• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    যে পাঁচ জায়গায় শক্তি বাড়াতেই হবে ইউনাইটেডকে

    যে পাঁচ জায়গায় শক্তি বাড়াতেই হবে ইউনাইটেডকে    

    ওল্ড ট্রাফোর্ডে চেলসিকে  ৪-০ গোলে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগ শুরু করার পর থেকেই যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ২০১৯-২০ প্রিমিয়ার লিগে পরের সাত ম্যাচে আর মাত্র একবার জিততে পেরেছে তারা, অবনমন থেকে মাত্র দুই পয়েন্ট দূরে আছে ওলে গানার সোলশারের দল। ইনজুরি, ফর্মহীনতা, স্কোয়াড ডেপথের অভাবে কিংবদন্তী এবং সাবেক ম্যানেজার রায়ান গিগসও স্বীকার করেছেন, সুদিন ফেরাতে আরও অন্তত পাঁচজন বিশ্বমানের ফুটবলার দরকার ইউনাইটেডের। কিন্তু কোন পাঁচ পজিশনে নতুন সাইনিং দরকার ইউনাইটেডের?

     

    সেন্টার ব্যাক

    গত গ্রীষ্মে বিশ্বরেকর্ড গড়ে হ্যারি ম্যাগুয়েরকে দলে এনেছিল ইউনাইটেড। ইংলিশ ডিফেন্ডার খেলছেন ভালোই, কিন্তু রক্ষণে বাকিদের ব্যর্থতার কারণে নিজেকে আলাদা করে চেনাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। ইউনাইটেডের রক্ষণে জুটি বেঁধেছেন যার সাথে, সেই ভিক্টর লিন্ডেলফও এখন পর্যন্ত সেরকম আলাদা করে চোখে পড়ার মতো কিছু করতে পারেননি।

     

     

    গত মৌসুমে ইউনাইটেডের দুই সেন্টার ব্যাক ক্রিস স্মলিং ধারে যোগ দিয়েছেন রোমায়, নতুন মৌসুমে এখনও মাঠে নামেননি ফিল জোনস, হয়তো সোলশারের পরিকল্পনায় নেই তিনি। তবে সেন্টার ব্যাকদের মধ্যে খুব সম্ভবত এরিক বাই’র অনুপস্থিতিটা সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে সোলশারকে। ইউনাইটেডের হতাশা বাড়িয়ে দিচ্ছে এই সপ্তাহে বাই’র ইনজুরি আপডেট। এই বছর হয়তো ‘রেড ডেভিল’দের জার্সিতে ফেরা হচ্ছে না তার, জানিয়েছেন ইউনাইটেডের চিকিৎসকেরা। সেক্ষেত্রে নতুন একজন সেন্টার ব্যাককে দলে নেওয়া হয়তো আবশ্যকই হয়ে পড়েছে ইউনাইটেডের।

    মাথিয়াস ডি লিট, কালিদু কুলিবালিদের দলে নিতে আগ্রহী হলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই হতে হয়েছে ইউনাইটেডকে। তবে টটেনহাম হটস্পার ডিফেন্ডার টবি অল্ডারওয়েরেল্ডকে দলে নিতে চায় ইউনাইটেড, জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। বেলজিয়ান ডিফেন্ডার নিজেও স্পার্সের সাথে চুক্তি নবায়নে ইচ্ছুক নন, এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে পারে ইউনাইটেড।

     

    লেফটব্যাক

    বাই’র মত ইনজুরির কারণে ইউনাইটেডের একাদশ থেকে ছিটকে গেছেন লুক শ। তার জায়গায় খেলা অধিনায়ক অ্যাশলি ইয়ং ব্যর্থ হচ্ছেন বারবার। রক্ষণে এখনও তেমন সমস্যা না হলেও আক্রমণে রাশফোর্ডদের বল যোগাতে পারছেন না তিনি। আরেক ফুলব্যাক অ্যারন ওয়ান-বিসাকা ইনজুরিতে পড়ায় ফুলব্যাকদের থেকে ঠিকমত বলের যোগান পাচ্ছে না ইউনাইটেডের ফরোয়ার্ডরা। সেক্ষেত্রে নতুন লেফটব্যাক দলে নেওয়ার কথাও ভাবতে হতে পারে সোলশারের দলকে।

     

     

    লেস্টারের বেন চিলওয়েল, টটেনহামের ড্যানি রোজের দিকে নজর দিতে পারে ইউনাইটেড। দুজনই ক্যারিয়ারে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চান। তবে ডাচ চ্যাম্পিয়ন আয়াক্সের লেফটব্যাক নিকোলাস টালিয়াফিকোকেই প্রথম পছন্দ সোলশারের, জানিয়েছে ডেইলি মিরর। শ’য়ের ইনজুরি, এবং ভাল কোনও বিকল্প না থাকায় স্কোয়াড ডেপথ বাড়ানোর জন্য হলেও একজন লেফটব্যাক দলে নেওয়া হয়তো দরকার ইউনাইটেডের। 

     

    অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার

    প্রতি মৌসুম শেষে পল পগবার ইউনাইটেডে থাকা না থাকা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হওয়া যেন রুটিনেই পরিণত হয়েছে। এবারও তাকে দলে নিতে উঠেপড়ে লেগেছিল রিয়াল মাদ্রিদ, কিন্তু বেঁকে বসে ইউনাইটেড। তবে আসন্ন জানুয়ারি না হলেও হয়তো আগামী গ্রীষ্মে পগবাকে দলে রাখা রীতিমত অসম্ভবই হয়ে পড়বে ‘রেড ডেভিল’দের। সেক্ষেত্রে এখন থেকেই হয়তো পগবার বিকল্প ভাবতে হবে ইউনাইটেডকে।

