• দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তান সিরিজ
  • " />

     

    বক্সিং ডে-তে সেঞ্চুরিয়নে পেসারদের জন্য উইকেটের 'বক্স'

    বক্সিং ডে-তে সেঞ্চুরিয়নে পেসারদের জন্য উইকেটের 'বক্স'    

    সেঞ্চুরিয়ন টেস্ট
    পাকিস্তান ১ম ইনিংস ১৮১ অল-আউট (বাবর ৭১, অলিভিয়ার ৬/৩৭, রাবাদা ৩/৫৯)
    দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস ১২৭/৫* (বাভুমা ৩৮*, ডি ব্রুইন ২৯, আমির ২/২৬, আফ্রিদি ২/৩৬)


    বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনে সেঞ্চুরিয়নে যেন হাজির উইকেটের ‘বক্স’, যার পুরো ভাগটাই গেছে পেসারদের। একদিনেই পড়েছে ১৫ উইকেট, যার মধ্যে একটি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়েছেন ডেল স্টেইন। বাকি ১৪টির মাঝে ছয়টি ডুয়ান অলিভিয়ারের, এক বাবর আজম ছাড়া পাকিস্তান ব্যাটিং লাইন-আপের প্রায় অনেকখানি একা হাতে বিধ্বস্ত করেছেন এই পেসার। তার কিছুটা ফিরিয়ে দিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ আমির, অবশ্য থিউনিস ডি ব্রুইন ও টেমবা বাভুমার জুটি না হলে পাকিস্তানের মতো অবস্থা হতে পারতো স্বাগতিকদেরও। ৫ উইকেট হাতে তারা এখন প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে ৫৪ রানে, প্রথম দিন শেষে খানিকটা এগিয়ে তারাই।

    সেঞ্চুরিয়নের উইকেটে ছিল পেসারদের জন্য ভাল সহায়তা, সেখানে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে শুরুটা সুবিধার হয়নি পাকিস্তানের। দ্বিতীয় ওভারে কাগিসো রাবাদার ফুললেংথ থেকে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ ইমাম-উল-হক ফিরেছেন কোনও রান না করেই। নিজের ১৯তম ওভারে রেকর্ড-ভাঙা উইকেটটা নিয়েছেন ডেল স্টেইন, ফাখার জামান হয়েছেন আউটসাইড-এজড। লাঞ্চের আগে পরপর দুই ওভারে জোড়া আঘাত করেছেন অলিভিয়ের। নিয়মিত ১৪০-এ বল করেছেন, সঙ্গে পিচ থেকে মেলা বাউন্সে জীবন কঠিন করে তুলেছিলেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের। প্রথমে বোল্ড শান মাসুদ, প্যাড-গ্লাভস সবকিছুতেও লেগেও স্টাম্প খুঁজে নিয়েছে বল। আসাদ শফিক হয়েছেন লেংথে পড়ে সোজা হওয়া বলে এলবিডব্লিউ। লাঞ্চের পর আজহার আলির উইকেট পাকিস্তানের দুর্দশা বাড়িয়ে দিয়েছে আরও।

    অলিভিয়ারের লাফিয়ে ওঠা বলে আউটসাইড-এজড হয়েছিলেন আজহার, তৃতীয় স্লিপে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন ডি ব্রুইন। সে ওভারেই ব্যাট দিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে এনেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। ৮৬ রানে নেই ৬ উইকেট, বাবর আজমের সঙ্গী শুধু পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডারের লেজ। সেই লেজকে নিয়ে বাবর শুরু করলেন প্রতি-আক্রমণ। অবশ্য বলা ভাল, সেই আক্রমণ করা ছাড়া আর উপায়ও ছিল না তার। ডেল স্টেইনকে মেরেছেন দশটি চার, ডু প্লেসি এরপর সরিয়ে নিয়েছেন তাকে। ৫৮ বলে ছুঁয়েছেন ফিফটি, শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ৭৯ বলে ৭১ রান করে। রাবাদার বলে বাজে শট খেলেছেন বাবর, ইনিংসে যেরকম শট প্রায় ছিলই না। এর আগে মোহাম্মদ আমিরকে বোল্ড করে ইনিংসে পাঁচ পূর্ণ করেছেন অলিভিয়ার, শাহিন শাহ আফ্রিদিকে কট-বিহাইন্ড করে নিয়েছেন ছয়টি। ইয়াসির শাহ এলবিডব্লিউ হয়েছেন রাবাদার বলে। ২৮ বলে ২১ রান করা হাসান আলি ছিলেন অপরাজিত, যিনি বোলিংয়ে পাকিস্তানকে এনে দিয়েছেন প্রথম ব্রেকথ্রু।

    লেংথ বলটা ভেতরে ঢুকেছে, এইডেন মার্করাম মিস করে হয়েছেন এলবিডব্লিউ। দক্ষিন আফ্রিকার মূল ক্ষতিটা অবশ্য করেছেন আফ্রিদি ও আমিরের যৌথ আক্রমণ। আফ্রিদি পরপর দুই বলে ফিরিয়েছেন ২২ রান করা ডিন এলগার ও অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিকে- প্রথমজন প্রথম স্লিপে, পরেরজন গালিতে দিয়েছেন ক্যাচ। এর আগে হাশিম আমলা গালিতে ধরা পড়েছেন আমিরের বলে। ৪৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান ইনিংসের নিয়তির দিকেই যেন এগুচ্ছিল দক্ষিন আফ্রিকার ইনিংস।

    ডি ব্রুইন ও বাভুমার ৬৯ রানের জুটি সেটা হতে দেয়নি। মাঝে ইয়াসির শাহকে এনে সফলতা পাননি সরফরাজ, এই লেগস্পিনার ৪ ওভারে দিয়েছেন ৬ হারে রান। শেষ পর্যন্ত ব্রেকথ্রু দিয়েছেন আমির, লেংথ বলে তৈরি করা অ্যাঙ্গেল কাল হয়েছে ডি ব্রুইনের। ২৯ রান করে তিনি হয়েছেন কট-বিহাইন্ড।

    দৃশ্যপটে আবারও হাজির হয়েছেন স্টেইন, এবার অবশ্য ব্যাটিংয়ে। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে তিনি এসেছেন কুইন্টন ডি ককের আগে, ১৩ বল খেলে বিপদ ঘটতে দেননি, করেছেন সমানসংখ্যক রান। আরেকদিকে বাভুমা অপরাজিত ৪৭ বলে ৩৮ রানে।