• বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর
  • " />

     

    নেট সেশন : সেই পাকিস্তানে পুরনো প্রশ্নের সামনে বাংলাদেশ

    নেট সেশন : সেই পাকিস্তানে পুরনো প্রশ্নের সামনে বাংলাদেশ    

    ১ম টেস্ট
    পাকিস্তান-বাংলাদেশ

    কবে, কখন
    ৭-১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
    বাংলাদেশ সময় ১১ টা (১১০০)


    পূর্ণাঙ্গ সফর- মানে তিন ফরম্যাটের সফরে ফরম্যাটভেদে হয়তো লেভেল আলাদা করা যায়। বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর টাইমফ্রেমেই আলাদা হয়ে আছে আগে থেকেই। টি-টোয়েন্টি লেভেল শেষ করে এসে বাংলাদেশ এবার টেস্ট লেভেলে, তবে সেটি অর্ধেক শেষ করে আবার ফিরবে তারা। ফরম্যাট যখন টেস্ট, তখন পুরোনো সব প্রশ্নগুলিই যেন ফিরে ফিরে আসে। 

    পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ টেস্ট খেলতে নামবে প্রায় ১৭ বছর পর। পাকিস্তানের সঙ্গেই বাংলাদেশ খেলতে নামবে প্রায় ৫ বছর পর। অভিষেকের প্রথম তিন বছরই এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপসহ বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিল ৩টি সিরিজ, এরপর ৮ বছর বিরতি দিয়ে ২০১১ সালে আরেকটি, এর চার বছর পর ২০১৫ সালে অন্যটি। প্রতিপক্ষ হিসেবে টেস্ট অঙ্গনে পাকিস্তান তাই সাম্প্রতিক সময়ে খুব একটা চেনা নয়। 

    টেস্টের সাম্প্রতিক সময়ের বাংলাদেশের পারফরম্যান্সটাও অবশ্য ফিরিয়ে এনেছে পুরোনো স্মৃতি, নতুন করে। টেস্টে অভিষেকের পর ১৩ বার এমন হয়েছে, বাংলাদেশ যখন বছরে টেস্টে জয় পায়নি একটিও। এর আগের তিন বছরেই অন্তত একটি করে জয় ছিল তাদের। এমন পরিস্থিতিতে টেস্ট আবার আসছে তাই নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে। 

    সাকিব আল হাসান আগে থেকেই নেই, বাংলাদেশ এবার পাচ্ছে না মুশফিকুর রহিমকেও। ফিরছেন তামিম ইকবাল। রাওয়ালপিন্ডিতে পেস সহায়ক কন্ডিশন থাকতে পারে, বাংলাদেশের পেস আক্রমণ সেখানে থিতু হতে পারেনি সে অর্থে। আল-আমিন হোসেন টেস্ট সার্কিটে ফিরেছেন ভারত সফর দিয়ে, এবার ফেরানো হয়েছে রুবেল হোসেনকেও। সাকিব নেই বলে স্পিনে শুন্যস্থান পূরণের ভার তাইজুল ইসলামের ওপর, চোটের কারণে নেই মেহেদি হাসান মিরাজও। 

    পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণও যে খুব অভিজ্ঞ, ঠিক তা নয়। ইয়াসির শাহকে বাদ দিলে ১০টির ওপর টেস্ট খেলেছেন শুধু মোহাম্মদ আব্বাস। তবে অস্ট্রেলিয়া সফর থেকেই ইমরান খান, নাসিম শাহরা দেখিয়েছেন নতুন ঝলক। ভারতে পেসারদের মুভমেন্টের নাজেহাল বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের সামনে এবার তাই অপেক্ষা করছে একই ক্যাটাগরির অন্য মাত্রার চ্যালেঞ্জ। 

    রঙ্গমঞ্চ
    রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, রাওয়ালপিন্ডি

