• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    নেট সেশন : ভারতকে চমকে দিতে পারবে নিউজিল্যান্ড?

    নেট সেশন : ভারতকে চমকে দিতে পারবে নিউজিল্যান্ড?    

    বিশ্বকাপ, ১ম সেমিফাইনাল
    ভারত-নিউজিল্যান্ড

    কবে, কখন
    ৯ জুলাই, ২০১৯
    বাংলাদেশ সময় ১৫৩০ (বিকাল ৩.৩০)


    সেমিফাইনাল। শব্দটা শুনে শিহরণ জাগছে? যে কোনও টুর্নামেন্টের এ যেন এক অলিখিত রীতি, যা রোমাঞ্চ ওই সেমিফাইনালেই। ফাইনালে রোমাঞ্চ থাকে, তবে সেটা যেন ম্যাচ শুরুর আগেই শুধু, একপেশে ম্যাচের ছড়াছড়ি এরপর। ক্রিকেট অবশ্যই এর ব্যতিক্রম নয়। ৩০ জুন থেকে শুরু হওয়া ১০ দলের বিশ্বকাপ নেমে এসেছে চার দলে, ৪৫ ম্যাচের পর বাকি শুধু তিনটি- সেমিফাইনাল, ফাইনাল। গত বিশ্বকাপের চার সেমিফাইনালিস্টের তিনটিই আছে এবার, শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার জায়গায় ইংল্যান্ড। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যদি ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে সেমিফাইনাল লাইন-আপের কথা বলা হতো, আপনি হয়তো খুব একটা আপত্তি করতেন না। 

    তবে গ্রুপপর্বের শেষভাগে নিউজিল্যান্ডের টানা তিন ম্যাচে হার তাদেরকে বানিয়ে দিয়েছে প্রথম সেমিফাইনালের আগে পরিষ্কার আন্ডারডগ। গতবার ব্রেন্ডন ম্যাককালামের দল যেমন সাড়াশব্দ ফেলে দিয়েছিল, এবার কেন উইলিয়ামসনের দল সেখানে চুপচাপ বেশ। নিউজিল্যান্ড যেন এ বিশ্বকাপের ‘আনহার্মফুল ক্যারাক্টার’, যে কারও ক্ষতি করে না। বিপরীত অবস্থা ভারতে। টুর্নামেন্টে ফেভারিট হিসেবে এসেছিল তারা, এক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হার বাদ দিলে তারা আছে সেই ট্র্যাকেই। রোহিত শর্মা কথায় কথায় সেঞ্চুরি করছেন, বিরাট কোহলি কেন ফিফটি পেরিয়ে সেঞ্চুরি পাচ্ছেন না- এমন প্রথম বিশ্বের সমস্যায় ভুগছে তারা। জাসপ্রিত বুমরাহ হয়ে উঠছেন ‘আনপ্লেয়েবল’। 

    ‘উইথ গ্রেট পাওয়ার কামস গ্রেট রেসপনসিবিলিটি’র মতো করেই যেন ফেভারিট তকমার সঙ্গে আসে চাপ। সেটা ভারতের ওপর, নিউজিল্যান্ড সেখানে ভারমুক্ত। নিউজিল্যান্ড এগিয়ে যেতে পারে এখানেই, যখন কেউ আপনাকে নিয়ে প্রত্যাশা করবেন না, তখনোই আপনার বড় সুযোগ চমকে দেওয়ার। সেখানে তাদের বাধা মার্টিন গাপটিল বা টম ল্যাথামদের ফর্ম। অবশ্য এ ম্যাচে চোট কাটিয়ে ফিরতে পারেন লকি ফার্গুসন, নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণ সামর্থ্য রাখে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ টলানোর। 

    মিডল অর্ডারের ব্যাটিং নিয়ে ভারতের দুশ্চিন্তা অবশ্য কমেনি সেভাবে, ঋষভ পান্ট চার নম্বরে ঠিক কতখানি নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন প্রশ্ন সেটাও। রোহিত-রাহুলের ওপেনিং জুটির পর কোহলি- এরপর ভারতের ব্যাটিংয়ে আছে একটা শূন্যতা। সে শূন্যতা পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড যেতে পারবে কিনা, প্রশ্ন সেটিই। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংয়েও মোটামুটি একই অবস্থা, সেখানে যেন পুরো ভার কেন উইলিয়ামসন ও সঙ্গে রস টেইলরের ওপর। 

    গতবার সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিদায় নেওয়া ভারতকে শুধু চমকে দেওয়ার অপশনটাই খোলা আছে গতবারের রানার্স-আপ নিউজিল্যান্ডের সামনে। সে চমক হোক বা না হোক, ব্যাপারটা সেমিফাইনাল বলেই আপনি রোমাঞ্চের আশা করতেই পারেন। 

