• ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
  • " />

     

    কোহলির সেঞ্চুরি, জাদুকরী বুমরাহতে নাগপুর-রোমাঞ্চ জিতল ভারত

    কোহলির সেঞ্চুরি, জাদুকরী বুমরাহতে নাগপুর-রোমাঞ্চ জিতল ভারত    

    দ্বিতীয় ওয়ানডে, নাগপুর 
    ভারত ২৫০, ৪৮.২ ওভার (কোহলি ১১৬, শঙ্কর ৪৬, কামিন্স ৪/২৯) 
    অস্ট্রেলিয়া ২৪২, ৪৯.৩ ওভার স্টোইনিস ৫২, হ্যান্ডসকম্ব ৪৮, কুলদিপ ৩/৫৪, বুমরাহ ২/২৯) 
    ভারত ৮ রানে জয়ী


    বিরাট কোহলির সেঞ্চুরির পর জাসপ্রিত বুমরাহর জাদুকরী ‘ডেথ-ওভার’ বোলিংয়ের সঙ্গে বিজয় শঙ্করের স্বপ্নালু শেষ ওভারে নাগপুরে অস্ট্রেলিয়াকে ৮ রানে হারিয়ে সিরিজে ২-০তে এগিয়ে গেছে ভারত। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচের রানতাড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে অনেকদূর নিয়ে গিয়েছিলেন পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও মার্কাস স্টোইনিস। তবে শেষ করে আসতে পারেননি কেউই। ১১ রান প্রয়োজন ছিল শেষ ওভারে, শঙ্কর ২ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট, যার মধ্যে স্টোইনিসের উইকেটটি তার ক্যারিয়ারেরই প্রথম। 

     

     

    শেষ ৬৬ বলে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ৬৮ রান, ৫ উইকেটে। ৪৩তম ওভারে কুলদিপ যাদবের কাছ থেকে অ্যালেক্স ক্যারি ও স্টোইনিস তুললেন ১৫, ম্যাচের মোড়টা অস্ট্রেলিয়ার দিকে ঘুরে গেল তখন। অবশ্য তার আগে থেকেই ধ্বংসাত্মক বোলিং শুরু করেছেন বুমরাহ, ৪০তম ওভারের পর থেকে ৪ ওভার বোলিং করেছেন, দিয়েছেন মাত্র ৮ রান! এর মাঝে ৪৬তম ওভারে ১ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট! 

    ৪৯তম ওভারের শেষ বলে চার মেরে আবারও অস্ট্রেলিয়াকে ফিরিয়েছিলেন ন্যাথান লায়ন, সঙ্গে শেষ ওভারের শুরুতে স্ট্রাইকও গিয়েছিল ফিফটি করা স্টোইনিসের কাছে। তবে কেদার যাদবকে ছাপিয়ে শঙ্করকে আনার সিদ্ধান্তটা যে ঠিক ছিল কোহলির, সেটা তিনি প্রমাণ করলেন প্রথম বলেই স্টোইনিসকে এলবিডব্লিউ করে। এরপর জ্যাম্পাকে বোল্ড করে তো ভারতকেই ভাসালেন উল্লাসে। 

    নাগপুরের এ উইকেটে ২৫০ রানের সম্বল খুব কম ছিল না, তবে অ্যারন ফিঞ্চ ও উসমান খাওয়াজার ওপেনিং জুটি ভারতকে হতাশ করে গেছে অনেক্ষণ। প্রথম ব্রেকথ্রু এনেছেন কুলদিপ যাদব, ফিঞ্চকে এলবিডব্লিউ  করে। পরের ওভারেই খাওয়াজা ক্যাচ দিয়েছেন কেদার যাদবের বলে। অস্ট্রেলিয়ার আশা হয়ে ছিলেন এরপর হ্যান্ডসকম্ব। 

    ৪৮ রান করে তিনি ফিরেছেন রবীন্দ্র জাদেজার দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে। শর্ট কাভার থেকে সিংগেল চুরি করতে গিয়েছিলেন, জাদেজা স্টাম্প ভেঙেছেন সরাসরি। স্টোইনিস ও ক্যারির জুটিতে এরপরও পথ হারায়নি অস্ট্রেলিয়া, ক্যারিকে বোল্ড করে আবারও ব্রেকথ্রুটা দিয়েছিলেন কুলদিপ। এরপরের গল্পটা তো বুমরাহ-শঙ্করেরই। 

    ভারতের ব্যাটিংয়ের গল্পটা ছিল কোহলির, সঙ্গে ছিলেন শঙ্কর ও জাদেজা। 

    প্রথম উইকেট পড়েছিল শুন্যতে, কোহলি যতক্ষণ ছিলেন, ভারতের রান উঠেছে ২৪৮। কোহলি ফেরার পর উঠেছে আর ২ রান। কোহলির ইনিংস বাদ দিলে তাই ভারতের যেন থাকে না কিছুই! ৪০তম সেঞ্চুরির দিনে কোহলি খেলেছেনও সেভাবেই। অপেক্ষা করেছেন নিজের সুযোগের, স্ট্রোক খেলেছেন সেভাবেই। ১০টি বাউন্ডারি মেরেছেন, অবশ্য শঙ্কর ও জাদেজা ছাড়া সেভাবে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি তাকে, কোহলির ইনিংস বাধা পেয়েছে তাতেই। 

    প্যাট কামিন্সকে কাট করতে গিয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েছিলেন রোহিত। প্রথম ওভারে তিনি ফেরার পর প্রায় নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারিয়েছে ভারত। বিজয় শঙ্কর ও রবীন্দ্র জাদেজা কোহলিকে সঙ্গ দিয়েছেন, মূলত তাদের দুজনের সঙ্গে কোহলির যথাক্রমে ৮১ ও ৬৭ রানের জুটিতেই লড়াই করার মতো স্কোর পেয়েছিল ভারত। 

    ধাওয়ান ও কোহলি শুরুর উইকেটের চাপ সরিয়ে ফেলেছিলেন প্রায়, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের স্পিনে কাবু হয়েছেন ধাওয়ান, যে এলবিডব্লিউটা অস্ট্রেলিয়া পেয়েছে রিভিউ নিয়ে। আম্বাতি রাইডু এলবিডব্লিউ হয়েছেন ন্যাথান লায়নের বলে, রিভিউ নিয়েও বাঁচেননি তিনি। বিজয় শঙ্কর করেছেন ৪১ বলে ৪৬ রান। অ্যাডাম জাম্পাকে করা কোহলির ড্রাইভে নন-স্ট্রাইকে রান-আউট হয়ে শেষ হয়েছে শঙ্করের ইনিংস।পরপর দুই বলে কেদার যাদব ও এমএস ধোনি হয়েছেন তুলনামূলক খরুচে বোলিং করা জাম্পা জাম্পার শিকার, হ্যাটট্রিক বলটা ঠেকিয়ে কোহলিকে এরপর ভাল সঙ্গ দিয়েছেন জাদেজা। কামিন্সের বলে মিড-অফে ক্যাচ দিয়েছিলেন জাদেজা, ভারত তাদের শেষ ৪ উইকেট হারিয়েছে মাত্র ১২ রানে, কোহলির উইকেটসহ যার তিনটিই নিয়েছেন কামিন্স।