মেসি-সুয়ারেজে অবলাক বাধা পেরিয়ে শিরোপার পথে হাঁটছে বার্সা
শিরোপার পথে একমাত্র কাটা ছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ন্যু ক্যাম্পে সেটা উপড়ে ফেলে টানা দ্বিতীয় লা লিগা শিরোপার পথে হাঁটছে বার্সেলোনা। ম্যাচের বেশিরভাগ সময় অবশ্য অ্যাটলেটিকোর ইয়ান অবলাক একাই বার্সার পথে বাধা হয়ে ছিলেন। কিন্তু এক মিনিটের ঝড়ে লুইস সুয়ারেজ ও লিওনেল মেসির কাছে পরাস্ত হয়ে অবলাকের আর নায়ক হয়ে ওঠা হয়নি। ন্যু ক্যাম্পে বার্সেলোনা জিতেছে ২-০ গোলে। লিগের ৭ ম্যাচ বাকি থাকতে তাই দুইয়ে থাকা অ্যাটলেটিকোর চেয়ে মেসিরা এগিয়ে গেলেন ১১ পয়েন্টে। বাকি কাজটা আপাতত আনুষ্ঠানিকতাই মনে হচ্ছে!
৮৫ আর ৮৬ মিনিটে লুইস সুয়ারেজ ও লিওনেল মেসির গোলে আগেও অবশ্য একবার ম্যাচের পটপরিবর্তন হয়েছে। তাতে ম্যাচের আধঘন্টা পেরুনোর আগেই ১০ জনের দলে পরিণত হয়েছিল অ্যাটলেটিকো। রেফারির অ্যান্ডাভটেজ না পেয়ে চটেছিলেন। তেড়ে গিয়ে কিছু একটা বলেছেনও। সেটা রেফারি ভালোভাবে নেননি। রেফারি তাই সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়া করেন ডিয়েগো কস্তাকে। এরপরও ১০ জনের দল নিয়েও ভালোভাবেই বার্সার লড়াই করে যাচ্ছিল অ্যাটলেটিকো।
ডিয়েগো গডিন, হোসে মারিয়া হিমেনেজরা তো ছিলেনই- তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন অবলাকও। ডিয়েগো সিমিওনের গোছানো দলটা বার্সাকে ভোগাচ্ছিল তাদের মাঠেই। বার্সাকেও তাই ম্যাচের শেষ পর্যন্ত খাটতে হয়েছে জয় ছিনিয়ে আনতে। প্রথমার্ধে ফিলিপ কৌতিনহোর একটি শট ঠেকিয়েছিলেন অবলাক। তারও আগে একবার বারপোস্টে কারণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। মেসির থ্রু পাস থেকে চমৎকার একটি সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন জর্দি আলবা। সব কাজ ঠিকঠাক করেছিলেন, কিন্তু বারপোস্টে বাধা পায় তার শট। তাই শুরুতেই এগিয়ে যাওয়া হয়নি বার্সার।
কস্তা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পরও সেভাবে নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরি করা হয়নি বার্সার। তবে দ্বিতীয়ার্ধে অ্যাটলেটিকোর ওপর হামলে পড়ে বার্সার আক্রমণ। আর অবলাকও একের পর এক দুর্দান্ত সব সেভ করে অ্যাটলেটিকোর লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে থাকেন। এসময় মেসি আর সুয়ারেজদের দুইজনকেই দুইবার করে গোলবঞ্চিত করেন স্লোভেনিয়ান গোলরক্ষক। অন্যপ্রান্তে খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও সিমিওনেকে সাহসি সিদ্ধান্তও নিতে হয়েছে সময়ে সময়ে। ৩৫ মিনিটে একবার রাইটব্যাক সান্তিয়াগো আরিয়াসকে তুলে আক্রমণে অ্যানহেল কোরেয়াকে নামিয়েছিলেন। পরে ফিলিপে লুইসের বদলে নেমেছিলেন আলভারো মোরাতাও। তবে অ্যাটলেটিকোর সেরা সুযোগটা পেয়েছিলেন হিমেনেজ। দ্বিতীয়ার্ধে কর্নার থেকে করা হেডটা লক্ষ্যে রাখতে পারলে হয়ত আরেক উরুগুইয়ান গল্পটাই বদলে দিতে পারতেন ম্যাচের।
রাতটা যখন অবলাক নিজের করে নিচ্ছিলেন তখনই হাজির সুয়ারেজ। ডিবক্সের বাইরে ২৫ গজ দূর থেকে বাঁকানো এক গ্রাউন্ড শটে অবলাককে বোকা বানিয়ে গোল করে উলটো নায়ক বনে যান উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। ডিবক্সের বাইরে প্রথমে জায়গা করে নিয়েছিলেন সুয়ারেজ। এরপর অবলাককে হারিয়েছেন শটের গতিতে। অ্যাটলেটিকোর প্রতিরোধ ভাঙার পর আরও একবার স্কোরশিটে নাম লেখার মেসি। হোসে মারিয়া হিমেনেজ পুরো ম্যাচেই খেলেছেন দারুণ। কিন্তু তখন হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন গুরুত্বপূর্ন সময়ে। মেসিও সুযোগ কাজে লাগিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত এক ফিনিশে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ওই গোলে শিরোপাতেও এক হাত দিয়ে রাখল বার্সা।
এই জয়ে একটা রেকর্ডও হয়ে গেছে মেসির। ইকার ক্যাসিয়াসকে ছাড়িয়ে লা লিগায় সবচেয়ে বেশি ৩৩৫ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটাও এখন তার দখলে।