• এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৯
  • " />

     

    তহুরার জোড়া গোলে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ড্র করল বাংলাদেশ অ-১৬

    তহুরার জোড়া গোলে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ড্র করল বাংলাদেশ অ-১৬    

    আগের ম্যাচে জাপানের কাছে বিধ্বস্ত হয়ে ফেরার পরও শেষ ম্যাচে মনোবল হারালো না বাংলাদেশের মেয়েরা। বরং খেলল নিজেদের সেরা ফুটবলটা। এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে আটকে দিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। স্ট্রাইকার তহুরা খাতুনের জোড়া গোল ম্যাচে দুইবার এগিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। শেষদিকে ভুল না করলে হয়ত জয় নিয়েও ফিরতে পারতেন তহুরারা। কিন্তু দুইবারই অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ফিরে শেষ পর্যন্ত হার এড়িয়েছে।

    বয়সভিত্তিক দলের র‍্যাংকিং হয় না। তবে ফিফা র‍্যাংকিং বলছে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান বাংলাদেশের চেয়ে ১২২ ধাপ ওপরে। বিশ্বের আট নম্বর দল অস্ট্রেলিয়া, আর সেখানে বাংলাদেশ ১৩০। এই ড্রটা তাই বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য ঐতিহাসিকই। গতবার এএফসির বয়সভিত্তিক শীর্ষ পর্যায়ের এই টুর্নামেন্টে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ৩-২ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের কাছে হারটাই গলার কাঁটা হয়ে থাকল। প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের কাছে হারের পর জাপানের কাছে বিধ্বস্ত হয়ে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। শেষ ম্যাচের জয়টা সান্ত্বনার, তবে বিরাট তৃপ্তিরও।  গ্রুপ 'এ' থেকে জাপানের সঙ্গী হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া।

    চনবুরিতে ম্যাচের ২০ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। নিজের অর্ধ থেকে পাওয়া লং বল ধরে দৌড় শুরু করেছিলেন তহুরা। অস্ট্রেলিয়া গোলরক্ষক মিরান্ডা টেমপ্লেমান বল ধরতে নিজের বক্স ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন বাইরে। তাকে কোন সুযোগই দেননি তহুরা। বাম পায়ের নিখুঁত ফিনিশে দারুণ এক গোল করেন তিনি। তহুরার ফিনিশ আপনি নিয়মিত টিভিতে দেখেন ইউরোপিয়ান ফুটবলে।  ম্যাচ রিপোর্ট পড়া শেষে তাই হাইলাইটসটুকুও দেখে নিতে পারেন। এমন গোল মিস করতে চাইবেন না আপনি!

     

     

    অনুমিতভাবেই অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে আক্রমণ করেছে বেশি। গোলের সুযোগও হাতছাড়া করেছে তারা। বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমা প্রথমার্ধে দুইটি ভালো সেভ করে অস্ট্রেলিয়াকে আটকে রেখেছিলেন। কিন্তু শেষে গিয়ে আগের দুই ম্যাচের মতো আবারও তার ভুলেই ম্যাচটা হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

    ২০ মিনিটের ওই গোলের লিড ৭৭ মিনিট পর্যন্তও ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু কর্নার থেকে কপাল পোড়ে। ডিফেন্ডার ক্লদিয়া মোহেচিচ হেডে গোল করে সমতায় ফেরাত অস্ট্রেলিয়াকে। বাংলাদেশ ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন অবশ্য আরও ভালো করতে পারতেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম গোলে তার দায়টাই বেশি।

    সেই আঁখি পরের মিনিটেই শাপমোচন করেছে। আর বাংলাদেশ দিয়েছে দারুণ এক জবাব। দারুণ এক লং বলে অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্সলাইন ভেদ করে খুঁজে পেয়েছেন তহুরাকে। এবার তুলনামূলক সহজ কাজ ছিল তরহুরার জন্য, কিন্তু আগের মিনিটেই গোল খেয়ে চাপ ছিল বেশি। তহুরা দেখালেন তিনি সবকিছুই জয় করতে পারেন। আরও একটি দুর্দান্ত গোলে ম্যাচের ১২ মিনিট বাকি থাকতে বাংলাদেশকে অভাবনীয় এক জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন তিনি।

    সেই স্বপ্নে আঘাত লাগতে ৮০ মিনিটেই। গোলাম রাব্বানির দল আগের দুই ম্যাচের মতো আরও একবার ডিবক্সের বাইরে থেকে গোল হজম করে বসে। গোলরক্ষক রুপনার শারীরিকভাবে পিছিয়ে থাকাটা তাই শেষ পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে ভালোমতোই ভোগালো বাংলাদেশকে। পেইজ জইস গোল করে অস্ট্রেলিয়াকে আবার ফেরান ম্যাচে।

    বাংলাদেশ ম্যাচ গোলাম রাব্বানি এদিন একাদশে পরিবর্তন এনেছিলেন তিনটি, ম্যাচের আগের দিন বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়া জাপানের মতোই শক্তিশালী দল। এই টুর্নামেন্টের জাপান-অস্ট্রেলিয়ার ১-১ গোলে ড্র করাটাও সেই ইঙ্গিতই দিয়েছিল। কিন্তু রাব্বানি দলের কাছ থেকে লড়াই প্রত্যাশা করেছিলেন। বাংলাদেশ দল সেটাই করেছে। গ্রুপের তলানীতে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করলেও, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ড্রয়ে শেষটা মন্দ হলো না বাংলাদেশের।