    এ ভেন্যুতে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেনি কখনও, গত বছরের শেষে শ্রীলঙ্কা আসার আগে এ ভেন্যুতে সর্বশেষ টেস্ট হয়েছিল ২০০৪ সালে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টটি অবশ্য ছিল বৃষ্টিবিঘ্নিত, একদিন খেলাই হতে পারেনি। অবশ্য এ ম্যাচ চলার সময় বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই, প্রথম চারদিন আকাশ মেঘমুক্তই থাকার কথা। এমনিতে ঐতিহাসিক ভাবে পেস সহায়ক উইকেট থাকে টেস্টে, এ ভেন্যুতে সর্বোচ্চ উইকেটশিকার বোলারদের তালিকার প্রথম ৫ জনের ৪ জনই পেসার। 

    যাদের ওপর চোখ

    তামিম ইকবাল

    এর আগে টি-টোয়েন্টিতে ফিরেছেন, এবার ফিরছেন টেস্টে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ছুটি নেওয়ার পর পারিবারিক কারণে ভারত সফরের টেস্ট সিরিজেও ছিলেন না তিনি। পাকিস্তান সফরের আগেই বিসিএলে দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে প্রথম শ্রেণিতে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছেন, গড়েছেন সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ডও। তামিমের আত্মবিশ্বাস সে অর্থে তুঙ্গে থাকার কথা, তবে টেস্ট আঙিনার প্রেক্ষাপট তো আলাদা, আর সেখানে প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারটাও তাই আলাদাই। 


    নাসিম শাহ

    অ-১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তান স্কোয়াডে ছিলেন, তবে এই টেস্টের স্কোয়াডে থাকবেন বলেই তাকে শেষ মুহুর্তে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল পাকিস্তান। মানে ‘জুনিয়র’ লেভেল থেকে সিনিয়র লেভেলে চলে গেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টে করাচিতে নিয়েছেন ৫ উইকেট। 

    সম্ভাব্য একাদশ

    ভারতের বিপক্ষে স্কোয়াড থেকে নেই ৬ জন, এর মাঝে শেষ কলকাতা টেস্টে খেলেছিলেন ৪ জন- সাদমান ইসলাম, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, মেহেদি হাসান মিরাজ। এ ৪টি পরিবর্তন তাই নিশ্চিতই। আর দেশ ছাড়ার আগে ব্যাটিং অর্ডারের অনেকখানির আভাসই প্রায় দিয়ে গেছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। সে অনুযায়ী অভিষেক হতে পারে সাইফের, তিনে খেলবেন শান্ত। চারে নেমে যাবেন মুমিনুল, আরেকবার সুযোগ পাবেন মিঠুন। 


    বাংলাদেশ
    তামিম ইকবাল, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ, লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, এবাদত হোসেন 


    পাকিস্তান
    শান মাসুদ, আবিদ আলি, আজহার আলি, বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, হারিস সোহেল, আসাদ শফিক, ইয়াসির শাহ, মোহাম্মদ আব্বাস, নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি


    সংখ্যার খেলা 

    • ২৩ বছর ধরে রাওয়ালপিন্ডিতে কোনো ম্যাচ জেতেনি পাকিস্তান। 
    • সাকিবের অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত টেস্টে শুধু দুইবার সাকিব-মুশফিকের কেউই নেই। কাল হতে যাচ্ছে তৃতীয়বারের মতো। গত বছর নিউজিল্যান্ড সফরের দুই টেস্টে ছিলেন না সাকিব-মুশফিক 

    তারা যা বলেন 

    অবশ্যই তামিম ভাই বিশ্বমানের প্লেয়ার। আমার কাছে মনে হয় না উনার মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে। মাত্রই বিসিএলে বড় একটা ইনিংস খেলে এসেছেন। মুশফিক ভাই নেই, এটা আমাদের জন্য অবশ্যই একটা শুন্যতা। তবে তামিম ভাই ফেরায় আমাদের জন্য অবশ্যই বড় একটা প্রাপ্তি।   

    মুমিনুল হক, বাংলাদেশ অধিনায়ক

    টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য এখন প্রতিটি টেস্টই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নিজেদের সেরাটা দেওয়ারই চেষ্টা করব। করাচিতে আমরা যেভাবে আগ্রাসী ছিলাম (শ্রীলংকার সাথে), পিন্ডিতেও সেরকম আক্রমণ করতে চাইব। 

    আজহার আলী, পাকিস্তান অধিনায়ক