হ্যামিল্টন থেকে মিরাজদের শিখতে বললেন যোশি
এমন নয়, এরকম অভিজ্ঞতা আগে হয়নি বাংলাদেশের। টেস্টের সারাদিন মাথা খুঁটে মরে কোনো উইকেটও না নেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। তবে হ্যামিল্টনে সেডন পার্কে মেহেদী হাসান মিরাজের যে অভিজ্ঞতা হলো, সেটা হয়নি কারোরই। এক ইনিংসেই দিয়েছেন ২৪৬ রান, ক্রিকেট ইতিহাসেই যেটি অন্তত ৪৫ ওভার বোলিংয়ে সবচেয়ে বাজে ইকোনমি। সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশের স্পিন কোচ সুনীল যোশিও বললেন, পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেননি মিরাজরা।
মিরাজকে একা কাঠগড়ায় দাঁড় করালে ভুল হবে। হ্যামিল্টন টেস্টে ৭০০ পেরিয়ে যখন ইনিংস ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশের কোনো বোলার পাশ নম্বরই পাচ্ছেন না। পার্ট টাইমার সৌম্য সরকার দুই উইকেট পেয়েছেন, মিরাজ দুই উইকেট পেলেও সেটির জন্য মূল্য দিতে হয়েছে অনেক বেশি। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে এক ইনিংসে এর চেয়ে বেশি রান দেননি কেউই।
তবে শুধু রান দেওয়ার জন্য নয়, যেভাবে বোলাররা ভুগেছেন সেটিই দুশ্চিন্তার রেখা আরও বেশি জাগাবে রোডস-যোশি-ওয়ালশের কপালে। বিশেষ করে স্পিনার হিসেবে মিরাজের যন্ত্রণাটা যোশিরই সবচেয়ে বেশি বোঝার কথা। বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নিউজিল্যান্ডে এসে সব স্পিনাররাই কমবেশি ভুগেছেন, ‘ওরা যখন উপমহাদেশে খেলতে আসে, তখন কমবেশি কিন্তু স্পিনের বিপক্ষে ভোগে। এখানে কন্ডিশন আবার অন্যরকম, বোলারদের জন্য এটা আরও বেশি চ্যালেঞ্জের। বিশেষ করে মিরাজের জন্য, সে এখনও তরুণ। বল করতে করতেই শিখবে সে। নিউজিল্যান্ডে এসে এমনকি হরভজন (সিং), অনীলদের (কুম্বলে) মতো বোলারকেও ভুগতে হয়েছে। আমাদের বোলারদের একটু সময় দিতে হবে। আমি জানি, ওরা একসময় সফল হবে। ’
কিন্তু মিরাজদের এভাবে ভোগার কারণ কী? যোশি মনে করছেন, কন্ডিশন বা উইকেট নয়, মানসিকতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারাটাই সমস্যা, ‘আমার মনে হয় না কন্ডিশনের সঙ্গে মানিতে নিতে সমস্যা হয়েছে, সমস্যাটা হচ্ছে মানসিকতায়। আপনি যখন প্রথম দিনে বল করতে যাবেন, আপনাকে খুবই সুশৃঙ্খল হতে হবে। ফিঙ্গার স্পিনারদের প্রথম দিনে এমনিতেও খুব বেশি কিছু করার থাকে না। আপনাকে শুধু জায়গামতো বল করে যেতে হবে। ধারাবাহিক হতে হবে, অন্য বোলারদের সাহায্য করতে হবে।’
শুধু স্পিন বা পেস নয় অবশ্য, বাংলাদেশ ভুগেছে ব্যাটিংয়েও। যোশি প্রস্তুতির অভাবকে এজন্য দায়ী করে অবশ্য মনে করিয়ে দিলেন, ‘দেশে আমরা যেরকম কন্ডিশনে খেলি সেটা যদি দেখেন আপনার ভালো একটা প্রস্তুতি দরকার। আমাদের এই সফরের আগে দেখা গেল শুধু বিপিএল খেলেছি। আমি এটার ওপর দায় চাপাচ্ছি না, কিন্তু প্রস্তুতিটা আদর্শ হয়নি। আবার এটাও ঠিক, ব্যক্তিবিশেষের ওপর প্রস্তুতি নির্ভর করে। তামিমকে দেখুন, কন্ডিশনের সঙ্গে কেমন মানিয়ে নিয়েছে। প্রতিটা খেলোয়াড় কীভাবে প্রস্তুতি নেবে, মানসিকতা কীভাবে বদলাবে সেটা কিন্তু তার নিজের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে।’