মরা মেলবোর্নে প্রাণ ফেরালেন বুমরা-কামিন্স
স্কোর, তৃতীয় দিন শেষে
ভারত ৪৪৭/৭ ডিক্লে এবং ৫৪/৫ (আগরওয়াল ২৮*; কামিন্স ৪/১০)
অস্ট্রেলিয়া ১৫১ (হ্যারিস ২২, পেইন ২২, খাওয়াজা ২১; বুমরা ৬/৩৩)
মেলবোর্ন টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে কয়েকটি প্রশ্ন এখন উঠবেই।
১। প্রথম দিন শেষে যারা মরা পিচের জন্য কিউরেটরের ফাঁসি চেয়ে ফেলেছিলেন তারা এখন কী বলবেন?
২। বিরাট কোহলির ফলো অন না করার সিদ্ধান্তটা কি বুমেরাং হলো?
৩। জাসপ্রিত বুমরা কি এই মুহূর্তে সব ফরম্যাট মিলে বিশ্বসেরা বোলার?
৪। অস্ট্রেলিয়া কি টেস্ট বাঁচাতে ভাগ্যের সহায়তা পাবে?
প্রশ্নগুলোর উত্তর এক এক করে দিলেই আসলে তৃতীয় দিনের চিত্রটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। প্রথম দুই দিনে যেখানে মাত্র ৭ উইকেট পড়েছিল, সেখানে ড্র খুবই সম্ভাব্য একটা ফল। কিন্তু তৃতীয় দিনে ভোজবাজির মতো পালটে গেল সবকিছু,এক দিনেই পড়ল ১৫টি উইকেট। অস্ট্রেলিয়া ১৫১ রানে অলআউট হয় প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থাকল ২৯২ রানে।
দুই দলের প্রথম ইনিংসের পার্থক্য এতোটাই বেশি, ফলো অন করানোর চিন্তা মাথায় আনতেই পারতেন কোহলি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা করেননি, কিন্তু ব্যাট করতে নেমে ভারত ইনিংস ঘোষণা করবে কখন সেই প্রশ্ন উবে যেতে সময় লাগেনি বেশি। ৫৪ রান তুলতে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত, লিড যদিও হয়ে গেছে ৩৪৬ রানের। জয়ের জন্য এটা যথেষ্টরও বেশি হওয়া উচিত। তবে আবহাওয়ার পুর্বাভাস বলছে, টিম পেইন প্রকৃতির কাছ থেকে একটু সাহায্য পেতে পারেন। এমন বোলিংয়ের পর সেটাও তাঁর দরকার হবে ভালোমতো।
দিনের শুরুটা হয়েছিল অ্যারন ফিঞ্চের আউট দিয়ে। ফ্লিক করতে গিয়ে ইশান্ত শর্মার বলে মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন ফিঞ্চ, মাত্র ৮ রানেই। এরপর শুরু বুমরা শো।শর্ট বলে পরিকল্পনা করে লং লেগে মার্কাস হ্যারিসকে ক্যাচ বানিয়েছেন ইশান্তের, ৩৬ রানে ২ উইকেট নেই অস্ট্রেলিয়া। উসমান খাওয়াজা ২১ রান করে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েছেন জাদেজাকে। ৫৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কাঁপছে অস্ট্রেলিয়া।
এরপর বুমরা দেখালেন তার তূণে কত তীর আছে। শন মার্শকে একদম ফাঁদ পেতেই আউট করলেন। হঠাৎ করে আসা একটা স্লোয়ার ইয়র্কার আশাই করেননি মার্শ, বুঝতে না পেরে এলবিডব্লু। ১৯ রানে আউট হলেন মার্শ, ৮৯ রানে নেই ৪ উইকেট। খানিক পরেই সেটি হয়ে গেল ৫ উইকেটে ৯২। বুমরার এবারের বলটা লেংথ বল, তবে সামান্য রিভার্স সুইং করল। লাইন মিস করে খেলতে গিয়ে বোল্ড ট্রাভিস হেড, ফিরলেন ২২ রানে। মিচেল মার্শ ৯ রান করে স্লিপে ক্যাচ দিলেন জাদেজার বলে। এরপর বুমরা একটু বিরতি নিলেন, কামিন্স আর পেইন মিলে একটু প্রতিরোধের চেষ্টা করলেন। কিন্তু বুমরা ফিরলেন, আর তুলে নিলেন এই সিরিজে বিপজ্জনক হতে থাকা অস্ট্রেলিয়ান টেল এন্ডারকে। প্রথমে তুলে নিলেন পেইনকে, পরে ৬ উইকেটের শেষ দুই শিকার লায়ন ও হ্যাজলউড। এই বছর দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের পর অস্ট্রেলিয়ায়ও ৫ উইকেট হলো বুমরার।
ফলো অন না করিয়ে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৮ রান তুলে ফেলেছিল ভারত। কিন্তু এবার কামিন্সের তোপ, প্রথমে শর্ট বলে তুলে নিলেন বিহারিকে। এরপর পূজারা আর কোহলিকে ঠিক একই ফর্মুলায় আউট। দুজনেই স্টাম্প বরাবর সোজা বল, ফ্লিক করতে গিয়ে দুজনেই ক্যাচ তুলে দিয়েছেন লেগ গালিতে হ্যারিসকে। এবং দুজনেই পেয়েছেন ডাক। রাহানের বলটা ছিল প্যাডের ওপর, কিন্তু শট খেলতে গিয়ে স্টাম্পের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন পেইনকে। প্রথম ৪ উইকেটই কামিন্সের, পরে এসে রোহিতকে তুলে নিলেন হ্যাজলউডকে। বোলাররা নিজেদের কাজটা আজ করেছেন, তবে ম্যাচ বাঁচাতে তার চেয়েও দারুণ কিছু করতে হবে অজি ব্যাটসম্যানদের।