• বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর
  • " />

     

    মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে বাংলাদেশকে পাকিস্তান সফর সংক্ষিপ্ত করতে বলেছে সরকার

    মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে বাংলাদেশকে পাকিস্তান সফর সংক্ষিপ্ত করতে বলেছে সরকার    

    মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কটের কারণে পাকিস্তান সফরে শুধুমাত্র টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেচলে আসতে বলেছে সরকার। প্রতিটি সফরের আগে ‘জিও’ বা ‘জেনারেল অর্ডার’ লাগে বিসিবির, পাকিস্তান সফরের ক্ষেত্রে এমন আদেশ দেওয়া হয়েছে। আপাতত তাই আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে চলে আসা- এমন সিদ্ধান্তেই বহাল আছে বিসিবি, পিসিবিকে মৌখিকভাবে তা জানানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন পাপন। 

    পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ যাচ্ছে কি যাচ্ছে কি না, সেটি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার কথা ছিল রোববার বিসিবির বোর্ড সভার পর । এ সফর নিয়ে ধোঁয়াশা চলছে বেশ অনেক দিন থেকেই। শ্রীলংকাকে এনে সফলভাবে টেস্ট আয়োজনের পর পাকিস্তান বলে দিয়েছিল, বাংলাদেশের দুইটি টেস্ট পাকিস্তানের বাইরে হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু বিসিবি বলেছিল, আগে তারা টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে চায়। এরপর অবস্থা বুঝে টেস্ট খেলতে যাওয়ার পক্ষে। এরপর পাকিস্তান চেয়েছিল, আগে টেস্ট খেলে আসুক বাংলাদেশ। তবে এখন বিসিবি বলছে, সরকারের আদেশের বাইরে গিয়ে টেস্ট খেলার সুযোগ নেই তাদের।

    বিসিবির বোর্ড মিটিংয়ের পর পাপন বলেছেন, “নিরাপত্তা পরামর্শ নেওয়ার পরও যে কোনও সফরের আগে সরকারের ‘জিও’র জন্য পুরো সূচি দিয়েছিলাম আমরা। এখন পর্যন্ত কাগজ হাতে পাইনি, একটা স্ক্রিনশট পেয়েছি। সেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেসব পয়েন্ট আছে, তার মধ্যে একটা হলো- মধ্যপ্রাচ্যের যে পরিস্থিতি, যে কোনও সময়ের চেয়ে এটি এখন আলাদা। উত্তেজনা বাড়ছে ক্রমান্বয়ে। তারা (সরকার) সফর সংক্ষিপ্ত করার কথা বলেছে। যেহেতু প্রথমে ছিল টি-টোয়েন্টি, সরকার বলেছে, যতো দ্রুত সম্ভব টি-টোয়েন্টি খেলে আসতে, পরে পরিস্থিতি উন্নতি হলে টেস্ট ম্যাচগুলি খেলা যাবে। আমরা পিসিবির সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনা করব, আপাতত মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।” 

    “আগে আমরা বলেছিলাম সংক্ষিপ্ত সময়ে থাকার জন্য। সরকার তখন বলেনি, টি-টোয়েন্টি না কী হবে। এখনকার পরিস্থিতি আলাদা। ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফের সঙ্গে কথা বলে এমন চেয়েছিলাম আমরা। এখন মধ্যপ্রাচ্যে যে পরিস্থিতি আছে, সরকার প্রস্তাব দিয়েছে, যেহেতু টি-টোয়েন্টি আগে আছে, সেটি খেলে চলে আসতে।” 

    বিসিবি প্রেসিডেন্ট বলছেন, ব্যাপারটি আসলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নয়, বরং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে, “নিরাপত্তা ইস্যু যে কোনো জায়গাতেই হতে পারে। তবে তারা যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেবে, সেটি কতোখানি শক্তিশালি, সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মেয়েদের দল গেছে, এইচপি (অ-১৭) দল গেছে। আবার আইসিসি নিরাপত্তা সংস্থা দেখে এসেছে, আইসিসি এখন ম্যাচ অফিশিয়াল পাঠাচ্ছে। এর মানে এই না, পাকিস্তানে কিছু হবে না। তবে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ ভাল। আর একটা বিষয় হচ্ছে- আমাদের এখানেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল এর আগে, তখন একটা দেশ আসেনি, বাকিগুলি এসেছিল। তবে (পাকিস্তানের) এখনকার অবস্থা দেশের মধ্যে না শুধু, মধ্যপ্রাচ্যকে ঘিরেই।”

    “আসলে যেটা বুঝাতে চাচ্ছি, আমরা পাকিস্তানে ক্রিকেট ফিরে আসুক- এটার বিরোধিতা করছি না, সমর্থন করছি। আমরা চাই সব দেশেই খেলা হোক। তবে টি-টোয়েন্টি ও টেস্টে পার্থক্য আছে তো। দুই ফরম্যাটের দৈর্ঘ্যে অনেক পার্থক্য। আপনি যদি নিরাপত্তা নিয়েই ভাবেন, টি-টোয়েন্টি টেস্টের চেয়ে উপযুক্ত পছন্দ।” 

    টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং আইসিসির ইভেন্ট বলে সেটা নিয়ে আলাদা করে ভাবছে বিসিবি। তবে এখানে না খেললে আদৌ কী হবে, সেটির ব্যাপারে নিশ্চিত নন তারা। তবে সবকিছু ‘জানার চেষ্টা করতে’ বিসিবি প্রেসিডেন্ট দুবাইয়ে আইসিসির প্রধান কার্যালয়ে যাচ্ছেন সোমবার। সেখানে আইসিসি প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহরের সঙ্গে ‘দেখা’ করার কথা আছে তার।