• বাংলাদেশের শ্রীলংকা সফর
  • " />

     

    নিজের আসল কাজটা ভুলে যাচ্ছেন না মোসাদ্দেক

    নিজের আসল কাজটা ভুলে যাচ্ছেন না মোসাদ্দেক    

    মোসাদ্দেক হোসেনের জন্য এবারের বিশ্বকাপটা অন্যরকম চ্যালেঞ্জই ছিল। এমনিতে এসেই ধুমধাড়াক্কা মারার‍ ব্যাটসম্যান কখনোই ছিলেন না, বরং চার-পাঁচে নেমে ইনিংস গড়তে পছন্দ করতেন একটা সময়। তবে এবারের ঘহরোয়া প্রিমিয়ার লিগ থেকেই নিজেকে ছয়-সাতের জন্য প্রস্তুত করেছেন। আয়ারল্যান্ডের ফাইনালে সেই ভূমিকায় দারুণ সফল হলেও বিশ্বকাপে সাফল্যের পাশাপাশি এসেছে ব্যর্থতাও। এত কিছুর মধ্যে মোসাদ্দেক অবশ্য ভুলে যাচ্ছেন না, তিনি ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবেই খেলছেন। মিরপুরে আজ দলের অনুশীলনের পর এসবই বললেন।

    বিশ্বকাপে সাতে নেমে যেভাবে চাওয়া হয়েছিল, সেই ভূমিকা পুরোপুরি পূরণ করতে পারেননি মোসাদ্দেক। তবে শ্রীলংকা সিরিজেও একই ভূমিকা রাখতে হবে, মোসাদ্দেক নিজেও তা জানেন, ‘পুরো বিশ্বকাপে বা আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকে শুরু করে আমি যে জায়গায় ব্যাটিং করেছি, আমার মনে হয় শ্রীলংকা সিরিজেও আমার ওখানেই ব্যাটিং করা লাগবে।  এখন টিম কম্বিনেশন বলেন বা যেটাই বলেন, ওই জায়গাতেই আমি সেট। এর বেশি কিছু চিন্তা করছি না আসলে। ’

    সাতে নেমে বিশ্বকাপে রান করেছেন ১১৭। এই পজিশনে মোসাদ্দেকের চেয়ে বেশি রান আছে শুধু নিউজিল্যান্ডের কলিন ডি গ্র্যান্ডোম, আফগানিস্তানের নজিবুল্লাহ জাদরান ও অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্স ক্যারির। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল স্ট্রাইক রেট। মোসাদ্দেকের স্ট্রাইক রেট ছিল সাতে নেমে ১১০। অন্তত ১০০ করেছেন সাতে, এমন ব্যাটসম্যানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ক্যারিরই স্ট্রাইক রেট ছিল বেশি। তা নিজেকে এই পজিশনের জন্য তৈরি করলেন কীভাবে?

     

    মোসাদ্দেক বললেন, ‘আমি আসলে বিশ্বকাপের আগে থেকে শুরু করে প্রিমিয়ার লিগ থেকে শুরু স্ট্রাইক রেটের ওপর ফোকাস করছিলাম। তো আমি যখন ব্যাটিং করতে যাব ওই সময়ও একই পরিস্থিতি হয়তো থাকবে। হয়তো খারাপ পরিস্থিতি পেলে দলকে এগিয়ে নেওয়া লাগবে সামনে। তো এইটা নিয়ে অবশ্য কাজ করছি যে ভালো পরিস্থিতি থাকলে কী করা লাগবে এবং খারাপ পরিস্থিতি থেকে দলকে কীভাবে বাঁচাতে হবে। তো এই দুইটা ব্যাপার নিয়ে কাজ করছি।

    শুধু স্ট্রাইক রেটের কথা চিন্তা করলে অনেক বেশি কঠিন। সাত নাম্বারে যারা ব্যাটিং করে তার অনেক বেশি চাপে থাকে। যারা এই জায়গায় ব্যাটিং করে সেটা ভালোমতোই জানে। আপনি যখন চিন্তা করবেন ওই জায়গায় নিয়ে আপনার মারতেই হবে। অনেক সময় পরিস্থিতি এমন যে ম্যাচের ১৫ ওভার থাকে, তখন আবার একটা সময় দলকে সাপোর্ট দেওয়া লাগে। পরে গিয়ে আবার মারা লাগে। তো এখানে অনেক ভূমিকা থাকে আর কী। শুধু একটা পরিস্থিতি থাকে না। অনেক রকম থাকে। এভাবে চিন্তা করছি, যখন সুযোগ আসবে সেটা কাজে লাগানোর।’

    এর মধ্যে অবশ্য বোলিংয়ের প্রসঙ্গ আসল। সাকিবের মতো জেনুইন অলরাউন্ডার কখনোই ছিলেন না, তবে বিশ্বকাপে মোসাদ্দেকের হাত ঘোরাতে হয়েছে বেশ। সাকিব না থাকায় শ্রীলংকায় সেই ভূমিকায় আরেকটু বেশি দায়িত্ব পালন করতে হবে তাকে। সেটা মানলেন নিজেও, ‘আসলে দেখেন, এবার হয়তো সাকিব ভাই থাকবে না। তো বোলিংয়ে হয়তো সুযগটা বেশি আসতে পারে। হয়তো তাড়াতাড়ি বোলিং করতে হতে পারে। হয়তো বেশি ওভার করার সুযোগ আসতে পারে। তো বেশি ওভার করার সুযোগ পেলে কী করব সেটা নিয়ে অবশ্যই একটা পরিকল্পনা মাথার ভেতর আছে। এখন আপাতত এটা নিয়ে ফোকাস করছি। ব্যাটিং পেলে ব্যাটিং, বোলিং পেলে বোলিং। এর বাইরে অন্য কিছু নিয়ে ভাবছি না।’

    এত কিছুর পরও নিজের আসল কাজটা অবশ্য ভুলে যাচ্ছেন না মোসাদ্দেক, ‘পরিস্থিতি আসলে যাই হোক না কেন, আমি নিজের জায়গা থেকে সরতে পারব না এটাই সত্যি। আমি আসলে ব্যাটিং অলরাউন্ডার, এটাই আমার মেইন রোল। আমি বলতে পারব না, আমি আসলে বোলিং অলরাউন্ডার। ব্যাটিং আমার কাছে আগে, বোলিং সেকেন্ড অপশন। আমি ব্যাটিং অলরাউন্ডারই।’

    শ্রীলংকায় মোসাদ্দেকের কাছ থেকে বড় ভূমিকাই চাইবে দল।