১০ জনের আর্সেনালকে হারিয়ে রেনের স্মরণীয় রাত
ফ্রান্সের ফুটবল সম্পর্কে ধারণাটা ভালোই আছে উনাই এমেরির। কিন্তু আর্সেনালের ম্যানেজারের সেই ধারণা কাজেই আসলো না কোনো। আগের ৯ বারই ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ফ্রেঞ্চ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছিল আর্সেনাল। শতভাগ জয়ের সেই রেকর্ডটাও আর অটুট থাকল না। ইউরোপা লিগের শেষ ষোলতে রেনের মাঠে গিয়ে ৩-১ গোলে হেরে এসেছে আর্সেনাল। দশজনের দলে পরিণত হওয়ার আগ পর্যন্ত লিডেই ছিল গানাররা। কিন্তু ৪২ মিনিটে সক্রেটিস পাপাস্থাথপোলাস দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পরই খেলার রঙ বদলে যায়।
রেনের মাঠে শুরুটা দুর্দান্ত ছিল আর্সেনালের। ৪ মিনিটেই অ্যালেক্স ইওবির গোলে এগিয়ে গিয়েছিল তারা। এরপর প্রথম আধ ঘন্টা আর্সেনালই খেলা নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিন্তু আর্সেনাল দশ জনের দলে পরিণত হওয়ার পর কড়ায় গন্ডায় শোধও তুলেছে রেনে। ৪১ মিনিটে লাল কার্ড দেখেছিলেন পাপাস্থথপোলাস। পরের মিনিটেই বউরিগেদের দারুণ স্ট্রাইক রেনেকে ফিরিয়ে আনে ম্যাচে। এরপর প্রথমার্ধের বাকি সময়ে লিডও নিতে পারত রেনে, কিন্তু স্ট্রাইকারদের ভুলে তখন আর এগিয়ে যাওয়া হয়নি তাদের।
ইংলিশ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কখনই এর আগে জেতা হয়নি রেনের। লিগ ওয়ানে তারা আছে ১০ নম্বরে। এবারই প্রথম ইউরোপা লিগের গ্রুপপর্ব উতরে এসেছে তারা। আর্সেনালের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধটা সেই রেনেই শুরু করে দুর্দান্তভাবে। পিটার চেককে বেশ কয়েকবার পরীক্ষায়ও ফেলে তারা। আর্সেনালকে চাপে ফেলে ৬৫ মিনিটে এগিয়ে যায় তারা। নাচো মনরিয়েল আত্মঘাতী গোল করে আর্সেনালের বিপদ বাড়ান আরও।
ঘরের মিডফিল্ডে ক্লেমেন্ত গ্রেনিয়ের ছিলেন দারুণ। পুরো ম্যাচে ভুল বলতে গেলে করেন একটিও। আক্রমণে হাতেম বেন আরফাও আর্সেনালকে ভুগিয়েছেন বেশ। এক গোলের জয়টাই রেনের জন্য উৎসবের মতো হত। কিন্তু শেষদিকে ইস্মাইলা সার হেডে গোল করে সেই উৎসবে রঙ চড়ান আরও। ৩-১ গোলের জয় নিয়ে তাই রেনে এখন স্বপ্ন দেখছে প্রথমবারের মতো ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার। তবে আর্সেনাল ম্যানেজার উনাই এমেরি এমন হারের পরও আশা হারাচ্ছেন না। তার বিশ্বাস এখান থেকেও কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা খোলাই আছে আর্সেনালের।
ইউরোপা লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগে আর্সেনাল বাদে বাকি বড় দলগুলোর প্রায় সবাই জয় পেয়েছে। আটকে গেছে কেবল ইন্টার মিলান। জার্মানিতে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের সঙ্গে গোলশূন্য করেছে তারা। ২২ মিনিটে অবশ্য পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যেতে পারত ইন্টার, কিন্তু মার্সেলো ব্রজোভিচ স্পটকিকটা গোলে পরিণত করতে পারেননি। সান সিরোর ম্যাচের জন্যই তাই ঝুলে থাকল ইন্টারের ভাগ্য।
চেলসি স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ডায়নামো কিয়েভকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে। পেদ্রো, উইলিয়ানের সঙ্গে গোল করেছেন হুডসন ওদয়ও। নাপোলিও ঘরের মাঠে সালজবুর্গের বিপক্ষে জিতেছে একই ব্যবধানে। স্পেনে স্লাভিয়া প্রাগের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে সেভিয়া। ভিয়ারিয়াল জেনিটের মাঠে জিতেছে ৩-১ গোলে। আর ভ্যালেন্সিয়া ঘরের মাঠে ক্রাসনোডারকে হারিয়েছে ২-১ ব্যবধানে। ইউরোপা লিগের শেষ ষোলর দ্বিতীয় লেগ হবে পরের সপ্তাহেই।