কিক অফের আগেঃ ইউনাইটেড-চেলসির 'ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড'
কবে, কখন
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড-চেলসি
ওল্ড ট্রাফোর্ড, রাত ৯.৩০
ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের চেলসির নতুন যুগ। ওলে গানার সোলশার অবশ্য পুরনো হয়ে গেছেন কিছুটা। তবে নতুন শুরু তার জন্যও। এর আগে তো হুট করেই পেয়ে গিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চাকরি। দুই ম্যানেজারই অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে আনাড়ি, অপরীক্ষিত তাদের দলও। এক দশক আগেও এই দুইদলই শিরোপার লড়াইয়ে থাকত বাকিদের চেয়ে আগে। তখন এই ম্যানেজার ছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়। জার্সি ছেড়ে স্যুট-বুট পরেছেন দুইজন- সময়ও বদলে গেছে। 'অন্যসময়ে' এখন এই দুইদলের লক্ষ্য শীর্ষ চারে থাকা।
আপনি জানেন ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল শিরোপার জন্য লড়বে। টটেনহামও ধাওয়া করবে তাদের। কিন্তু এই দুইদলের কাছ থেকে কী চাইতে পারেন আপনি? সমর্থক হয়ে থাকলে মনে আশা থাকতে পারে, স্বপ্নও থাকতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা তো ভিন্ন।
প্রথম ম্যাচ, শক্ত প্রতিপক্ষ, কঠিন পরীক্ষা- প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচেই তাই ওল্ড ট্রাফোর্ডে বড় পরীক্ষা দিতে হচ্ছে দুই ম্যানেজারকে। ম্যাচের আগে ল্যাম্পার্ডও বললেন, ইউনাইটেড, চেলসি দুইদলই এখন আছে একই কাতারে। যদিও ম্যাচ পরবর্তী সংবাদসম্মেলনে ইউনাইটেডের বিপক্ষে তার চেলসি কেমন ফুটবল খেলবে অনুমিতভাবেই সে জবাবটা ঘুরিয়ে দিয়েছেন চেলসি ম্যানেজার, "সারিবল থেকে আমরা সরে আসব। কিন্তু অ্যাটাকিং ফুটবলও সবসময় খেলা সম্ভব না। প্রিমিয়ার লিগে আপনি পুরো মৌসুম অ্যাটাকিং ফুটবল খেলতে চান? তাহলে আপনার জন্য শুভকামনা থাকল। আমি বার বার বলেছি অফ দ্য বল মুভমেন্টের ওপর জোর দিচ্ছি আমি। অ্যাটাকিং বা ডিফেন্সিভ, যেমনই হোক- ভালো ফুটবল খেলতে চাই আমরা।"
ল্যাম্পার্ডের মতো সোলশারের কন্ঠেও প্রত্যয়। নরওয়েজিয়ান ম্যানেজার অবশ্য বহুদিন ধরেই সমর্থকদের আশা দেখাচ্ছেন। অদ্ভুত এক দলবদলের মৌসুমে মাত্র তিনজন খেলোয়াড় দলে ভিড়িয়েছে ইউনাইটেড। শেষদিনে রমেলু লুকাকুকে ইন্টার মিলানে পাঠিয়ে এখন স্ট্রাইকার শূন্য রেড ডেভিলরা। সোলশার আশা করছেন, র্যাশফোর্ড, মার্শিয়ালরা এবার তাদের সেরাটা দিতে পারবেন, "আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী র্যাশফোর্ড আর মার্শিয়াল আমাদের গোল পাইয়ে দিবে। ড্যান জেমস গোল তৈরি করবে। জেসি লিনগার্ড আরও সুযোগ পাবে। ম্যাসন গ্রিনউডের রাস্তা আরও দুর্গম হয়ে যেত, যদি আমাদের দলে আরেকজন ফরোয়ার্ড থাকত। আমি বিশ্বাস করি ম্যাসন এবার ভালো প্রভাব ফেলবে আর অনেক গোলও করবে।"
সোলশার আশার পালে হাওয়া যোগাচ্ছেন সমর্থকদের। কিন্তু তার কথার পেছনে যুক্তি কি? মার্শিয়াল দলে এসেছিলেন ২০১৫ সালে। চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে পারেননি। র্যাশফোর্ড মূলত লেফট উইং থেকে শুরু করলে খেলায় প্রভাব রাখতে পারেন ভালো। আউট অ্যান্ড আউট স্ট্রাইকার রোলে তার দুর্বলতা চোখে পড়ার মতো। আর যে গ্রিনউডের কথা সোলশার বলছেন, তার বয়স মাত্র ১৭। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন যাওয়ার পর এই নিয়ে সপ্তম মৌসুমে পা দিচ্ছে ইউনাইটেড। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে বেশ কয়েকজন নামী-দামী খেলোয়াড় এনেও ইউনাইটেড ব্যর্থ হয়েছে বারবার। স্বপ্নের মতো এবার রাতারাতি ঠিক হয়ে যাবে সব?
সোলশারের ভরসা অবশ্য প্রতিপক্ষ চেলসি বলেই। আর এবার অন্তত ইউনাইটেডের কাছ থেকে শক্ত একটা রক্ষণ আশা করতে পারেন আপনি। হ্যারি ম্যাগুয়ের, ওয়ান বিসাকা- দুইজনেরই নামার কথা একাদশে। গোল কোথা থেকে আসবে সেটা নিয়ে সংশয় থাকলেও সঙ্গে লুক শ, লিন্ডেলফ, ম্যাগুয়ের, বিসাকারা অন্তত নড়বড়ে রক্ষণের শ্রী ফেরাবেন- সেটা জোর দিয়ে বলা যায়।
গোল কে করবে সে সমস্যা প্রকট আরও চেলসিতে। এডেন হ্যাজার্ড পরবর্তী যুগেও পা দিচ্ছে ব্লুজরা। তরুণ ট্যামি আব্রাহামের ওপর ভরসা রাখতে হচ্ছে তাই ল্যাম্পার্ডকে। আর দলবদলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ল্যাম্পার্ড কেবল কপালের দোষই দিতে পারেন। দলটা নিজের মতো গোছাতেও তো পারেননি তিনি। তবে প্রীতি ম্যাচে আব্রাহামের সঙ্গে ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচের ফর্ম কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে চেলসিকে।
দলের খবর
এনগোলো কান্তে ও অ্যান্টনিও রুডিগারকে নিয়ে সংশয় আছে চেলসি দলে। ইনজুরি সমস্যায় চেলসির নতুন নাম্বার টেন উইলিয়ান খেলবেন না সেটাও মোটামুটি নিশ্চিত। ইউনাইটেডে অবশ্য নতুন কোনো সমস্যা নেই। তবে অ্যালেক্সিস সানচেজ ম্যাচ ফিট কী না- পুরনো সেই অনিশ্চয়তা এবারও সঙ্গী ইউনাইটেডের।
সম্ভাব্য একাদশ
ম্যান ইউনাইটেড
ডি গিয়া, ওয়ান বিসাকা, লিন্ডেলফ, ম্যাগুয়ের, লুক শ, পগবা, ফ্রেড, ম্যাকটমিনে, মার্শিয়াল, র্যাশফোর্ড, লিনগার্ড
চেলসি
কেপা, আজপিলিকুয়েতা, জুমা, ক্রিস্টেনসেন, এমারসন, জর্জিনিয়ো, কান্তে, পেদ্রো, মাউন্ট, পুলিসিচ, আব্রাহাম
প্যাভিলিয়ন প্রেডিকশন
ম্যান ইউনাইটেড ১-০ চেলসি