সেমির পথে বাংলাদেশের সামনে যে দুই সমীকরণ...
বলতে গেলে শ্রীলংকা আর ইংল্যান্ডের ম্যাচটাই জমিয়ে দিয়েছে বিশ্বকাপ। ইংল্যান্ডের ওই হার সেমিফাইনালের দুয়ার খুলে দিয়েছে বেশির ভাগ দলের জন্যই। বাংলাদেশের জন্য সেই সমীকরণ কী, সেটা একবার একটু খতিয়ে দেখা যাক।
এই মুহূর্তে পয়েন্ট তালিকায় অস্ট্রেলিয়া ১২ পয়েন্ট নিয়ে আছে সবার ওপরে, সেমিফাইনালও নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের। নিউজিল্যান্ড আছে দুইয়ে, ১১ পয়েন্ট নিয়ে তাদের যাওয়াও প্রায় নিশ্চিত। ভারত ৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে, কিন্তু তাদের বাকি আছে চারটি ম্যাচ। এর যে কোনো একটি জিতলেই নিশ্চিত হতে পারে শীর্ষ চার। আর দুইটি জিতলে তো কথাই নেই। চারে আছে ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ যাদেরকে পেছনে ফেলে সেমিতে যাওয়ার বাস্তবসম্মত আশা এখন করতেই পারে।
এখন সমীকরণটা আরেকবার দেখা যাক। ইংল্যান্ডের পয়েন্ট এখন ৭ মাচে ৮, শীর্ষ চারের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে বাকি দুইটির অন্তত একটি ম্যাচ জিততেই হবে। দুইটি জিতলে তারাই উঠে যাবে সেমিতে, মুশকিল হচ্ছে পরের দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষ ভারত ও নিউজিল্যান্ড।
এবার বাংলাদেশের সমীকরণে আসা যাক। ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে দুইটি ম্যাচ বাকি, সে দুইটিতে জেতা ছাড়া বিকল্প নেই বাংলাদেশের। একটি জয় নিয়েও গাণিতিকভাবে উঠতে পারে, তবে সে কথায় পরে আসা যাক। আপাতত বাংলাদেশ যদি দুইটি জয় পায় তখন কী হবে সেটা দেখা যাক।
ভারত ও পাকিস্তানের দুইটি ম্যাচ জিতলে কী হবে?
এই সমীকরণটা সহজ। বাংলাদেশ দুই ম্যাচ জিতলে ইংল্যান্ডকে এক ম্যাচ হারলেই হচ্ছে। তখন বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে ১১, ইংল্যান্ডের ১০। ওদিকে পাকিস্তানও যেহেতু বাংলাদেশের কাছে হেরে যাচ্ছে তাই তারা বাদ। আর আছে শ্রীলংকা, যাদের তিনটি ম্যাচ বাকি ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের বিপক্ষে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে টপকাতে হলে তিনটি ম্যাচই জিততে হবে তাদের। সেক্ষেত্রে চলে যাবে শ্রীলংকাই, তবে তারা এক ম্যাচ হারলেই উঠে যাবে বাংলাদেশ।
ভারত ও পাকিস্তানের যে কোনো একটির সঙ্গে জিতলে কী হবে?
এ তো গেল সহজ হিসেব। এবার দেখা যাক বাংলাদেশ যদি শুধু ভারত বা শুধু পাকিস্তানকে হারিয়ে কীভাবে উঠতে পারে। এই সমীকরণে বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে ৯, যার মানে চার নম্বর দলের পয়েন্ট নয়ের বেশি হওয়া যাবে না। এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ৮, তাই তাদের দুইটি ম্যাচই হারতে হবে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
ওদিকে শ্রীলংকা আর পাকিস্তানও তখন এগিয়ে আসবে। পাকিস্তানের ম্যাচ বাকি নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের সাথে। আজ হেরে গেলে তাদের আশা প্রায় শেষ, রান রেটও পক্ষে নেই তাদের। তবে আজ যদি জিতে যায় আর আফগানিস্তানের সঙ্গেও জেতে তাহলে পাকিস্তানেরও পয়েন্ট হয়ে যাবে ৯। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুধু পাকিস্তানকে হারালে দুই দলের পয়েন্ট হবে সমান। লিগ পর্বে দুই দলের জয়ের সংখ্যা সমান হয়ে যাচ্ছে, রান রেট আসবে হিসেবে। যেখানে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে বেশ কিছুটা। আর বাংলাদেশ যদি ভারতের সঙ্গে জিতে পাকিস্তানের কাছে হারে তাহলে পাকিস্তানকে আজ নিউজিল্যান্ডের কাছে হারতে হবে। সেক্ষেত্রেও দুই দলের পয়েন্ট হবে ৯, রান রেটে এগিয়ে থাকতে পারে বাংলাদেশ।
এই সমীকরণে শ্রীলংকার অবস্থা কেমন হবে? তাদের ম্যাচ বাকি তিনটি, এর মধ্যে ভারতেরটিতে তাদের হারার সম্ভাবনা বেশি ধরে নিলে আর থাকে দুইটি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দিলে তাদের পয়েন্ট হয়ে যাবে ১০, সেক্ষেত্রে তারা চলে যাবে শেষ চারে। বাংলাদেশকে তখন প্রার্থনা করতে হবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে যেন শ্রীলংকা হারে।
কিন্তু শ্রীলংকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারলে এমনকি এই সমীকরণে শেষ চারের সম্ভাবনা আছে ক্যারিবিয়দেরও। সেজন্য তাদের জিততে হবে ভারত, শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান এই তিন দলের বিপক্ষেই। তার মানে বাংলাদেশ, পাকিস্তান আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই তিন দলেরই সম্ভাবনা আছে ৯ পয়েন্টের। তখন আবার রান রেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চলে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
তবে একটা সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ, ২ জুলাই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে লম্বা বিরতি। বাংলাদেশের সমীকরণ আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে তার আগেই।