• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    সালাহ-কেইটার গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে লিভারপুল

    সালাহ-কেইটার গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে লিভারপুল    

    ফুল-টাইম

    রেডবুল সালজবুর্গ ০-২ লিভারপুল

    নাপোলি ৪-০ গেঙ্ক


    ম্যাচের আগে রেডবুল সালজবুর্গের স্ট্রাইকার আর্লিং-ব্রাউট হালান্ড বলেছিলেন, লিভারপুলের চ্যাম্পিয়নস লিগ স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেওয়ার দিতে চান তিনি। রেডবুল অ্যারেনাতে ম্যাচের শুরুতে অবশ্য সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইয়ুর্গেন ক্লপের দল প্রমাণ করল, ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট কেন এখন তাদেরই মাথায়। নাবি কেইটা এবং মোহামেদ সালাহর গোলে সালজবুর্গকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ’ ই’ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের রাউন্ডে গেল ‘অল রেড’রা। গেঙ্ককে হারিয়ে এই গ্রুপ থেকে তাদের সঙ্গী নাপোলি, গেঙ্ককে ৪-০ গোলে হারিয়েছে তারা।

    সালজবুর্গের মাঠে হালান্ড ছাড়াও লিভারপুলের প্রতিপক্ষ ছিল তাদের ‘অ্যাওয়ে’ রেকর্ড। চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ১১ ম্যাচের মাত্র ২টিতে জিতেছিল তারা। প্রতিপক্ষের মাঠে আবারও নড়বড়ে মনে হয়েছে লিভারপুলকে। ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়তে পারত তারা, কিন্তু হয়াং এবং হালান্ডকে দুর্দান্ত ডবল সেভে ফিরিয়ে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। মাঠের অন্যপ্রান্তে অ্যালিসনের মতই দুর্দান্ত ছিলেন সালজবুর্গ গোলরক্ষক স্ট্যাঙ্কোভিচ। প্রথমার্ধে সালাহ-মানের দুটি নিশ্চিত গোল ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। শুরুর ধকল সামলে প্রথমার্ধের বাকিটা সময় আক্রমণে এগিয়ে ছিল লিভারপুলই; কিন্তু গোলটা আর পাওয়া হয়নি।

     

     

    প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও লিভারপুল এবং লিডের মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়ান স্ট্যাঙ্কোভিচ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর ১০ মিনিটে তাকে দু’বার একা পেয়ে গিয়েছিলেন সালাহ, কিন্তু সালজবুর্গ গোলরক্ষককে আর পরাস্ত করা হয়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সালাহদের খালি হাতে ফেরানো হয়নি স্ট্যাঙ্কোভিচের। ৫৭ মিনিটে দুর্দান্ত ড্রিবলে সালজবুর্গের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডিবক্সে ঢুকে ক্রস করেন সাদিও মানে। ডিবক্সে ফাঁকা জায়গায় হেড করে দলকে এগিয়ে নেন কেইটা। ড্র করলেই পরের রাউন্ডে যেত লিভারপুল, লিড নেওয়ায় তাই প্রায় নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিল তাদের নকআউট যাত্রা।

    বাকি যেটুকু আশঙ্কা ছিল, সেটাও কেইটার গোলের মিনিটখানেক পর উড়িয়ে দেন সালাহ। আবারও একা পেয়ে যান স্ট্যাঙ্কোভিচকে, কিন্তু এবার আর ভুল করেননি তিনি। তাকে কাটিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সালাহ। ২০১৭-১৮ মৌসুমের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে সালাহর (২৭) চেয়ে বেশি গোল, অ্যাসিস্ট আছে কেবল লিওনেল মেসির (২৮)।

     

     

    দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি সালজবুর্গের, ফিরে আসেনি অ্যানফিল্ডে তাদের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প। ম্যাচ শেষে অবশ্য হতাশ হননি সালজবুর্গ সমর্থকেরা। তাদের জোর হাততালির মাঝেই টানেল দিয়ে মাঠ ছেড়েছেন হালান্ডরা। মাঠে উপস্থিত হাজার তিনেক লিভারপুল সমর্থক অবশ্য মেতেছেন উল্লাসে। ক্লপ আগেই বলেছিলেন, রানার্স আপ হয়েও নকআউট পর্বে যেতে সমস্যা নেই তার। গ্রুপচ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ায় তাই হয়তো আত্মবিশ্বাসটা তুঙ্গেই থাকবে তার দলের।

    লিভারপুলের মত অবশ্য জয়ের জন্য এত কাঠখড় পোড়াতে হয়নি নাপোলির। ম্যাচের ৩ মিনিটেই আর্কাদিউজ মিলিকের গোলে লিড নেয় তারা। কার্লো আনচেলত্তির দলের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেছেন মিলিকই, ডি লরেঞ্জোর নিচু ক্রসে পা ছুঁইয়ে বল জালে পাঠিয়েছেন তিনি। ৩৮ মিনিটে হোসে মারিয়া কায়েহনকে ডিবক্সে ফেলে দিয়ে গেঙ্ক গোলরক্ষক ভ্যানডেভুর্ট। ১২ গজ থেকে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন মিলিক।

    জয় নিশ্চিত হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা গা বাঁচিয়েই খেলেছে আনচেলত্তির দল। তারপরও দ্বিতীয়ার্ধে আবারও গেঙ্কের জালে বল পাঠিয়েছে তারা। ৭৪ মিনিটে ডিবক্সে দ্রিস মার্টেন্সের ক্রস ডি নোরের হাতে লাগায় পেনাল্টির বাঁশি দেন রেফারি। ১২ গজ থেকে এবার গোল করেন মার্টেন্স। শেষ পর্যন্ত বড় জয় দিয়েই নকআউট পর্বে গেল নাপোলি।