• এএফসি কাপ
  • " />

     

    কিক অফের আগে : এএফসি কাপের সাফল্য থেকেই প্রেরণা খুঁজছে আবাহনী

    কিক অফের আগে : এএফসি কাপের সাফল্য থেকেই প্রেরণা খুঁজছে আবাহনী    

    কবে, কখন 
    এএফসি কাপ 
    সেকেন্ড প্রিলিমিনারি, দ্বিতীয় লেগ 
    মাজিয়া এফসি-আবাহনী 
    ১২ ফেব্রুয়ারি, বিকাল ৫.০০
    প্রথম লেগের ফল, আবাহনী ২-২ মাজিয়া 


    আবাহনী ফিরে তাকাতে পারে। খুব বেশি দূরে যাওয়ারও দরকার নেই। মাত্র ৮ মাস আগের গল্পতে অনুপ্রেরণা খুঁজে পেতে পারে। সেদিন গুয়াহাটিতে সবকিছু ছিল আবাহনীর প্রতিপক্ষ। ইতিহাস, শক্তিশালী প্রতিপক্ষ- সবকিছুকে প্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়ে যোগ করা সময়ের গোলে সেদিন মিনার্ভা পাঞ্জাবকে পাঞ্জাবকে হারিয়েছিল আবাহনী। ওই ম্যাচ জিতেই বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে আবাহনী উতরে গিয়েছিল এএফসি কাপের গ্রুপপর্ব। 

    সে কাজটাই আবার করতে হবে আবাহনী। এবারও গল্পটা একইরকম। প্রথম লেগে মাজিয়ার সঙ্গে ঘরের মাঠে ২-২ গোলে ড্র করে পিছিয়ে থেকেই মালদ্বীপ গেছে আবাহনী। পার্থক্য একটাই, সেবার গ্রুপপর্ব পেরিয়ে আবাহনী উঠেছিল জোনাল সেমিফাইনালে। এবার লড়তে হচ্ছে এএফসি কাপের মূলপর্বে বাছাই করতে।

    আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস ঘরের মাঠে প্রথম লেগের আগে দলের জয় নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসীই ছিলেন। কিন্তু তার দলের খেলায় কোচের আত্মবিশ্বাসের ছিটে-ফোঁটাও পাওয়া যায়নি। হোম অ্যাডভান্টেজটাও তাই কাজে লাগানো হয়নি আবাহনীর। দ্বিতীয় লেগের আগে তাই আবাহনীর চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে মাজিয়া।
     


    ম্যাচের আগেরদিন মালেতে সংবাদ সম্মেলনে লেমোসও সে কথাই বললেন, “আমার মনে হয় ওরা একটু হলেও এগিয়ে আছে। ঢাকায় বেশ ভালো খেলেছে মাজিয়া। এটা আমাদের জন্য বড় পরীক্ষা। মাজিয়া খুব ভালো দল, সে কারণেই ওরা মালদ্বীপের চ্যাম্পিয়ন।”

    আবাহনীর রক্ষণের পুরনো সমস্যার সমাধান যে এবারও হয়নি সেটার প্রমাণ মিলেছিল মাজিয়ার বিপক্ষে প্রথম লেগেই। মাজিয়া সে ম্যাচে খেলেছিল কাউন্টার অ্যাটাকে, তাতে প্রতিবারই আবাহনীর নড়বড়ে রক্ষণ দলকে ফেলে দিয়েছে সঙ্কটে। প্রথম লেগে মাজিয়ার গ্রানাডিয়ান স্ট্রাইকার কর্নেলিয়াস আর ইব্রাহিম সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন আবাহনীকে। লেমোস দ্বিতীয় লেগের আগে তাই রক্ষণে মন দিচ্ছেন বেশি, “আমরা মাজিয়াকে থামাতে চাই। ওদের আক্রমণভাগে বেশ ভালো। আমরা যদি ওদের আক্রমণ থামাতে পারি তাহলে আমাদেরও আক্রমণভাগে যথেষ্ট ভালো খেলোয়াড় আছে যারা গোল করতে পারবে বলে আমি আশা করি।”   

