'মুশফিক আছেন, মুশফিক নেই'-এর ডামাডোলে আবার ৪ নম্বরে ফিরছেন মুমিনুল
মুশফিকুর রহিম নেট করে ফিরছিলেন। বিসিএলের ম্যাচ খেলছেন না, প্রথম রাউন্ডের পর জাতীয় দল যাবে পাকিস্তানে একটি টেস্ট খেলতে, মুশফিক নিজেকে আগেই সরিয়ে নিয়েছেন এ সফর থেকেও। তবে নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন তিনি।
সাকিব আল হাসান নেই বলে মিডল-অর্ডারে আগে থেকেই একটা শূন্যতা ছিল, এবার মুশফিকের শূন্যস্থানটাও পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। অবশ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে এপ্রিলে দ্বিতীয় টেস্টের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দেশের মাটিতে একটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ, চোটের সমস্যা না থাকলে যেখানে মুশফিককে পাওয়ার কথা। সব মিলিয়ে ব্যাটিং অর্ডারে একটা পরিবর্তন আসছে, ডমিঙ্গো একটা রূপরেখাও তৈরি করে রেখেছেন।
ভারত সফরে দুই টেস্টেই চার ও পাঁচে ব্যাটিং করেছেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। মিঠুন স্কোয়াডে আছেন, মুশফিকের জায়গায় তাকে পাঁচ নম্বরেই পাঠানোর পরিকল্পনা বাংলাদেশের। চার নম্বরে তাই পাঠানো হতে পারে অধিনায়ক মুমিনুল হককে, দেশ ছাড়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে এমন জানিয়েছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
চার নম্বরে ক্যারিয়ার শুরু করলেও ২০১৪ সালের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম তিনে উঠিয়ে আনা হয় মুমিনুলকে, নয় টেস্ট পর। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট, আর গত বছর একই ভেন্যুতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ছাড়া মুমিনুল ব্যাটিং করেছেন তিন নম্বরেই। অবশ্য মুমিনুল শুরুর চার নম্বরেই ছিলেন বেশি স্বচ্ছন্দ, ১৯ ইনিংসে তার গড় এখানে ৬০, যেখানে তিনে ব্যাটিং করে গড়টা নেমে এসেছে ৩৩.৯৭-এ।
মুমিনুলের চারে ফেরার সঙ্গে সাইফ হাসানের অভিষেকের কথাও বলেছেন ডমিঙ্গো, “আপাতত মুমিনুলকে চারে ব্যাটিংয়ে নামানোর কথা ভাবা হচ্ছে। আমি হয়তো শান্তকে তিনে খেলাবো, তামিমের সঙ্গে ওপেন করবে সাইফ হাসান। (মোহাম্মদ) মিঠুন ও (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ খেলবে পাঁচ ও ছয়ে, লিটন হয়তো সাতে আসবে।”
অবশ্য পাকিস্তান সফরের এক টেস্টের জন্য ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনাটা কঠিন মানছেন তিনি। এর পেছনে মূল কারণ মুশফিকই, “আমি যেটা জানি, এই স্কোয়াডটা শুধু এক টেস্টের জন্যই। ফিরে এসে আমরা আবারও মূল্যায়ন করব। মনে রাখতে হবে, মুশফিক শেষ টেস্টে রান পেয়েছে। আবার আমাদের এটাও বিবেচনা করতে হবে একটা ব্যাটিং লাইন-আপ ঠিক করে আবার এক টেস্টের জন্য বদলানো, এবং আবারও এসে তৃতীয় (পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট, মাঝে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ) টেস্টে আবার বদলাতে হবে। আমি ছেলেদের একটা সুযোগ দিতে চাই, আবার আমাদের মনে রাখতে হবে যে ভারতে মুশফিকই আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান ছিল।”
ব্যাটিং অর্ডার ঠিক করার চেয়েও অবশ্য বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ টেস্ট ফরম্যাটটাও। ভারত সফরে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয়ের পর থেকেই যেন সুখস্মৃতি মিলিয়ে গেছে, পাকিস্তানে প্রথম দফা গিয়ে বৃষ্টিতে শেষ টি-টোয়েন্টি পরিত্যক্ত হওয়ার আগে দুটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। ভারত সফর থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উন্নতি করতে পারলেই পাকিস্তানকে কোণঠাসা করা সম্ভব বলে মানছেন ডমিঙ্গো।
“আমরা জানি টেস্টে ভাল খেলিনি আমরা সাম্প্রতিক সময়ে। তবে জিততে পারবেন না, এটা ভেবেই যদি পাকিস্তান যান, তাহলে এখানে থেকে যাওয়াই ভাল। আমি আত্মবিশ্বাসী যে ভাল করতে পারলে এবং ভারত সফর থেকে তুলনামূলক উন্নতি করতে পারি, তাহলেই আমরা পাকিস্তানকে একটু কোণঠাসা করতে পারব। ব্যাপারটা কঠিন হবে, তারা ভাল দল। তবে আমরা জানি যে তাদেরও খারাপ দিন আসে। আমাদের একটা ভাল দিন, আর তাদের একটা বাজে দিন লাগবে। এমন হলে আমরা নিজেদের সুযোগ দেখছি।”
দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জেতার লক্ষ্যও আছে তার, “দেশের হয়ে খেলার সময় প্রতিবারই আপনাকে উজ্জীবিত থাকতে হবে। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় একটি দলের সঙ্গে বড় একটি সিরিজ এটি। টেস্টে আমাদের অনেক কিছু উন্নত করতে হবে, বেশ লম্বা সময় ধরে আমরা এই ফরম্যাটে ভাল খেলিনি। বাংলাদেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জেতার একটা লক্ষ্য সেট করহি আমরা। আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার অভাব নেই।”