ভারতের দিনে বৃষ্টি আর কামিন্সের দিকে তাকিয়ে অস্ট্রেলিয়া
চতুর্থ দিন শেষে
ভারত ৪৪৭/৭ ডিক্লে ও ১০৬/৮ ডিক্লে (আগারওয়াল ৪২; কামিন্স ৬/২৭)
অস্ট্রেলিয়া ১৫১ ও ২৫৮/৮ (কামিন্স ৬১*; জাদেজা ৩/৮৩, বুমরা ২/৫৩, শামি ২/৭১)
তৃতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়া ওভাবে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ার পরেও মনে হচ্ছিল, হারটা শুধু সময়ের ব্যাপার। চতুর্থ দিন শেষে যে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে টিকে আছে, তার কৃতিত্ব প্রায় পুরোটাই প্যাট কামিন্সের। ভারতের প্রতিপক্ষ মেলবোর্নে আসলে অস্ট্রেলিয়া নয়, ব্যাট আর বল হাতে কামিন্সই।
অবশ্য এখনও যে অবস্থা, তাতে ভারতের জয়ের সম্ভাবনা ওনেক অনেক বেশি। এখনও জয়ের জন্য ১৪১ রান দরকার স্বাগতিকদের, হাতে আছে দুই উইকেট। কামিন্সের সঙ্গে ক্রিজে আছে লায়ন। তবে কামিন্স তো আছেনই, ভারতের জয়ের সম্ভাবনা একটু হলেও কমতে পারে আরেকটা কারণে। মেলবোর্নে শেষ দিনে বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে, অস্ট্রেলিয়ার জন্য যা হয়ে আসতে পারে আশীর্বাদ হয়ে।
তৃতীয় দিনটা যেখান শেষ করেছিলেন, কামিন্স আজ শুরু করেছিলেন সেখান থেকেই। ঋষভ পান্ট ও ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়াল আজ কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৯ রান যোগ করে ফেলেছিলেন, লিড নিয়ে গিয়েছিলেন ৪০০র কাছাকাছি। এরপর কামিন্সের নিচু হয়ে আসা বলে আগরওয়াল বোল ৪২ রানে। এরপর দারুন এক শর্ট বলে কামিন্স ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন জাদেজাকে। পান্ট ভালোই খেলছিলেন, ৪৩ বলে ৩৩ রান করে ফেলেছিলেন। কিন্তু হ্যাজলউডের বলে শেষ পর্যন্ত ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ১০৬ রানে অষ্টম উইকেট হারানোর পর ইনিংস ঘোষণা করেন কোহলি, অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৯৯ রান।
ম্যাচের প্রায় দুই দিনের কাছাকাছি বাকি তখনো, কোহলি আরেকটু সময় নিতে পারতেন কি না , সেই প্রশ্নও হয়তো উঠেছে। তবে সেটা মিলিয়ে যেতেও বেশি সময় লাগেনি। দ্বিতীয় ওভারেই ছোবল বুমরার, এবার কাট করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন ফিঞ্চ। এরপর হ্যারিস চলে গেছেন আনলাকি থার্টিনে, জাদেজার বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে। খাওয়াজা শুরুটা ভালোই করেছিলেন, কিন্তু আরও একবার বড় করতে পারেননি ইনিংসটা। শামির ভেতরের দিকে ঢোকা বলে এলবিডব্লু হয়ে গেছেন ৩৩ রানে।
শন মার্শ ভালোই খেলছিলেন, কিন্তু আবারও বুমরার শিকার হতে হলো। ৪৪ রানের ইনিংসটা থামল বুমরার বলে ফ্লিক মিস করে এলবিডব্লু হয়ে। রিভিউ নিয়েছিলেন, লাভ হয়নি। মিচেল মার্শ ১০ রান করে জাদেজার বলে উইকেট দিয়ে এসেছে, ট্রাভিস হেডের ৩৪ রানের ইনিংস শেষ হয়েছে ইশান্তের বলে বোল্ড হয়ে। টিম পেইনও যখন ২৬ রান করে আউট হলেন, ১৭৬ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। খেলাটা চতুর্থ দিন শেষ হয়ে যাবে বলেই মনে হচ্ছিল।
তবে কামিন্স অন্য কিছু ভেবেছিলেন। শুরুতে স্টার্ককে নিয়ে ৩৯ রানের একটা জুটি গড়লেন। স্টার্ক আউটের পর লায়নকে নিয়ে বাকি দিনে তুললেন আরও ৪৩ রান। এর মধ্যে পেয়ে গেছেন ফিফটি, খেলেছেন স্পেশালিসস্ট ব্যাটসম্যানদের হিংসে করার মতো দুর্দান্ত সব কাভার আর স্ট্রেট ড্রাইভ। এক টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ফিফটি ও নয় উইকেট কামিন্স ছাড়া আছে শুধু হিউ ট্রাম্বল, ওয়ার্ন ও জনসনের। এর মধ্যে জনসন আর কামিন্স তা দুইবার করেছেন। তবে এই ম্যাচ জেতাতে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করতেই হবে কামিন্সকে, যদি না প্রকৃতি হাত বাড়িয়ে না দেয়।