    দ্বিতীয় লেগে যখন কঠিন সমীকরণ, তখন লেমোস তাই প্রেরণা খুঁজছেন গত বছর স্কাই ব্লু বিগ্রেডের স্বপ্নযাত্রাতে, “এএফসি কাপে (গতবছর) আমাদের ওপর প্রত্যাশা ছিল না কোনো, আমরা সেটা বদলাতে চেয়েছিলাম। আমরা যে ম্যাচই খেলেছি সেটাই জিততে চেষ্টা করেছি।” 

    “আশা করি গত বছরের অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে দেবে এবার। গত বছরও এরকম সমীরকরণ ছিল আমাদের সামনে। শেষ ম্যাচে জিততে হত আমাদের।” 

    আবাহনী অধিনায়ক নাবিব নেওয়াজ জীবনও কোচের ওপর ভরসা রাখছেন। তিনি বলছেন গতবার কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলে তারা সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এবারও কোচের পরিকল্পনা  মাঠে সফল করতে পারলে মাজিয়ার বিপক্ষে জয় সম্ভব বলে বিশ্বাস জীবনের। 

    হেড টু হেড 
    মালদ্বীপের ক্লাবগুলোর বিপক্ষে এএফসি কাপে কখনই জয়ের দেখা পায়নি আবাহনী। অবশ্য আবাহনী বাছাইপর্বে খেলছে এবারই প্রথম। এএফসি কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর রেকর্ডও আবাহনীর বিপক্ষে। বাছাইপর্বের কোনো ম্যাচই জেতা হয়নি বাংলাদেশের কোনো ক্লাবের। 

    মাজিয়ার বিপক্ষে ২০১৭ সালে গ্রুপপর্বের ম্যাচে দুই লেগে ২-০ ব্যবধানে হেরে ফিরেছিল আবাহনী। মাজিয়ার বিপক্ষে প্রথম লেগে আবাহনীর করা ড্র মালদ্বীপের যে কোনো দলের বিপক্ষে বাংলাদেশী দলের পাওয়া প্রথম পয়েন্ট। বাছাইপর্বের প্রথম ধাপ উতরাতে হলেও তাই আবাহনীকে আসলে আরেকটি ইতিহাসই গড়তে হবে। 

    দলের খবর 
    রক্ষণে এই ম্যাচেও টুটুল হোসেন বাদশাকে পাচ্ছেন না লেমোস। প্রথম লেগের আগে সেরে উঠলেও বাদশা ম্যাচ খেলার জন্য পুরোপুরি ফিট ছিলেন না। সে হিসাবে দ্বিতীয় লেগে খেলারই কথা ছিল তার। তবে বাদশা প্রথম লেগের পরই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আরেকবার। মাজিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগেও তার খেলার সম্ভাবনা কম। 

    লেমোসকে তাই নাসির-মেলসনের জুটির ওপর ভরসা করতে হচ্ছে রক্ষণে। এই দুইজনের সঙ্গে রায়হান হাসানও রক্ষণে থাকায় আগের ম্যাচে আবাহনীর রক্ষণ ছিল শ্লথ। সেটাই আবাহনীকে ভুগিয়েছিল বেশি। বাদশার মতো গতিশীল ডিফেন্ডারের অভাবটা তাই ভোগানোরই কথা লেমোসকে।

    পরের রাউন্ডে যেতে আবাহনীর সমীকরণ : মাজিয়াকে হারাতে পারলে সরাসরি বাছাই পর্বের প্লে-অফে উঠে যাবে আবাহনী। আর ২-২ গোলে ড্র হলে খেলা গড়াবে অতিরিক্ত সময়ে। এর কম গোলে ড্র করলেও বাদ পড়বে আবাহনী। ৩-৩ বা এর বেশি গোলে ম্যাচ ড্র হলে অ্যাওয়ে গোলে উতরে যাবে স্কাই ব্লু বিগ্রেড।