১৯ বছর আগে স্টাম্পড করেছিলেন বাবাকে, এবার ক্যাচ ধরলেন ছেলের
চেহারা থেকে এখনো মুছে যায়নি কৈশোরের সারল্য। রিয়ান পরাগ ১৭ বছর বয়সেই চমকে দিয়েছেন সবাইকে, রাহস্থান রয়্যালসের হয়ে কালও খেলেছেন ৪৭ রানের দুর্দান্ত একটা ইনিংস। তবে এরকম প্রতিভা যে ভারত আগে দেখেনি তা নয়। পরাগকে বরং অন্য একটা কারণে আলাদা করে দিচ্ছেন এমএস ধোনি। প্রায় অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে তথ্যটা, ১৯ বছর আগে নিজের প্রথম শ্রেণির অভিষেকেই রিয়ানের বাবা পরাগ দাসকে স্টাম্পিং করেছিলেন ধোনি। আর এবার আইপিএলে নিজের অভিষেকে সেই ধোনিকেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন রিয়ান!
ধোনির সঙ্গে পরাগের একটা ছবি অবশ্য ভাইরাল হয়ে গেছে এর মধ্যে। ১৩ বছর আগে আসামের গুয়াহাটিতে ছিল ভারতের একটা ম্যাচ। কিন্তু বৃষ্টিতে সেটি পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছিল। ওই সময় ছয় বছর বয়সী রিয়ানের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় ভারত দলের। ছেলের সঙ্গে ধোনির একটা ছবিও তুলে রাখেন রিয়ানের মা। সেই রিয়ানের আইপিএল অভিষেক হয়েছে ধোনির বিপক্ষেই, গল্পটা প্রায় রূপকথার মতোই!
বাবা-মায়ের সঙ্গে রিয়ান
তবে তার চেয়েও তো অবিশ্বাস্য শোনায় ধোনির ছেলে আর বাবাকে একসূত্রে গাঁথাটা। রিহানের বাবা পরাগ দাস নিজেও একজন ক্রিকেটার ছিলেন। আসামের হয়ে ৪৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচও খেলেছেন এই অলরাউন্ডার, ১৯৩৬ রানের পাশাপাশি নিয়েছেন ৩৬ উইকেট। ২০০০ সালের জানুয়ারিতে পরাগের দল আসাম মুখোমুখি হয়েছিল বিহারের। আসামের দ্বিতীয় ইনিংসে পরাগ দাসকে স্টাম্পড করেছিলেন ধোনি। সেই ম্যাচটা জিতেছিল ধোনির দল বিহারই।
এরপর কেটে গেছে অনেক দিন। পরাগ দাস খেলা ছেড়েছেন আরও ১১ বছর আগে, এর মধ্যে ছেলেও বড় হয়েছে। রিয়ান পরাগের প্রথম শ্রেণির অভিষেক হয়েছে ২০১৭ সালের নভেম্বরে, মাত্র ১৬ বছর বয়সে। লিস্ট এ ও টি-টোয়েন্টি অভিষেকও হয়ে গেছে এর মধ্যে। একুশ শতকে জন্ম নেওয়া প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে আইপিএল অভিষেকও হয়ে গেছে। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ওই ম্যাচে পরাগ নেমেছিলেন সাতে। ১৪ বলে ১৬ রান করার পর শার্দুল ঠাকুরের বলে আউট হয়ে যান। ক্যাচটা ধরেছিলেন সেই ধোনিই।
রেকর্ড একটা অবশ্য পরাগের হয়ে যেতেই পারত। সবচেয়ে কম বয়সে আইপিএল ফিফটির রেকর্ড হতে হতেও হয়নি। তবে বিস্ফোরক ব্যাটিং আর কার্যকরী লেগ ব্রেকে এর মধ্যেই জানান দিয়েছেন, দারুণ একটা প্রতিভা পেয়ে গেছে ভারত।
রিয়ানের বাবা পরাগ দাসের মতো মাও একজন স্পোর্টসম্যান, মিতু বুরাহ ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সাঁতরেছিলেন। আসাম থেকে এখন অবদি ভারতের হয়ে কেউ খেলতে পারেননি। রিয়ান যে সেই ইতিহাসের পথে, সেই বাজিটা একটু ঝুঁকি নিয়ে ধরে ফেলাই যায়!