• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট: সাকিব না উইলিয়ামসন, কার বেশি প্রাপ্য?

    ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট: সাকিব না উইলিয়ামসন, কার বেশি প্রাপ্য?    

    যখনই বলা হলো সাকিব আল হাসানও কাটিয়েছেন দুর্দান্ত একটা বিশ্বকাপ, তখনই হয়তো আপনি বুঝে গেছেন। বিশ্বকাপে ম্যান অব দ্য সিরিজের ট্রফিটা অনেক জল্পনা কল্পনার পরও সাকিবের হাতে উঠল না। শেষ পর্যন্ত যেটি পেলেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। প্রশ্ন হতেই পারে, এই ট্রফিটা কি সাকিবের বেশি প্রাপ্য ছিল না? উইলিয়ামসন কি তার চেয়ে বেশি পাওয়ার দাবিদার? তামিম যেমন সঙ্গে সঙ্গে টুইট করে নিজের বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। যদিও পরে তা মুছে ফেলেছেন।

    সংখ্যা বা পারফরম্যান্স যদি বিচার হয়, তাহলে এই বিশ্বকাপে সাকিবের ধারেকাছেও কেউ নেই। ৬০৬ রান করার পাশাপাশি নিয়েছেন ১১ উইকেট। সাকিবের পারফরম্যান্স কতটা অবিশ্বাস্য ছিল, একটা পরিসংখ্যান দিয়েই বোঝা যায়। বিশ্বকাপের ইতিহাসেই এক আসরে ৫০০ রান ও ১০ উইকেট নেই কারও। সেখানে সাকিব টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন তৃতীয় সর্বোচ্চ রান করে, বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে প্রথম বারের মতো নিয়েছেন বিশ্বকাপে এক ম্যাচে ৫ উইকেট। একা যা যা করা সম্ভব, করেছেন তার সবকিছুই।

    এই লড়াইয়ে সাকিবের প্রতিদ্বন্দ্বী যারা ছিলেন, তারা সবাই পরে গিয়ে নিজেদের সেভাবে প্রমাণ করতে পারেননি আর। রোহিত শর্মা সেমিতে করেছেন মাত্র ১ রান, ডেভিড ওয়ার্নার আউট হয়েছেন মাত্র ৯ রানে। মিচেল স্টার্ক ২৭ উইকেট পেয়েছেন, এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ। কিতু সেমিতে নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন, সেজন্য তার দাবিও গেছে কমে। ফাইনালে ইংল্যান্ডের জো রুট আর জফরা আর্চারের দাবিটাই বেশি ছিল। কিন্তু দুই জনেরই কেউই অসাধারণ কিছু করতে পারেননি। যেমন নিউজিল্যান্ডের দুই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট আর লকি ফার্গুসনও পারেননি।

    আর এক ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। সেমি পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং টেনে নিয়ে গেছেন একাই। কিন্তু ফাইনালে তেমন কিছু করতে পারেনই উইলিয়ামসন, আউট হয়ে গেছেন ৩০ রান করে। ৫৭৮ রান নিয়ে শেষ করেছেন টুর্নামেন্ট। তার চেয়ে বেশি রান ছিল তাই সাকিব, ওয়ার্নার বা রোহিতের। আর উইকেট ধরলে আসলে সাকিব বাকিদের চেয়ে এগিয়েই। তবে এই ট্রফি বিচারে ধারাভাষ্যকার বা সাংবাদিক যারা ছিলেন, তারা সম্ভবত ভাবনায় এনেছেন উইলিয়ামসনের অসাধারণ অধিনায়কত্ব। নিউজিল্যান্ডকে একদম শেষ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন, একটুর জন্য হতে পারেননি বিশ্বকাপজয়ী প্রথম কিউই অধিনায়ক। হয়তো এমন একটা ফাইনালের পর উইলিয়ামসনকে কিছু একটা দেওয়ার ভাবনাও কাজ করেছে তাদের। সেই হিসেবে এই সিদ্ধান্তে হয়তো যুক্তির চেয়ে আবেগই প্রাধান্য পেয়েছে বেশি।

    তবে আজকের দিনে সাকিবও এতে নিশ্চিতভাবে খুব একটা কিছু মনে করবেন না। আগেও বলেছিলেন, বাংলাদেশকে সেমিতে না তুলতে পারলে ব্যক্তিগত অর্জনের মূল্য নেই। এমন একটা দিনে যখন জিতে যায় ক্রিকেট, তখন আসলে এরকম ট্রফিও একটু গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে। উইলিয়ামসনকে সাকিব হয়তো নিজেই আজ সেটা দিতে চাইবেন। তবে বিশ্বকাপ ২০১৯ মনে রাখবে, অন্তত পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান ছিলেন সবার ওপরে।