• বাংলাদেশের শ্রীলংকা সফর
  • " />

     

    শ্রীলংকা সিরিজেও 'নিরাপদ পথেই' বিসিবি?

    শ্রীলংকা সিরিজেও  'নিরাপদ পথেই'  বিসিবি?    

    বিশ্বকাপের পর পরেই দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। সপ্তাহখানেক বিশ্রাম নেওয়ার পরেই শুরু হয়ে গেছে অনুশীলন, আজ আবার শ্রীলংকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে দল। প্রশ্ন উঠেছে, সাকিব আল হাসান, লিটন দাসরা নেই আগে থেকেই। এর মাঝে যখন মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাইফ উদ্দিনরাও ছিটকে গেলেন চোটে, তখন অন্তত এক দুজন তরুণকে এই সিরিজে কি বাজিয়ে দেখা যেতে পারত না? কিন্তু বিসিবি শেষ পর্যন্ত হেঁটেছে পুরনো পথেই, ঝুঁকি না নিয়ে আবার হেঁটেছে অভিজ্ঞতার দিকেই।

    প্রশ্ন উঠছে আসলে অনেক কারণেই। বিশ্বকাপটা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য ভালো যায়নি। সাকিব ছাড়া বাকিরা কেউ নিজেদের সীমানা ছাড়িয়ে যেতে পারেননি। অভিজ্ঞদের সবার কিছুটা চোটের সমস্যাও ছিল। শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে অন্তত ইয়াসির আলী, আফিফ হোসেনদের ডাকা যেতে পারত কি না এমন প্রশ্নও উঠেছিল প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের কাছে। তিনি অবশ্য গত সপ্তাহে বলেছিলেন, সবাই এখন খেলার মধ্যেই আছে।

    দাবিটা অবশ্য ঠিক। এই মুহূর্তে আফগানিস্তান এ দলের বিপক্ষে খেলছে বাংলাদেশ এ দল, আর কর্ণাটকে খেলছে বিসিবি একাদশ। জাতীয় দলের ওপর থেকে ফোকাসটা সরিয়ে এ দল বা এইচপির দিকে দেওয়া উচিত বলে কাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন মাশরাফি, ‘আমার কাছে মনে হয়, এই জাতীয় দল থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ অনূর্ধ্ব-১৯ বা এ দলের দিকে বেশি ফোকাস করা। কারণ, পরের চার বছরে যদি আমরা ভালো করতে চাই, অবশ্যই এখন থেকে কিছু খেলোয়াড় বেরিয়ে আসতে হবে। তারা যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্ট্যাবিলিটি পায়, সেই জায়গা তৈরি করে দিতে হবে। অন্যথায় সব সময় একটা দলের দিকে ফোকাস থাকলে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকা কঠিন। অনূর্ধ্ব-১৯, এ টিম, এইচপিকে ফোকাস করা উচিত, যদি আপনি পরের বিশ্বকাপে ভালো করতে চান।’

    কিন্তু শ্রীলংকায় অভিজ্ঞদের বিশ্রাম দিয়ে নতুন কাউকে বাজিয়ে দেখা যেতে পারত কি না সেই প্রশ্নে ,মাশরাফি হাঁটলেন নিরাপদ পথে, ‘আপনারা যেটা বলছেন, বিশ্বকাপের চিন্তা এখন কেউ ভুলতে পারছে না, এবং সরাসরি বিশ্বকাপে যাওয়া কঠিন। এই সিরিজগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওই ইন্টারন্যাশনাল লেভেলে তৈরি করার জন্য কিছু সময় লাগবে। বিশ্বকাপের আগে এবং বিশ্বকাপের পরে আমার মনে হয় না অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে, বাইরে কিছু তরুণ খেলোয়াড়কে খেলাতে হবে। যদি সেরকম থাকতো তাহলে বিশ্বকাপেই তাদের নিয়ে যাওয়া যেত, যদি অসাধারণ কেউ বের হতো। এখন সময় যেটা পরের বিশ্বকাপের আগে হয়তো বা পরের এক বছর কিংবা দুই বছরে কিছু খেলোয়াড় যদি আমাদের ওখান থেকে তৈরি করা যায়; তাহলে হয়তো বা তারা পরের দুই বছর যদি খেলতে পারে, তাহলে হয়তো পরের বিশ্বকাপে তারা খুব ভালো সার্ভিস দিতে পারে। এখন আমার কাছে মনে হয় যে, বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য এই সিরিজ জেতাটা জরুরি। এটাও মাথায় রাখতে হবে।’

    দুর্ভাগ্যই বটে, এই কথার খানিক পরেই চোট পড়ে মাশরাফি নিজেই শ্রীলংকা সফর থেকে ছিটকে যান। কিন্তু তার জায়গায় দলে ডাক পেয়েছেন ফরহাদ রেজা, গত আট বছরে দেশের হয়ে যিনি কোনো ওয়ানডেই খেলেননি। বয়সও হয়ে গেছে ৩৩, এর আগে আরও ভালো ফর্মে থাকা অবস্থায় ডাক পাননি জাতীয় দলে। এবার অবশ্য কপাল খুলে গেল তার। সাইফ উদ্দিনের জায়গায় অবশ্য তরুণ তাসকিন আহমেদ সুযোগ পেয়েছেন।

    কিন্তু বিসিবির নীতির অস্পষ্টতা তাতে আড়াল হচ্ছে কি?