চারটি কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটি জিততে হবে বাংলাদেশকে
পাকিস্তানের সঙ্গে জয়ের বিকল্প নেই
সেমিফাইনাল থেকে এর মধ্যেই বাদ পড়ে গেছে বাংলাদেশ। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটা চারটি কারণে আমি বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।
এক) কালকের ম্যাচটা জিতলে আমরা পাঁচে থেকে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করার একটা সুযোগ পাব। বাংলাদেশের র্যাঙ্কিং এই মুহূর্তে সাত, পাঁচে থাকা মানে আমাদের জন্য বিশ্বকাপটা একটু হলেও ভালো একটা জায়গায় থেকে শেষ করা। যেটা হবে বাংলাদেশের জন্য বিশ্বকাপে সবচেয়ে ভালো ফল।
দুই) কালকের ম্যাচটা জিতলে এশিয়ায় ভারতের পর দ্বিতীয় সেরা হিসেবে আমরা দাবি করতে পারব। শ্রীলংকার ম্যাচটা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে, আর আফগানিস্তানকে আমরা সহজেই হারিয়েছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের সাম্প্রতিক রেকর্ড ভালো, সেই হিসেবে কালকে আমাদের জেতা উচিত কাল।
তিন) সাকিব আল হাসানের চেয়ে আজ পর্যন্ত বেশি রান শুধু রোহিত শর্মারই আছে, আর ১১ উইকেটও হয়ে গেছে। যদি ব্যাট হাতে দারুণ একটা ইনিংস সাকিব খেলে আর কয়েকটা উইকেট পায় তাহলে আমার মনে হয় সিরিজসেরা হিসেবে নিজের দাবিটা আরও বেশি জোরালো করতে পারবে। বাংলাদেশ উঠছে না, কিন্তু সাকিবের পারফরম্যান্স এতোই উজ্জ্বল তাকে সিরিজসেরার দৌড়ে উপেক্ষা করা কঠিন বলেই মনে হয়। বিশেষ করে একটা দলকে যেভাবে এসে একা এগিয়ে নিয়ে গেছে তাতে আমার মনে হয় এটা তার আরও বেশি প্রাপ্য
চার) মাশরাফির জন্য এটা নিশ্চিতভাবেই শেষ বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ অবশ্যই চাইবে, অধিনায়কের জন্য একটা মনে রাখার মতো বিদায় উপহার দিতে। মাশরাফি এরপর আর বিশ্বকাপে খেলবেন না, কতদিন খেলবেন সেটাও আমরা জানি না। লর্ডসের মতো একটা ভেন্যু থেকে ভালো একটা জয় উনার প্রাপ্য বলেই মনে করি। তখন তাঁর বর্ণাঢ়্য ক্যারিয়ারের সুন্দর একটা বিদায়ও হবে।
আবেগেরও প্রতি সম্মান দেখানো উচিত
দেখুন, যত যাই হোক এই ম্যাচটা মর্যাদার লড়াই। সাধারণ মানুষদের মধ্যে কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচে একটা আলাদা আবেগ কাজ করে। আমি বলছি না, এই আবেগে আগুনে ঘি ঢালার জন্য। কিন্তু আবেগ আছে, সেটা সত্যি। সেদিকটাতে সম্মান দিয়ে হলেও আজ বাংলাদেশের একটা জয় দরকার।
বোলিংটাই ওদের মূল শক্তি
পাকিস্তানের এই দলের মূল শক্তি বোলিং। ওদের ব্যাটিং কিন্তু অধারাবাহিক। কিছু ম্যাচে ওরা ভালো করেছে, কিছু ম্যাচে করেনি। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ বিশ্বকাপে ওদের চেয়ে তুলনামূলক ভালো ক্রিকেট খেলেছে। তবে কালকের ম্যাচে না জিতলে সেই দাবিটা বাংলাদেশ করতে পারবে না। পয়েন্ট টেবিলেও বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে থাকবে। সব মিলে কালকের ম্যাচটা হালকাভাবে নেওয়ার উপায় নেই তো বটেই, বরং বাংলাদেশের জন্য বাড়তি প্রেরণার বলেই আমি মনে করি।
সাইফ উদ্দিন বুঝতে পেরেছে ওর সামর্থ্য
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের একটা বড় প্রাপ্তি হচ্ছে সাইফ উদ্দিনের ব্যাটিং। এই বিশ্বকাপে ও বল ভালোই করেছে। কিন্তু ও সেদিন যেভাবে ব্যাট করেছে, তাতে পুরো দলের সঙ্গে ও নিজেও বুঝতে পারে ব্যাট হাতে ও কী করার সামর্থ্য রাখে। ও যদি অনেক পরিশ্রম করে, নিজের ফোকাসটা ঠিক রাখতে পারে তাহলে বাংলাদেশ দলের জন্য সামনে ও বড় একটা সম্পদ হতে যাচ্ছে।
লর্ডসে জয় হবে আরও রোমাঞ্চকর
লর্ডস ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তীর্থ, সেখানে খেলার অন্যরকম একটা রোমাঞ্চ তো আছেই। যদিও বাংলাদেশ সেখানে আগে খেলেছে, তামিমের সেঞ্চুরিও আছে। সবার জন্য সেভাবে হয়তো কাজ করবে না। তারপরও লর্ডসের মতো একটা জায়গায় জয় দিয়ে শেষ করতে পারা হবে বিশেষ কিছু।
একাদশে মিরাজ আসতে পারে
লর্ডসে হয়তো একজন বাড়তি স্পিনার আসতে পারে, তখন রুবেলের জায়গায় মিরাজকে দেখা যেতে পারে। মাহমুদউল্লাহ যদি ফিট না হয়ে ওঠে তাহলে সাব্বিরেরই খেলা উচিত
একাদশ: তামিম, সৌম্য, সাকিব, মুশফিক, লিটন, সাব্বির, মোসাদ্দেক, সাইফ উদ্দিন, মিরাজ, মাশরাফি, মোস্তাফিজ
যে দ্বৈরথে চোখ রাখতে হবে
সাকিব-আমির
মোহাম্মদ আমির ওদের সেরা বোলার, আর সাকিব সেরা ব্যাটসম্যান
পরিসংখ্যান কী বলে: ওয়ানডেতে কখনোই মুখোমুখি হননি দুজন
বাবর আজম- মোস্তাফিজ
মোস্তাফিজের সাথে বাবর আজমের লড়াইটাও হবে দেখার মতো।
পরিসংখ্যান কী বলে: এশিয়া কাপে একবার দেখাতেই বাবরের উইকেট নিয়েছিলেন মোস্তাফিজ, দুই বলে রানও দেননি কোনো
শাহরিয়ার নাফীস: বাংলাদেশের হয়ে ২৪টি টেস্ট ও ৭৫টি ওয়ানডে খেলেছেন। ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক।