আবারও 'বাড়তি দায়িত্ব' নিতে প্রস্তুত মাহমুদউল্লাহ
নেটে ব্যাটিং সেশনের শেষদিকে স্লগের অনুশীলন করছিলেন মাহমুদউল্লাহ- মিডল অর্ডারে নেমে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করার দায়িত্বটা তার ওপর দিতে চায় বাংলাদেশ। এরপর ড্রেসিংরুমে কিট ছেড়ে এলেন সংবাদ সম্মেলনে, এর আগে একদফা কোচের সঙ্গে আলোচনাও করে এলেন কিছু নিয়ে। মাহমুদউল্লাহর ভূমিকা এবার অধিনায়ক। সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার তাড়া দিচ্ছিলেন, এরপর বোলিং সেশন আছে মাহমুদউল্লাহর।
পাকিস্তান সফরের প্রথমভাগে ‘ফিনিশিং’, বোলিংয়ের দায়িত্বের সঙ্গে অধিনায়কত্বের ভারও আছে তার। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তিন ফরম্যাটেই এই দায়িত্ব পালন করেছেন মাহমুদউল্লাহ, তবে প্রতিবারই ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব ছিল তার। সাকিব আল হাসান নিষিদ্ধ হওয়ার পর ভারত সফরেও টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক ছিলেন তিনি। এর আগে হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার অধিনায়ক হবেন মাহমুদউল্লাহই। অবশ্য বিসিবি এখনও নিশ্চিত করেনি সেটি, তবে অস্ট্রেলিয়ায় অধিনায়ক হিসেবে তার যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। পূর্ণমেয়াদে দায়িত্ব পেলে সেটি পরিকল্পনার জন্য সুবিধা হবে, এমন মানলেও আপাতত এই সিরিজের দায়িত্ব নিয়েই ভাবনা তার।
“আমি এখনও জানি না (পূর্ণমেয়াদের অধিনায়কত্বের ব্যাপারে), যেহেতু আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই সিরিজের জন্য। আমি চেষ্টা করবো আমার দায়িত্বটা পুরোপুরিভাবে কাজে লাগাতে। সিরিজ ধরে ধরে অধিনায়কত্বের দায়িত্বটি আসছে।”
অধিনায়কত্বের ব্যাপারটি বোর্ডের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি, “পূর্ণ মেয়াদে অধিনায়কত্ব দিলে তো আমার কাছে অবশ্যই মনে হয় পরিকল্পনার জন্য সহায়ক হবে। এটা সম্পূর্ণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত। আমি এই মুহূর্তে চিন্তা করছি যে আমাকে যেহেতু এই সিরিজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমি চেষ্টা করবো যেন এই সিরিজে ভালো ফলাফল করতে পারি।”
অধিনায়কত্বের বাইরেও সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে বাড়তি আরেকটি দায়িত্ব আছে তার। তিনি ছাড়াও ‘সিনিয়র’ হিসেবে পরিচিত আর চারজন- মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম- এদের মাঝে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী এবার শুধু তামিম ইকবাল। বিশ্বকাপের পর থেকেই অনুপস্থিত ছিলেন এদের কেউ না কেউ।
শ্রীলঙ্কা সফরে মাশরাফি ও সাকিব ছিলেন না, অধিনায়কত্ব করেছিলেন তামিম। এরপর ভারত সফরে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তামিম, আর সাকিব ততদিনে পড়েছেন নিষেধাজ্ঞার কবলে। সেবার মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ছিলেন মুশফিক। এবার মুশফিক সরিয়ে নিয়েছেন, টি-টোয়েন্টিতে মাশরাফি তো অবসরে গেছেন আগেই।
মাহমুদউল্লাহ বলছেন, তামিম ও তিনি প্রস্তুত বাড়তি দায়িত্বের জন্য, “আমি এবং তামিম- আমরা দুজনই ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করি যে আমাদের দায়িত্ব বেশি থাকবে। টপ অর্ডারে তামিমের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি কাজে আসবে। ও খুব ভালো ছন্দে আছে, রান করেছে এই বিপিএলে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করব যে আমার দায়িত্ব যেন ভালোভাবে পালন করতে পারি। আমার যে ভূমিকা থাকবে, শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করা- আমি ওই জিনিসটা করার চেষ্টা করব।
“আমার মনে হয় যে সবারই দায়িত্ব থাকবে। অনেকের হয়তো ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আসতে পারে। তো এই জিনিসটা ওরা অলরেডি মানসিকভাবে মেনে নিয়েছে বা চিন্তা করছে। আশা করব তারা এটার সাথে মানিয়ে নেবে।”
ব্যাটিং অর্ডারের পরিবর্তনের সঙ্গে বোলিং আক্রমণেও একটা পরিবর্তন আছে বাংলাদেশ স্কোয়াডে। পাকিস্তানে তারা যাচ্ছে পেসনির্ভর আক্রমণ নিয়ে। সৌম্য সরকার ছাড়াও স্কোয়াডে আছেন চারজন পেসার- মোস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন, হাসান মাহমুদ। এদের মাঝে একজন বাঁহাতি, বাকি তিনজন ডানহাতি।
মাহমুদউল্লাহ টি-টোয়েন্টিতে পেস আক্রমণে বৈচিত্র নিয়ে আশাবাদি, “আমি মনে করি পেসারদের সবারই জায়গাটা প্রাপ্য ছিল, যারা সুযোগ পেয়েছে। যেমন ধরেন রুবেল। সে এই বিপিএলে দারুণ করেছে। আল-আমিন, সুহাস (শফিউল), মোস্তাফিজ আছে। আমাদের পেস বোলিংয়ের দারুণ বৈচিত্র আছে। আমি এদিক থেকে আশাবাদী যে ওরা এগিয়ে আসতে পারবে এবং আমি সেটা নিয়ে চিন্তিত নই যে আমাদের স্বীকৃত স্পিনার আছে কি নেই। এবার আমাদের পেস বোলিং সাইডটা হয়তো অনেক বেশি অভিজ্ঞ এবং আমি তাদের ওপর আস্থা রাখবো।”