আমরা শুধু জাতীয় দলে কাজ করছি এটা ঠিক নয়: মিনহাজুল
গুঞ্জন উঠেছিল, তার মেয়াদটা শেষ হয়ে যেতে পারে এবারই। বিশ্বকাপের পর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করা হবে না, এমন একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। শেশ পর্যন্ত সেটা আর হয়নি, বিসিবির বোর্ড বৈঠকের পর আরও বছর দুয়েকের জন্য থেকে গেছেন মিনহাজুল ও হাবিবুলের দুই সদস্য বিষিষ্ট নির্বাচক কমিটি। নতুন করে চুকক্তি নবায়নের পর আজ নিজের ভূমিকা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে মিরপুরে কথা বললেন মিনহাজুল। জাতীয় দলের বাইরে আরও অনেক কাজ করছেন, সেই আত্মপক্ষ সমর্থন করলেন।
মিনহাজুলের জায়গায় প্রধান নির্বাচক হিসেবে জাতীয় দলের সাবেক একজন অধিনায়ক আসতে পারেন, এমন একটা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এসব সত্যি হয়নি। মিনহাজুলই আবার দায়িত্ব পেয়েছেন। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর বাংলাদেশ দল এমনিতেই চাপে আছে। শ্রীলংকা সফরেও কাটছে না সেই দুঃস্মৃতি। বিসিবি সভাপতির মতো প্রধান নির্বাচকও অবশ্য স্বীকার করলেন না, বিশ্বকাপে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ দল, ‘আপনি সবাইকে সবসময় খুশি করতে পারবেন না। দলের ফলাফলের ওপরেই কিন্তু অনেক কিছু নির্ভর করে। শেষ ম্যাচ ছাড়া বিশ্বকাপে দল খুবই ভালো খেলেছে। বিশ্বকাপে কিন্তু আমরা খারাপ কোনোভাবেই খেলিনি। আর শ্রীলঙ্কার কন্ডিশনে পৃথিবীর সব দেশই কিন্তু ভোগে। আমরা শেষবার ওখানে একটি টেস্ট ম্যাচ জিতেছি। তারপরেও আমি মনে করি আমদের ক্রিকেটারদের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা আছে। তো দল আজকের এবং পরের ম্যাচ ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছি।’
কিন্তু নির্বাচক হিসেবে এখন নতুন কী চ্যালেঞ্জ দেখলেন? মিনহাজুলের চোখ সামনের বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, ‘নির্বাচক প্যানেলে আসার আগে আমি কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। খেলা ছাড়ার পর থেকে বয়স ভিত্তিক বা 'এ' দলের কোচিং করিয়েছি। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। আমিও একজন লেভেল ৩ কোচ। সেই হিসেবে টেকনিক্যাল সাইডটা অনেক ভালো জানি। এ পর্যন্ত যতদিন কাজ করে গিয়েছি, ভালো করেছি। আগামী দুই বছরের যে চ্যালেঞ্জ আছে সেটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে ঘিরেই। আশা করি সবাইকে সাথে নিয়ে যদি টিম ওয়ার্ক করতে পারি, তাহলে একটা ফলাফল আসবে।’
কিন্তু নিজেদের কাজ নিয়ে এখন পর্যন্ত কতটা সন্তুষ্ট? মিনহাজুল জাতীয় দলের বাইরেও নিজেদের কাজের ফিরিস্তি দিলেন, ‘জাতীয় দলের বাইরে নির্বাচকদের অনেক কাজ থাকে। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে নজর দিতে হয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে নজর রাখতে হয়। আবার বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটেও নজর রাখতে হয়। শুধু জাতীয় দলে নজর দিলে হয় না। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটকে আমরা কিভাবে নিচ্ছি সেটাও দেখতে হয়। আমরা শুধু জাতীয় দল নিয়ে কাজ করছি এটা ঠিক না। এটা অনেকে জানে না। সমালোচনা করার সময় মানুষ ওভাবেই সমালোচনা করে। এখানে কিন্ত ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট, প্রিমিয়ার লিগ আবার বিপিএল- সব দেখেই কিন্তু সেট আপ করতে হয়। আপনারা হয়তো জানেন না, গতবার ফার্স্ট ক্লাসে ৮০ ওভারে যে নতুন বল পরিবর্তন, এটা নির্বাচক প্যানেল থেকেই আসছে। অনেক টেকনিক্যাল সাইড আমরা দেখি। ডেভলপমেন্ট বা পয়েন্ট সিস্টেম কি হবে এসব। আমাদের কিন্তু অনেক কিছু মাথায় নিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটকে সাজিয়ে তারপর জাতীয় দলে দেখতে হয়। প্রতিটা ক্রিকেটারকে প্রতিযোগিতার মধ্যে রাখাটাও কিন্তু নির্বাচক প্যানেলের কাজ। আমরা কিন্তু ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটারের ফিটনেস আছে কিনা সেটা দেখতে একটা লেভেল সেট করে দিয়েছ। এটা আগে কোনো নির্বাচক প্যানেল করতে পারেনি। এটার কারণে ওদের ফিটনেসে একটা স্ট্যান্ডার্ড এসেছে।’