• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    চলে গেলেন ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডের টনি লুইস

    চলে গেলেন ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডের টনি লুইস    

    ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থ আর টনি লুইস- ক্রিকেটের আলোচিত দুই নাম নিশ্চিতভাবেই। ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত নিয়মগুলির একটি ডাকওয়ার্থ লুইস বা ডিএল মেথড। সেই পদ্ধতির প্রবক্ততা তারা। তাদেরই একজন, টনি লুইস, ৭৮ বছর বয়সে মারা গেছেন ১ এপ্রিল। 

    হয়তো এ নিয়মটা বুঝতে পারা খুব সহজ নয়, তবে যে খেলার সঙ্গে আবহাওয়া জড়িত খুব নিবিড়ভাবে, সেখানে বৃষ্টি আইনে এখন পর্যন্ত ‘সবচেয়ে’ কার্যকরী নিয়ম ডিএল মেথডই। 

    ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে সবচেয়ে সমালোচিত হয়েছিল তখনকার বৃষ্টি আইন। সেবার বৃষ্টি আইনের নতুন একটি কাঠামো দাঁড় করানো হয়েছিল। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বৃষ্টিতে যতো ওভার কাটা পড়বে, পরে ব্যাটিং করা দলের লক্ষ্য ঠিক করা হবে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করা দলের সর্বনিম্ন রানের ততো ওভারগুলো বাদ দিয়ে। রানতাড়ায় চিরায়ত ‘সুবিধা’র কথা মাথায় রেখেই করা হয়েছিল এ নিয়ম। 

    এর আগে যেখানে ওভারপ্রতি রান-রেটের অনুপাতে কমানো হতো লক্ষ্য, সে বিশ্বকাপে করা হলো নতুন নিয়ম। অবশ্য ১৩ বলে ২২ রান থেকে ১ বলে ২১ রানের দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজনীয়তা ঢুকে গেছে ক্রিকেটের অন্যতম আলোচিত ঘটনায়। 
     


    ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থ (বাঁয়ে) ও টনি লুইস (ডানে)/আইসিসি


    এরপর থেকেই বৃষ্টি-বাধায় আরেকটু কার্যকর কিছু খুঁজছিল আইসিসি। এর আগেই ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থ তার মেথড দিয়েছিলেন, তবে সেটি বেশি জটিল বলে গ্রহণ করা হয়নি। ১৯৮০ সালের দিকে এ তত্ত্ব দিয়েছিলেন তিনি, এরপর ১৯৯২ সালে রয়্যাল স্ট্যাটিসটিক্যাল সোসাইটি কনফারেন্সে ‘ফেয়ার প্লে ইন ফাউল ওয়েদার’ নামে প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলেন, যেটি নজর কেড়েছিল তখনকার ইউনিভার্সিটি অফ দ্য ওয়েস্ট অফ ইংল্যান্ডের ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের লেকচারার লুইসের। 

    দুজন মিলে এ তত্ত্বকে আরও কার্যকরী করেছিলেন। ১৯৯৭ সালে প্রথমবার ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ের ম্যাচে অনুসরণ করা হয়েছিল সেটি। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে আইসিসি অনুসরণ করেছিল সে তত্ত্ব। তখন থেকে রয়ে গেছে ডিএল মেথড। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ান এক অধ্যাপক স্টিভেন স্টার্ন আধুনিক যুগের রান-রেটের প্যাটার্ন মাথায় রেখে আরেকটু কাজ করেছেন এ মেথড নিয়ে, আইসিসি এখন অনুসরণ করে ডিএলএস মেথডই। 

    লুইসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার জিওফ অ্যালারডাইস বলেছেন, “ক্রিকেটে টনির অবদান ব্যাপক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন পরিবর্তিত লক্ষ্য নির্ধারণের পদ্ধতিটি তিনি এবং ফ্র্যাঙ্ক দুই দশক আগে তৈরি করেছিলেন। আসছে বছরগুলিতে ক্রিকেটে তার অবদান মনে করা হবে। তার পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি আমাদের সমবেদনা।” লুইসের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে ইসিবি, বিসিবি। 

    শেফিল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে গণিত ও পরিসংখ্যানে পড়াশুনা করা লুইস পেশাগত জীবনে অবসর নিয়েছিলেন অক্সফোর্ড ব্রুকস ইউনিভার্সিটি থেকে, কোয়ান্টিটিভ রিসার্চ মেথডের লেকচারার হিসেবে। 

    গণিত এবং ক্রিকেটে অবদান রাখার জন্য ২০১০ সালে মেমবার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এমপায়ার, এমবিইতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন তিনি।