     

     

    পগবার বদলি হিসেবে সোলশারের প্রথম পছন্দ ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। সতীর্থ অল্ডারওয়েরেল্ডের মত তিনিও চুক্তি নবায়নে অসম্মতি জানিয়েছেন একাধিকবার। তবে ডেনিশ মিডফিল্ডারকে চায় রিয়ালও, সেক্ষেত্রে হয়তো বিকল্প খুঁজতে হতে পারে ইউনাইটেডকে। উলভস মিডফিল্ডার রুবেন নেভেস বা লেস্টার সিটির ইয়ুরি টিয়েলেম্যান্সকেও দলে নিতে পারে তারা।

     

    সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার

    ২০১৯-২০ মৌসুমে স্কট ম্যাকটমিনে বাদে ইউনাইটেডের কোনও মিডফিল্ডারই ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলতে পারেননি। স্কোয়াডে জায়গাই করে নিতে পারেননি নেমানিয়া মাতিচ। একাদশে সুযোগ পেলেও বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন ফ্রেড। মাঝমাঠের সাথে আক্রমণের বোঝাপড়ার অভাবটা সুস্পষ্ট এই মৌসুমে।

     

     

    মাঝমাঠের নতুন সাইনিংয়ের জন্য ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার ডেকলান রাইসকে দলে নিতে চেয়েছিলেন সোলশার। জানুয়ারিতে আবারও হয়তো তার জন্য ‘হ্যামার’দের প্রস্তাব দেবে ইউনাইটেড। রাইস ছাড়াও লেস্টার সিটির উলফ্রেড এন’দিদি বা নিউক্যাসল ইউনাইটেডের শন লংস্টাফের কথা ভাবতে পারে তারা। লাৎসিওর সার্বিয়ান মিডফিল্ডার সার্গেই মিলিঙ্কোভিচ-সাভিচকেও দলে নেওয়ার গুঞ্জন উঠেছিল ইউনাইটেডের, দলবদল শুরু হলে হয়তো এবার তার জন্য রোমের ক্লাবটিকে প্রস্তাব দিতেও পারে ইউনাইটেড। 

     

    স্ট্রাইকার

     এই মৌসুমে ফরোয়ার্ড লাইন নিয়েই সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়েছে ইউনাইটেডকে। প্রিমিয়ার লিগে খেলা ৮ ম্যাচে মাত্র ৯ গোল করেছেন রাশফোর্ড-মার্শিয়ালরা। রোমেলু লুকাকু যেখানে মাতিয়ে বেড়াচ্ছেন সিরি আ, সেখানে গোলের অভাবে নিজেদের মাঠে ক্রিস্টাল প্যালেসের মত দলের কাছেও হারতে হয়েছে ইউনাইটেডকে। নতুন এক স্ট্রাইকার দলে নেওয়া এখন ইউনাইটেডের জন্য সময়ের দাবি। রাশফোর্ড, মার্শিয়ালকে ‘নম্বর ৯’ হিসেবে খেলালেও তারা কেউই মূল স্ট্রাইকার হিসেবে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না খুব একটা।

    স্ট্রাইকার খুঁজতে হয়তো সেই টটেনহামের দিকেই নজর দিতে পারে ইউনাইটেড। স্পার্সের অবস্থাও খুব একটা সুবিধার নয় এই মৌসুমে, আগামী গ্রীষ্মে হয়তো লন্ডনের ক্লাবটির ম্যানেজার নাও থাকতে পারেন মাউরিসিও পচেত্তিনো। সেক্ষেত্রে এই মৌসুমে অবস্থার উন্নতি না হলে হয়তো হ্যারি কেইনকে দলে রাখাও কঠিন হয়ে যাব স্পার্সের।  রেডবুল সালজবুর্গ স্ট্রাইকার আর্লিং ব্রাউট হালান্ডের দিকেও নজর থাকবে ইউনাইটেডের। মোল্ডের হয়ে খেলার সময় তার ম্যানেজার ছিলেন সোলশার। হালান্ড গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেও জানুয়ারিতেই তার জন্য প্রস্তাব দেবে ইউনাইটেড, জানিয়েছে ডেইলি মেইল।

     

     

    হালান্ড ছাড়াও বোর্নমাউথের স্ট্রাইকার জুটি ক্যালাম উইলসন এবং জশ কিংয়ের কথা ভেবে দেখতে পারে ইউনাইটেড। গত গ্রীষ্মে জুভেন্টাস স্ট্রাইকার মারিও মানজুকিচের ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছিল। গঞ্জালো হিগুয়াইন সারির জুভেন্টাসের প্রথম পছন্দ হয়ে ওঠায় হয়তো এই জানুয়ারিতেই ক্লাব ছাড়তে পারেন সাবেক ক্রোয়াট স্ট্রাইকার। তবে স্ট্রাইকার সমস্যা সমাধানে নিজেদেরই আরেক সাবেক স্ট্রাইকারকে ফেরাতে পারে ইউনাইটেড।

    এই নভেম্বরেই এলএ গ্যালাক্সির সাথে চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে ইব্রাহিমোভিচের। এ বছরের জুলাইয়েই ইউনাইটেডে ফেরার ইচ্ছাপোষণ করেছিলেন তিনি। নভেম্বরের পর থেকে ‘ফ্রি এজেন্ট’ ইব্রার সাথে হয়তো জানুয়ারিতেই চুক্তি করতে পারে ইউনাইটেড।