• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    চ্যাম্পিয়নস লিগের পঞ্চম সপ্তাহ: গোল বন্যা, ম্যান সিটি ও রিয়াল মাদ্রিদের শঙ্কা

    চ্যাম্পিয়নস লিগের পঞ্চম সপ্তাহ: গোল বন্যা, ম্যান সিটি ও রিয়াল মাদ্রিদের শঙ্কা    

    চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল বন্যার এক সপ্তাহ কাটল। বড় ম্যাচগুলো রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে, সেই সাথে বড় দলগুলোও ছড়ি ঘুরিয়েছে; আবার বড় নামগুলোর কপালেও পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। নতুন ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়নস লিগ যেন দিচ্ছে দুহাত ভরেই।

    সপ্তাহের প্রথম ম্যাচেই বিগত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে নাস্তানাবুদ করা এসি মিলান ছিল বিপদে। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে দুই গোলে এগিয়ে থেকেও ব্রাতিস্লাভার মাঠে মাথাচাড়া দিয়েছিল শঙ্কা। শেষদিকে ব্রাতিস্লাভা এক গোল ফেরত দিয়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে না পেরে বরং খেয়ে বসল লাল কার্ড, ম্যাচের ভাগ্য তাই লেখা হয়ে গেল ওখানেই। ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ, রাফায়েল লেয়াও ও ট্যামি আব্রাহামের গোলে তাই জয় পেয়েছে এসি মিলান।

    এরপরেই প্রাহার মাঠে গিয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপে জয় নিয়ে ফিরেছে ডিয়েগো সিমিওনের দল, ছেলে জিউলিয়ানো সিমিওনে যেন সেখানে প্রাণভোমরা। আর গোলগুলোও এনে দিয়েছেন দুই আর্জেন্টাইন - হুলিয়ান আলভারেজ ও আনহেল কোরেয়া। দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিকে আলভারেজ গোল বের করে ইঙ্গিত দিয়েছেন ধীরে ধীরে অ্যাটলেটিকোর সিস্টেমে স্বচ্ছন্দ হতে শুরু করার। সেই সাথে শততম ম্যাচ খেলতে নামা গ্রিজমানও ম্যাচটা রাঙিয়েছেন গোল দিয়েই।

    অন্যদিকে লিগে হোঁচট খাওয়ার পর বার্সা ঘুরে দাঁড়িয়েছে সহজ এক জয় দিয়ে। তবে ম্যাচের হাইলাইট হয়ে ছিলেন লেভানডফস্কি। মাত্র তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ছুঁয়েছেন ১০০ চ্যাম্পিয়নস লিগ গোলের মাইলফলক। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসির পর এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন সবচেয়ে বেশি বয়সে।

    লেভানডফস্কির রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নেওয়ার দিনে টানটান উত্তজেনার এক ম্যাচে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় পিএসজির বিপক্ষে শেষ হাসি হেসেছে বায়ার্ন মিউনিখ। কিম মিন-জায়ের গোলের এগিয়ে যাওয়ার পর পিএসজি চেষ্টা করেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি, উল্টো উসমান ডেম্বেলে লাল কার্ড দেখে বসায় খুব একটা লাভও হয়নি তাদের।

    তবে দিনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ফলাফল ছিল ম্যানচেস্টার সিটির ড্র। পাঁচ ম্যাচ পর অবশেষে হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পেরেছে পেপ গার্দিওলার দল। তবে ৯৪২ ম্যাচের কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম কোনো দল নিয়ে তিন গোলে এগিয়ে থেকেও জয় বের করতে পারেননি। সেই সাথে চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে ৭৫ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থেকেও জয় তুলে নিতে ব্যর্থ হওয়া প্রথম দল ম্যানচেস্টার সিটি। অথচ জোড়া গোল করে আরলিং হালান্ড সবচেয়ে কম ম্যাচে ৫০ চ্যাম্পিয়নস লিগ গোলের রেকর্ড গড়েছিলেন। শেষ ১৫ মিনিটের ঝড়ে সেই তৃপ্তি ধূলিসাৎ করে দেয় ডাচ ক্লাব ফেয়েনুর্দ।

    ম্যানচেস্টার সিটির মতোই শঙ্কায় চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। টানা তিন হারে তারা নেমে গেছে পয়েন্ট তালিকার ২৪ নম্বরে, রেলিগেশন জোন থেকে এক ধাপ উপরে এখন তারা! উড়তে থাকা লিভারপুলের বিপক্ষে অ্যানফিল্ডে গিয়ে রীতিমত ধরাশায়ী হয়ে আসতে হয়েছে তাদের। একদিকে পেনাল্টি মিস করেছেন কিলিয়ান এমবাপে, তো অন্যদিকে করেছেন মো সালাহ। তাতে অবশ্য লিভারপুলের কোনো ক্ষতিই হয়নি। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স, সেই সাথে গোল, আর সাথে কোডি গাকপোর শেষ সময়ের গোলে আট ম্যাচ পর রিয়াল জুজু কাটাল লিভারপুল, জয় পেল ২০০৯ সালের পর। প্রিমিয়ার লিগের পাশাপাশি তাই এখন চ্যাম্পিয়নস লিগের পয়েন্ট তালিকারও শীর্ষে স্লটের দল।

    শেষ দিনে অবশ্য সবচেয়ে নাটকীয় ম্যাচ হয়েছে ভিলা পার্কে। জুভেন্টাসের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এক জয় পাওয়ার তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে পারতেন উনাই এমেরি। অথচ জুভেন্টাস গোলকিপারের ওপর ফাউলর দায়ে রজার্সের গোল বাতিল হয়ে যাওয়ায় ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। একদিকে এমি মার্টিনেজের অসাধারণ এক সেইভ, অন্যদিকে শেষ মুহূর্তে আনন্দ থেকে গ্লানি - অ্যাস্টন ভিলা গতকাল গিয়েছে সব ধরনের অনুভূতির মধ্য দিয়েই।

     

    স্লোভান ব্রাতিস্লাভা ২-৩ এসি মিলান
    স্পার্টা প্রাহা ০-৬ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
    ম্যানচেস্টার সিটি ৩-৩ ফেয়েনুর্দ
    বার্সেলোনা ৩-০ ব্রেস্ত
    বায়ার্ন মিউনিখ ১-০ পিএসজি
    ইন্টার মিলান ১-০ রেড বুল লাইপজিগ
    ইয়াং বয়েজ ১-৬ আটালান্টা
    বেয়ার লেভারকুসেন ৫-০ রেড বুল সালজবুর্গ
    স্পোর্টিং লিসবন ১-৬ আর্সেনাল
    লিভারপুল ২-০ রিয়াল মাদ্রিদ
    অ্যাস্টন ভিলা ০-০ জুভেন্টাস
    ডায়নামো জাগ্রেব ০-৩ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড