• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    ন্যু ক্যাম্পেও স্লাভিয়া প্রাগের কাছে ধুঁকল বার্সেলোনা

    ন্যু ক্যাম্পেও স্লাভিয়া প্রাগের কাছে ধুঁকল বার্সেলোনা    

    সপ্তাহ দুয়েক আগে স্লাভিয়া প্রাগের মাঠে জয়ের জন্য রীতিমত সংগ্রাম করতে হয়েছিল বার্সেলোনাকে। ন্যু ক্যাম্পে অবশ্য ফেভারিট কে সেটা নিয়ে সংশয়ের সুযোগ ছিল না। কিন্তু খেলা শুরুর পর হিসাব-নিকাশ সব গেছে পালটে। ঘরের মাঠে স্লাভিয়া শাসিয়ে গেছে বার্সাকে। নিজেদের মাঠে খালি হাতে ফিরলেও ন্যু ক্যাম্প থেকে তারা নিয়ে গেছে মহা মূল্যবান এক পয়েন্ট। আর  লা লিগায় আগের ম্যাচে নাটকীয় এক হারের পর স্লাভিয়া প্রাগের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে বার্সেলোনা নতুন করে চাপে পড়ে গেছে আবার।

    লুইস সুয়ারেজের অনুপস্থিতিতে আক্রমণে লিওনেল মেসির সাথে নেমেছিলেন উসমান ডেম্বেলে এবং আঁতোয়া গ্রিযমান। ‘এল পিস্তোলেরো’র ইনজুরির কারণে গ্রিযমানকে তার পছন্দের মূল স্ট্রাইকার ভূমিকায় খেলানোর কথা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন বার্সেলোনা ম্যানেজার এর্নেস্তো ভালভার্দে। কিন্তু স্লাভিয়ার বিপক্ষে একাদশে মেসি খেলেছেন ‘ফলস নাইন’ হিসেবে, গ্রিযমানকে খেলতে হয়েছে সেই বাঁ-প্রান্তেই। আক্রমণে ডেম্বেলে, গ্রিযমানকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি প্রথমার্ধে।

    ডেম্বেলেরা নিজেদের মেলে ধরতে না পারলেও বার্সার হয়ে প্রথমার্ধে একমাত্র ইতিবাচক দিক ছিল মেসির পারফরম্যান্স। ৩৫ মিনিটে দুর্দান্ত এক একক প্রচেষ্টায় তার শট ক্রসবারে প্রতিহত না হলে গোলটাও পেতে পারত বার্সা। মেসির ঐ সুযোগ ছাড়া প্রথমার্ধে আর মাত্র একবার স্লাভিয়ার রক্ষণভাগকে বিপদে ফেলতে পেরেছিল তার দল; কিন্তু জেরার্ড পিকের থ্রু পাস থেকে রাইটব্যাক নেলসন সেমেদোর শট ফিরিয়ে দিয়েছেন গোলরক্ষক কোলার।

     

     

    শুধু আক্রমণ নয়, বার্সার সমস্যা ছিল পুরো একাদশেই। মাঝমাঠের সাথে কোনো ধরণের বোঝাপড়াই ছিল না মেসিদের। রক্ষণের সামনে সার্জিও বুস্কেটস ছিলেন একেবারেই নড়বড়ে, প্রতি-আক্রমণে স্লাভিয়ার আক্রমণের সাথে পেরে ওঠেননি একদমই; দেখেছেন হলুদ কার্ড। মাঝমাঠে যার থেকে ডিফেন্সচেরা পাস প্রত্যাশা করছিল বার্সা, সেই ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংও ছিলেন নিষ্প্রভ। বুস্কেটসের মত নড়বড়ে ছিলেন জেরার্ড পিকেও, প্রথমার্ধে একাধিকবার সহজেই তাকে কাটিয়ে গেছেন স্লাভিয়ার ফরোয়ার্ডরা।


    আরও পড়ুনঃ ২ লাল কার্ড, ৮ গোলের নাটকীয়তায় শেষ চেলসি-আয়াক্স ম্যাচ


    খুব সম্ভবত এই মৌসুমে নিজেদের সবচেয়ে হতাশাজনক খেলাটাই খেলেছে বার্সা। নিষ্প্রভ বার্সার বিপক্ষে প্রথমার্ধে দুর্দান্ত খেলেছে স্লাভিয়া। প্রতি-আক্রমণে গোলের একাধিক সুযোগ পেয়েছিল তারা, কিন্তু দূর্বল ফিনিশিংয়ে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে তাদের। কিন্তু বার্সার মাঠে আক্রমণের এত সুযোগ পাওয়া স্লাভিয়া অবশ্য দমে যায়নি তাতে। প্রথমার্ধের শেষদিকে বার্সার জালে বল পাঠিয়েছিলেন লেফটব্যাক মাসোপুস্ত; কিন্তু অফসাইডে বাতিল হয়েছে গোল।

     

     

    চেকদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে এমন নখদন্তহীন পারফরম্যান্স মেনে নিতে পারেনি বার্সা সমর্থকেরা; প্রথমার্ধের শেষে জোর দুয়োধ্বনি শুনেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে মেসিদের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জর্দি আলবার বদলে সার্জি রবার্তোকে নামিয়ে দেন ভালভার্দে, সেমেদো চলে যান বাঁ-প্রান্তে। নেমেই বার্সাকে আরেকটু হলেই লিড এনে দিতে পারতেন রবার্তো; কিন্তু ডেম্বেলের মাপা পাসে তার হাফভলি ফিরিয়ে দেন কোলার। দ্বিতীয়ার্ধে প্রায় ৮০ ভাগ পজেশন ধরে রেখেও গোলের তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বার্সা।

    গোলের আশায় আক্রমণে আনসু ফাতিকেও নামিয়েছিলেন ভালভার্দে, নেমেই সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন তরুণ ফরোয়ার্ড। কিন্তু ম্যাচের বাকিটা সময় স্লাভিয়া রক্ষণভাগকে তটস্থ রেখেও গোল আর এনে দিতে পারেননি ফাতি। তার পাস থেকে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি, কিন্তু এবার শটটাই গোলে রাখতে পারেননি তিনি। সময়ের সঙ্গে এর পর ন্যু ক্যাম্পে হতাশা বেড়েছে। খেলা শেষের পর সেই হতাশা দুয়ো দিয়েছেন ঘরের সমর্থকেরা।

    ৪ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে এখনও টেবিলের শীর্ষেই আছে বার্সা, পরের দুই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। পরের রাউন্ডে যাওয়ার রাস্তাটা তাই কঠিনই বার্সার জন্য। ডর্টমুন্ড ইন্টারকে হারিয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে, আর ইন্টার ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়।