তিতেই রেখেছে ভারত।
রাহুল-বিজয়ের পরিবর্তে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন আগারওয়াল ও হানুমা বিহারি। নতুন জুটি শুরুটা ভালোই করেছিল। আগরওয়ালের চেয়ে বিহারি ছিলেন একটু বেশিই সতর্ক। ২০১০ সালের পর প্রথমবার এশিয়ার বাইরের টেস্টে ভারতের দুই ওপেনার ২০ ওভারের বেশি ব্যাট করবেন, আভাস পাওয়া যাচ্ছিল এমনটাই। ১৯ তম ওভারে প্যাট কামিন্সের দুর্দান্ত এক বাউন্সারে ভাঙ্গে ৪০ রানের উদ্বোধনী জুটি। কামিন্সের বাউন্স একদমই সামলাতে পারেননি বিহারি, তাঁর গ্লোভসে লেগে বল চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে থাকা অ্যারন ফিঞ্চের হাতে। ৬৬ বল খেলে ৮ রান করে ফেরেন তিনি।
চেতেশ্বর পূজারাকে নিয়ে রানের গতি বাড়ান আগারওয়াল। দারুণ সব শট খেলে হতাশ করেছেন জস হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক, নাথান লায়নদের। লাঞ্চের পর পূর্ণ করেছেন ফিফটিও। সপ্তম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট অভিষেকে ওপেনিংয়ে নেমেই হাফ সেঞ্চুরি পেলেন আগারওয়াল। দ্বিতীয় সেশনের বাকিটা সময় দারুণ ব্যাটিং করে পূজারাকে নিয়ে যোগ করেন ৮৩ রান।
অভিষেকেই আগারওয়াল পেতে পারতেন সেঞ্চুরি। চা বিরতির ঠিক আগের বলে আবার আঘাত আনেন কামিন্স। আবারও তাঁর বাউন্সারেই পড়ে আগারওয়ালের উইকেট। ছাড়বেন না খেলবেন, এই ধন্দেই আগারওয়াল ব্যাটে লেগে বল চলে যায় পেইনের কাছে। পেইন ঝাঁপিয়ে পড়ে ধরেছেন ক্যাচ। ৭৬ রানে আগারওয়াল প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তাই অনেকটা আক্ষেপ নিয়েই। আউট হওয়ার আগে অবশ্য তিনি ভেঙেছেন ৭১ বছরের পুরনো রেকর্ড। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অভিষেক হওয়ার ভারতীয়দের মাঝে তাঁর রানই এখন সর্বোচ্চ।
আগারওয়ালকে ফেরানর পর বাকিটা সময় হতাশায় কেটেছে অস্ট্রেলিয়ানদের। পূজারার সাথে বিরাট কোহলি খুব বেশি সুযোগ দেননি অজিদের। পূজারা ছিলেন স্বভাবসুলভ রক্ষণাত্মক মুডে। কোহলিও খুব বেশি আক্রমণাত্মক হননি। তবে যখনই বাজে বল পেয়েছেন, সেটাকে বাউন্ডারিতে রূপান্তরিত করেছেন দুজনই। সিরিজে বারবারই কোহলিকে বিপদে ফেলা লায়নও এদিক নিষ্প্রভ ছিলেন। নিজের ২১ তম ফিফটি পেয়েছেন পূজারা, ফিফটি থেকে তিন রানে দূরে আছেন কোহলিও। দুজনে অপরাজিত থেকেই শেষ করেছেন দিনের খেলা।
দিনের একদম শেষভাগে কোহলিকে ফেরাতে পারত অস্ট্রেলিয়া। স্টার্কের বল কোহলির ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে গেলে ক্যাচটা ধরতে পারেননি পেইন। এই মিসটাই ম্যাচের বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাড়ায় কিনা, সেটা সময়ই বলে দেবে।