পাকিস্তানের 'নিরাপদ কারাগারের' অন্য সুবিধা দেখছেন মাহমুদউল্লাহও
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষ জনারণ্য। মাহমুদউল্লাহ একেবারে ক্লিনশেভ করে ধোপদুরস্ত। স্বাভাবিকভাবেই খেলা নিয়ে না যতটা, তার চেয়ে বেশি কথা হলো বাইরের আবহ নিয়ে। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য ধৈর্য ধরেই পারিপার্শ্বিকতার প্রশ্ন যথাসম্ভব এড়িয়ে গেলেন। কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর মতো অবশ্য স্বীকার করলেন, এরকম একসঙ্গে অন্তরীন থাকাটা দল হিসেবে তাদের এককাট্টা করতে পারে।
বাংলাদেশের পাকিস্তানের প্রথম দফার সিরিজে মাঠের আলোচনা ছাপিয়ে নিরাপত্তাই মূল কুশীলব। ১০ হাজার পুলিশসহ বিশাল এক নিরাপত্তা বাহিনি রয়েছে বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে। তারপর সন্তুষ্ট নয় বিসিবি, বাংলাদেশ থেকেও গেছে বিশেষ নিরাপত্তা দল। কাল বিশেষ ভাড়া করে বিমানে পাকিস্তানে এসেছে বাংলাদেশ। সেখানে অবশ্য কেক-টেক কেটে, মিষ্টি খাইয়ে ক্রিকেটারদের চাঙা করার একটু চেষ্টা করেছে বিমান। তবে লাহোর বিমানবন্দরে নামতেই নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি দেখে অস্বস্তির একটা চোরাকাঁটা দলের সবার মধ্যেই কমবেশি আসার কথা।
মাহমুদউল্লাহ এই দলের বয়সে সবচেয়ে সিনিয়র, তামিমের পর সবচেয়ে অভিজ্ঞও। অধিনায়ক হিসেবে জানেন, তাঁর কাজই হচ্ছে মাঠের বাইরের এসব কিছু যাতে খেলোয়াড়দের ছুঁয়ে না যায়। সেজন্য আবহ আর পরিবেশ নিয়ে একদমই মাথা ঘামাতে চাইলেন না, ‘আমি যেটা প্রথমে বললাম, যখন আমরা প্লেনে উঠি, যখন বোর্ড থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তারপর থেকে আমরা পরিবেশ নিয়ে চিন্তাই করছি না। আমার কাছে মনে হয় এখন ওইধরনের চিন্তা ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। আমরা মনে হয় দলের প্রতিটা খেলোয়াড় ওইভাবেই চিন্তা ভাবনা করছে। আমরা শুধুমাত্র এখানে ভালো পারফরম্যান্স করার জন্য এসেছি, এবং ভালো খেলার জন্য সবাই মুখিয়ে আছি।’
এটা তো অবশ্য কটা দিক। তবে নিরাপত্তার এই বাড়াবাড়ির আরেকটি দিকও আছে। কোথাও যেহেতু বেরুনোর উপায় নেই, সবার একসঙ্গে থাকছে। সময় কাটাচ্ছেন। আর এমন নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আলাদা থাকাটাও খানিকটা অস্বস্তির। একসঙ্গে থাকলে মানসিক বন্ধন আরেকটু দৃঢ় হওয়ার ব্যাপারটা যেমন বলেছিলেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। মাহমুদউল্লাহ শুরুতে অবশ্য সেটি মানতে চাইলেন না, ‘না, একদমই না। আমরা এটা বাংলাদেশেই রেখে এসেছি, যখন আমরা প্লেনে উঠেছি। আমরা পাকিস্তানে মাঠের ক্রিকেটে ভালো করার চিন্তা করছি। আমরা ভালো একটা শো উপহার দিতে চাই।’
পরে অবশ্য মানলেন, ব্যাপারটার ইতিবাচক একটা দিক আছে, ‘এটা একদিক থেকে ইতিবাচক হতে পারে। কারণ আপনি সতীর্থদের সঙ্গে সনেক সময় কাটাচ্ছেন। এটা আমার কাছে মনে হয় ইতিবাচকই।’
এই দফায় তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলে চলে আসতে হচ্ছে। পরে দুই দফায় আরওদুইটি টেস্ট ও একটি ওয়ানডেও খেলবে বাংলদেশ। এভাবে বার বার আসা যাওয়া মানসিক দিক দিয়ে মানিয়ে নেওয়া কতটা কটিন? মাহমুদউল্লাহ এই প্রশ্নও এড়িয়ে গেলেন। বললেন, আপাতত এসব নিয়ে ভাবতে চাইছেন না, ‘আমরা এখন শুধু তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে এসেছি। এবং এই মুহূর্তে আমরা শুধু মাত্র এটা নিয়েই চিন্তা করছি। আমরা পরেরবার আসলে বলতে পারব কেমন অনুভব হচ্ছে। এখন আমরা শুধু টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়েই চিন্তা করছি। আমি যেটা বললাম ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই এবং পাকিস্তানকে হারানোর প্রত্যাশা করছি। এটাই আমি চিন্তা করছি।’
আপাতত সেই মাঠের দিকেই মনযোগ দিতে চাইবে বাংলাদেশ।