ব্যালন ডি'অরঃ যেখানে বার্সা-জার্মানি-নেদারল্যান্ডস সবার ওপরে

২০১০ থেকে ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় ও ব্যালন ডি’অর এই দুই পুরষ্কার এক করে ফিফা ব্যলন ডি’অর দেয়ার আগে থেকেই মেসি-রোনালদোর দাপট চলছে ফুটবলে। শেষ ৮ ব্যালন ডি’অর এর সবকটিই নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন এই দুইজন! মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথ ফিফা ব্যালন ডি’অর যোগ করেছে নতুন মাত্রা। পরের ক’বছর এভাবে চলতে থাকলে এই দুইজন বাদে অন্য কেউ শেষ কবে জিতেছিলেন বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের খেতাব- তা মনে করা স্মরণশক্তির ওপর বাড়তি চাপ হয়ে ঠেকতে পারে!
দুই বছর পর রোনালদোকে হারিয়ে আরো একবার বিশ্বসেরা হলেন মেসি। গতরাতে তাঁর পঞ্চম ব্যালন ডি’অর জয়ে বার্সেলোনাও চলে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে! গত দশ বারের ব্যালন ডি’অর এর অর্ধেকেরও বেশী জিতেছেন বার্সেলোনার খেলোয়াড়রেরাই। ২০০৫ এ রোনালদিনহো, এরপর ২০০৯ থেকে পরের টানা চারটি, ও গতকালের পুরস্কারসহ মোট ৬টিই গেছে বার্সেলোনার ঘরে। ১৯৫৬ থেকে শুরু হওয়া ব্যালন ডি’অর এর সবচেয়ে বেশী জয়ীও বার্সেলোনার খেলোয়ারেরাই। ষাটের দশকের শুরুতে বার্সেলোনার হয়ে প্রথম এই কীর্তি গড়েন সুয়ারেজ। এরপর ক্রুইফ, স্টইকভ, রিভালদো, রোনালদিনহো সবাই বার্সেলোনার হয়েই জেতেন ব্যালন ডি’অর।
সর্বোচ্চ ১১ বার জিতে সবাইকে ছাড়িয়ে নতুন এক উচ্চতায় স্থান পেয়েছে কাতালোনিয়ার ক্লাবটি। বার্সেলোনার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮টি করে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন জুভেন্টাস, এসি মিলান ও রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়েরা। তালিকার পরের দুইটি স্থান বায়ার্ন মিউনিখ (৫) ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের (৪)।
ক্লাবের তালিকায় স্পেন এগিয়ে থাকলেও সব থেকে বেশীবার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের খেতাব গেছে জার্মানী ও নেদারল্যান্ডসের ঘরে। এই দুই দেশের ফুটবলাররাই সাত বার করে পেয়েছেন শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা। ১৯৯৬ এ ডর্টমুন্ডের ম্যাথিয়াস সামারের পর এই শিরোপা জেতা হয়নি আর কোন জার্মানের। জার্মানীর হয়ে জার্ড মুলার, বেকেনবাওয়ার, কার্ল-হেইঞ্জ রুমিনেগে (২ বার), লোথার ম্যাথাউস প্রত্যেকেই ব্যালন ডি’অর জেতেন।
৬ বার ব্যালন ডি’অর জিতে এই তালিকার দ্বিতীয়তে আছে ফ্রান্স। ফ্রান্সের হয়ে জয়ীদের মধ্যে আছেন উয়েফার সাবেক সভাপতি মিশেল প্লাতিনি ও রিয়াল মাদ্রিদের নতুন কোচ জিদান। উভয়েই জিতেছেন ৩ বার করে। ইতালি, ইংল্যান্ড, পর্তুগাল, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা- জিতেছে ৫ টি করে।
এর আগে ১৯৯৫ সাল থেকে শুধুমাত্র ইউরোপিয়ান সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনের নিয়ম বদলে ইউরোপের লীগে খেলা সেরা খেলোয়াড় বাছাই এর সিদ্ধান্ত নেয় ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষ। এর আগে শুধুমাত্র ইউরোপের ফুটবলাররাই পেতেন এই পুরস্কার। নতুন নিয়মে প্রথমবারের মতো এবং এখন পর্যন্ত আফ্রিকার একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন লাইবেরিয়ার জর্জ উইয়াহ। ল্যাটিন আমেরিকার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ব্যালন ডি’অর জেতেন রোনালদো (১৯৯৭)।
স্বাভাবিকভাবেই ব্যালন ডি’অর এর লম্বা তালিকায় ফরোয়ার্ডদের জয়-জয়কার। কিন্তু মিডফিল্ডারদের তুলনায় সংখ্যাটা প্রায় দ্বিগুণ হওয়া যদি অবাক হবার মতো পরিসংখ্যান হয় তবে, মাত্র ২ ডিফেন্ডার ও এক গোলকিপারের ব্যালন ডি’অর জয় চমকে দেবার মতো তথ্য। ডিফেন্ডারদের মধ্যে বেকেনবাওয়ারের দুইবারের সাথে ২০০৬ এর বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ক্যানাভারো আছেন। আর গোলকিপার হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন শুধু লেভ ইয়াসিন।