    রঙ্গমঞ্চ
    ওল্ড ট্রাফোর্ড, ম্যানচেস্টার 

    এজবাস্টন নাকি ওল্ড ট্রাফোর্ড- ভারত অপেক্ষায় ছিল তারা কোথায় খেলবে সেটা নিশ্চিত হওয়ার। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের ভেন্যু ঠিক হয়ে ছিল আগেই। এ ভেন্যুতে এখন পর্যন্ত এ বিশ্বকাপে হয়েছে পাঁচটি ম্যাচ, পাঁচটিতেই জিতেছে আগে ব্যাটিং করা দল। ম্যানচেস্টারে এদিন আছে বৃষ্টির শঙ্কা, অবশ্য সেমিফাইনাল বলে থাকবে রিজার্ড-ডে। এ ভেন্যুতেই হয়েছে এ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ৩৯৭ রানের স্কোর, আফগানিস্তানের বিপক্ষে যেটি করেছিল ইংল্যান্ড। এদিন থাকার কথা নতুন পিচ। 


    যাদের ওপর চোখ

    হারদিক পান্ডিয়া
    ১০ ওভার বোলিং করছেন, ব্যাটিংয়েও নিজের ঝড়ো ইনিংসের দায়িত্বটা মোটামুটি নিয়ে নিয়েছেন কাঁধে। টপ অর্ডারের গড়ে দেওয়া ভিতে ভর করে তার ইনিংস হতে পারে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। আর বোলিংয়ে ব্রেকথ্রুর জন্যও তার ভূমিকা গড়ে দিতে পারে ম্যাচের গতিপথ। 

    জিমি নিশাম
    যে কারণে ওপরে পান্ডিয়া, ঠিক সে কারণেই আসছেন জিমি নিশাম। এ পর্যন্ত ১১ উইকেট নিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ৯৭ রানের অসাধারণ ইনিংসও অবশ্য যথেষ্ট হয়নি তার। ২০১৫ সেমিফাইনালে গ্রান্ট এলিয়ট হয়ে উঠেছিলেন নিউজিল্যান্ডের নায়ক, এবার হতে পারবেন নিশাম? 

    সম্ভাব্য একাদশ

    ভুবনেশ্বর কুমার নাকি মোহাম্মদ শামি? কুলদিপ যাদব নাকি যুঝভেন্দ্র চাহাল? এবং কেদার যাদবের কি জায়গা হবে? সেমিফাইনালের আগে ভারতের একাদশ নির্বাচনে মূলত প্রশ্ন এগুলিই।  

    ভারত- লোকেশ রাহুল, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), ঋষভ পান্ট, এমএস ধোনি (উইকেটকিপার), দীনেশ কার্তিক/কেদার যাদব, হারদিক পান্ডিয়া, (ভুবনেশ্বর কুমার/ মোহাম্মদ শামি/ কুলদিপ যাদব/ রবীন্দ্র জাদেজা/ যুঝভেন্দ্র চাহাল), জাসপ্রিত বুমরাহ 

    ফিরতে পারেন লকি ফার্গুসন, সেক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড থেকে বাদ পড়বেন টিম সাউদি। 

    নিউজিল্যান্ড- মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), রস টেইলর, টম ল্যাথাম (উইকেটকিপার), জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডোম, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট

    সংখ্যার খেলা 

    • আগের ৬ সেমিফাইনালে ভারত তিনটি জিতেছে, তিনটি হেরেছে। যে তিনটিতে ফাইনালে গেছে তারা, চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুটিতে। 
    • নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনাল খেলেছে এর আগে ৭ বার, ফাইনালে গেছে ২০১৫ সালে।
    • আর ১ উইকেট হলে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকার শীর্ষ দশে আসবেন ট্রেন্ট বোল্ট। তার উইকেট এখন ৩৭টি, দশে থাকা অ্যালান ডোনাল্ডের ৩৮টি। 
    • আর ২৭ রান হলে বিশ্বকাপের এক আসরে শচীন টেন্ডুলকারের ৬৭৩ রানের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবেন রোহিত শর্মা।  

     

    মাঠে (যে একাদশই নামুক না কেন) আমাদের বেশ ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়ে নামতে হবে। 

    বোলিং কম্বিনেশন নিয়ে বিরাট কোহলি 

    কেউই টুর্নামেন্টে অপরাজিত নেই। অনেক কিছুই আছে, যার কারণে শেষ চারের লড়াই রোমাঞ্চকর হবে। 

    রোমাঞ্চের আশা দিচ্ছেন কেন উইলিয়ামসন