'বেসিকে' থাকতে না পারাকেই দায়ী করলেন মাশরাফি
মাশরাফি বিন মুর্তজার জন্য অভিজ্ঞতাটা নতুন নয় একদমই। অধিনায়ক মাঠে বিদেশের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ এর আগেও পেতে হয়েছে, এই নিউজিল্যান্ডেই তো তা পেতে হয়েছিল দুই বছর আগে। তবে এবার গিয়ে তিন ম্যাচে হেরে আসা মেনে নেওয়া তাঁর জন্য একটু বেশিই কঠিন হওয়ার কথা। সিরিজটা বিশ্বকাপের আগে বলে শুধু নয়, বাংলাদেশ ওয়ানডে দলও তো আগের চেয়ে বেশি পরিণত। তার চেয়েও বড় কথা, বাংলাদেশ জয় দূরে থাক, জয়ের আশাও জাগাতে পারেনি সেভাবে। এত কিছুর পর আজ ডানেডিনের সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কের দিকে তির উঠবেই। সেখানেই মাশরাফি বললেন, ‘বেসিকে’ গড়বড় করেই আজ বাংলাদেশ সবকিছু ওলট পালট করে ফেলেছে।
প্রথম দুই ম্যাচে যেভাবে বাংলাদেশ হেরেছে, আজ তার চেয়ে অন্য রকম কিছুর আশা ছিল। শুরুতে বোলিং নিয়েছিল বাংলাদেশ, একটা সময় পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের রানও খুব বেশি ছিল না। তবে জিমি নিশম আসার পরেই তরতর করে বাড়তে শুরু করে রানের গতি। মাশরাফি ঐ সময় খেই হারিয়ে ফেলাকেই বড় করে দেখছেন, ‘নিশমের ইনিংসটাই টার্নিং পয়েন্ট। ৩৫ ওভার পর্যন্ত তাদেরকে আমরা এমন একটা জায়গায় রেখেছিলাম, ওই সময় আরেকটু ভালো বোলিং বা ফিল্ডিং করলে ওদেরকে ৩০০র নিচে রাখারও একটা সুযোগ ছিল। চারজন পড়ে যাওয়া মানে ওদের টেল এন্ডারে জুটি না হতে দিলে অবশ্যই ওদেরকে আটকে রাখার সুযোগ ছিল। তবে ওই সময় যে শট খেলেছে বা ঝুঁকি নিয়েছে তাতে ওরা সফল হয়েছে। আর আমরা পারিনি।’
ফিল্ডিং শুরুর দিকে দুর্দান্ত ছিল, বোলিংও তাই। কিন্তু শেষের দিকে দুই দিকেই খেই হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। মাশরাফি নিজেও উত্তরটা খুঁজছেন, ‘একটা জিনিস, ফিল্ডিং চাইলেই উন্নতি করা যায়। বোলিং বা ব্যাটিংয়ে একটু সময় লাগে। এখানে স্কিলের ব্যাপার আছে। ফিল্ডিংয়ে চেষ্টা করলে দেখতে ভালো লাগে, চেষ্টাটা বোঝা যায়।। হয়তো সবাই মানসিকভাবে একটু ধাক্কা খেয়েছিল। মানসিকভাবে একটু তাড়াহুড়োও ছিল, তাই গড়বড় হয়ে গেছে। যে ফিল্ডার থাকে তারা বিভ্রান্ত হয়ে যায়। আর সব সময় একই ছন্দে তো থাকা সম্ভব নয়, ক্যাচ মিস তো হতেই পারে।’
সব মিলে ‘বেসিকের’ জায়গাতেই গড়বড় করে ফেলাটা সমস্যা মনে করছেন অধিনায়ক, ‘প্রথম দুই ম্যাচে না হওয়ার পর আমি না, পুরো দল তারপরও পজিটিভ ছিলাম। আমরা মনে হয় ভিন্ন কিছু করতে গেছিলাম। এই উইকেটে একটু সুইং বা বাউন্স থাকবে স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু বেসিকে থাকাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যেটা আমরা থাকতে পারিনি। কালকে হয়তো চিন্তা করিনি, কারণ পজিটিভ তো থাকতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে তামিম রান করেছে, কিন্তু এশিয়া কাপে ২০-২৫ রানে ৩ উইকেট গেছে, এখানেও তাই হয়েছে।’
বিশ্বকাপের আগে এটা একরকম অশনী সংকেতই। তারপরও আয়ারল্যান্ড সিরিজের এখনো কিছু দিন বাকি, তবে মাশরাফি সেখানেই চোখ রাখছেন, ‘পরের টুর্নামেন্টের এখনও দুই মাস বাকি, আমাদের একটা পথ বের করতে হবে। আয়ারল্যান্ডে প্রায় একই রকম কন্ডিশন, আগের বার তো ঘাস বেশি ছিল। অনেক সময় কন্ডিশন আমাদের পক্ষে ছিল না। কীভাবে রান করব, সেটা আমাদের বের করতে হবে। ১০ ওভার পরে ব্যাটিং করা সহজ হয়ে যায়, এটা আমাদের বুঝতে হবে।’
আপাতত এই নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে সাব্বির-মিঠুন-সাইফদের পারফরম্যান্সই প্রাপ্তি হিসেবে দেখছেন অধিনায়ক, ‘আমাদের লোয়ার মিডল অর্ডারে আমরা কিছু রান করেছি। মিঠুন দুই মাচে রান করেছে। সাব্বির আজকে সেঞ্চুরি করেছে, আগের ম্যাচেও ভালো করেছিল। সাইফ উদ্দিন রান করছে, আজ বোলিংও ভালো করছে। ইতিবাচক যা আছে সেটা একটু পেছনের দিকে, কিন্তু ম্যাচ জিততে হলে টপ অর্ডার থেকে কিছু করতে হবে। নেতিবাচক তো অনেক কিছু, তবে কিছু ইতিবাচক আছে।’