আশ্বিন ঠিক, ধোনি নন : সাইমন টফেল
আইপিএলে জস বাটলারকে করা রবি আশ্বিনের মানকাডকে ‘ঠিক’ এবং আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মাহেন্দ্র সিং ধোনির মাঠে ঢুকে যাওয়াকে ‘ভুল’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন আইসিসির সাবেক এলিট প্যানেল আম্পায়ার ও আম্পায়ারদের সাবেক কোচ সাইমন টফেল। ইএসপিএনক্রিকইনফোতে প্রকাশিত এক কলামে আশ্বিনের করা নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রান-আউট কোনোভাবেই ক্রিকেটের চেতনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
আইপিএলের এ মৌসুমের শুরুতে রাজস্থানের বাটলারকে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রান-আউট করেছিলেন পাঞ্জাবের আশ্বিন। এ নিয়ে হয়েছিল তুমুল বিতর্ক, মূল পয়েন্ট ছিল এ ধরনের রান-আউট করা চেতনা-পরিপন্থী কিনা। তবে টফেল বলছেন, ক্রিকেটের আইন মানলে এখানে ভুল কাজটা করছেন ব্যাটসম্যানই। আর রান-আউট করার আগে ব্যাটসম্যানকে সতর্ক করার ব্যাপারটাকে ‘মিথ’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, টিভি আম্পায়ার শেষ পর্যন্ত রান-আউটের যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আইন অনুযায়ী সেটাই ঠিক।
ক্রিকেটের আগের আইন অনুযায়ী কোনও ব্যাটসম্যান ক্রিজ ছেড়ে আগেই বেরিয়ে গেলে ‘ডেলিভারি স্ট্রাইড’-এ ঢোকার আগমুহুর্ত পর্যন্ত রান-আউটের সুযোগ পেতেন বোলাররা। তবে সেটা বদলে ‘ডেলিভারি সুইং’-এর সর্বোচ্চ পয়েন্ট পর্যন্ত করা হয়েছে, মানে বোলার এখন বল হাত থেকে ছোঁড়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত সে সুযোগ পাবেন। আর আশ্বিন আগে থেকেই এই রান-আউট করার পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন বলে যে বিতর্ক হয়েছে- আশ্বিন যেটা নাকচ করেছিলেন- সেটার ব্যাখ্যায় টফেল বলেছেন, “তাতে কী! বোলাররা তো ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ, বোল্ড, ক্যাচ অথবা অন্য কোনও উপায়ে আউট করতে চায়। সেগুলো কি আগে থেকে ঠিক করে রাখা না? সেটা তর্কের বিষয় কিভাবে হতে পারে, আমি আসলে জানি না।”
আর ধোনির ব্যাপারে টফেল বলেছেন, ধোনি সম্পর্কে জানেন বলে এটা দেখে শুরুতে বিস্মিত হয়েছিলেন তিনি, “মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে অনেক বেশি চাপ, অনেক টাকা যুক্ত থাকে, সঙ্গে অনেক উত্তেজনা আর প্যাশন। তবে খেলার মধ্যে নেই এমন ক্রিকেটার বা কোচের মাঠের ভেতরে ঢুকে যাওয়াটা কোনোভাবেই ঠিক নয়।”
“আর ব্যক্তিগতভাবে আমি বলবো, এরকম সময়ে আম্পায়ারদের তার সঙ্গে কথা বলার বদলে বরং চলে যেতে বলতে হবে। আম্পায়াররা যাতে ক্রিকেটারদের দ্বারা আবদ্ধ হয়ে না পড়ে, তাদের প্রভাবে কোনও সিদ্ধান্ত না বদলায় সেটা গুরুত্বপূর্ণ।”
রাজস্থানের সঙ্গে চেন্নাইয়ের ম্যাচে একটি নো-বলের সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে ঢুকে পড়ে পরে জরিমানা গুণেছিলেন ধোনি। বোলিং প্রান্তের আম্পায়ার প্রথমে নো-বল দিলেও স্কয়ার লেগে তার সতীর্থর সঙ্গে কথা বলে সেটা বদলে ফেলেছিলেন, তবে আলাদা করে সিদ্ধান্ত ‘রিভোক’ করার সংকেত দেননি বলেও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল বলে মনে করেন টফেল। তার মতে, আম্পায়ারদের ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে ‘প্রটোকল’ হচ্ছে, সিদ্ধান্তটা বোলিং-প্রান্তের আম্পায়ার দিলেও তিনি অপেক্ষা করবেন স্কয়ার লেগ আম্পায়ারের সঙ্কেতের ওপর। এক্ষেত্রে যেটা হয়নি।
আর সব মিলিয়ে ক্রিকেটকে ‘পারফেক্টলি ইমপারফেক্ট’ বলে মন্তব্য করে টফেল বলেছেন, প্রযুক্তি যেমন অনেক সমস্যার সমাধান করছে, তেমন সেসবের কারণে তৈরি হচ্ছে নতুন সমস্যাও। সেক্ষেত্রে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন পুরোনো কথাটাই, “লোকে আম্পায়ারদের পারফেক্ট হতে বলে, যে কোনোভাবে আরও ভাল হতে পারে। এটা বাস্তবতা বিবর্জিত একটা প্রত্যাশা। আম্পায়াররা পারফেক্ট হতে পারেন না, তবে তারা দারুণ হতে পারেন। আমাদের আরেকটু মেনে নিতে হবে, আর সবাই যে তাদের সেরাটা দিচ্ছে সেটার উপলব্ধি আনতে হবে।”