• বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর
  • " />

     

    লাহোরের ওই দিনটা 'অনেক কিছু শিখিয়েছে' সাঙ্গাকারাকে

    লাহোরের ওই দিনটা 'অনেক কিছু শিখিয়েছে' সাঙ্গাকারাকে    

    ২০০৯, লাহোর। মার্চের ওই দিনটায় কুমার সাঙ্গাকারা তার সতীর্থ থিলান সামারাবিরা এবং থারাঙ্গা পারানাভিতানাকে নিজ চোখে রক্তাক্ত হতে দেখেছেন। পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে বুলেট, মৃত্যুকে যেন দেখেছিলেন সামনে থেকে। সেদিন হেলিকপ্টারে করে গাদ্দাফি স্টেডিয়াম ত্যাগ করেছিলেন তারা। সেই পাকিস্তানে সাঙ্গাকারা ফিরছেন আবারও, ক্রিকেট খেলতেই। তবে এর আগে বলছেন, সেই ঘটনাগুলোর প্রভাব তার জীবনে সুদূরপ্রসারী।

    লাহোরে সেদিন শ্রীলঙ্কার টিম বাস ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের বাসে ভয়ানক হামলা করেছিল সন্ত্রাসীরা। লাহোর টেস্ট পরিত্যক্ত হয়ে, আর শ্রীলঙ্কা দলের সাথেই পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনও থমকে যায় অনির্দিষ্টকালের জন্য। শ্রীলঙ্কা দলের উপর সেদিনের হামলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়েছিলেন সামারাবিরা, পরানাভিতানা, মেন্ডিসসহ ৬ জন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটার। নিহত হয়েছিলেন  ৬ নিরাপত্তা কর্মী এবং দু’জন পথচারী। আর শ্রীলঙ্কা দলের দুজন স্টাফ এবং ম্যাচের রিজার্ভ আম্পায়ার আহত হন। 

    সেই তিক্ত স্মৃতি পিছনে ঠেলে প্রায় দশ বছর পর আবারও পাকিস্তানে পা রাখছেন সাঙ্গাকারা।

    ২০০৯ সালের সেই সন্ত্রাসী হামলায় একটুর জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন সাঙ্গাকারা। সতীর্থ সামারাবিরা আহত হওয়ার পর বাসে নিজের আসন ছেড়ে তার দিকে গিয়েছিলেন সাঙ্গাকারা। ঠিক তখনই একটি গুলি সাঙ্গাকারার পাশ দিয়ে গিয়ে বাসের যে আসনটিতে তিনি বসেছিলেন সেখানে আঘাত করে। ২০১১ সালে এমসিসির স্পিরিট অফ ক্রিকেট লেকচারে এসব জানিয়েছিলেন তিনি। 

    গতকাল পাকিস্তানে এসে ক্রিকইনফোর সাথে এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, সেদিনের দুঃস্মৃতির সবকিছু এখনো তার পইপই করে মনে আছে, “আমার কোনো ফ্ল্যাশব্যাকের দরকার নেই, সেই দিন এবং ঘটনাগুলো এখনো আমার পরিষ্কার মনে আছে। এমন না যে আমি যেচে মনে করার চেষ্টা করি, তবে আমি মনে করি ঐ ধরনের ঘটনাগুলো কখনো ভুলে যাওয়া উচিৎ নয়। সেই ঘটনাগুলো আপনাকে জীবন এবং খেলার বিষয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। আপনি নিজের ও অন্যদের চরিত্র এবং মূল্যবোধ সম্পর্কে জানতে পারেন।”

    সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটির কিভাবে সামলে উঠেছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে সাঙ্গাকারা বলেন, “আমি মনে করি সবাই নিজের মতো করেই আসলে এই বিষয়গুলোর মোকাবিলা করে। তবে মূল বিষয় হচ্ছে, এ ধরনের দুর্যোগপূর্ণ সময়ে নানা রকমের চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হয়, সেগুলো একসাথে মোকাবিলা করা এবং সফল হওয়া। ক্রিকেটের সাথে সামনে এবং আরও উঁচুতে এগিয়ে যাওয়াটাই মূল লক্ষ্য। শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের সাক্ষী হওয়ায় এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে মানসিকভাবে উৎরে ওঠার উপায় শ্রীলঙ্কাদের জানা আছে।”

    ক্রিকেটের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতে পাকিস্তানে এখন সাঙ্গাকারা। ১২ সদস্যের দল নিয়ে পাকিস্তানে আসা এমসিসির অধিনায়কত্ব করছেন সংস্থাটির প্রথম নন-বৃটিশ সভাপতি সাঙ্গাকারা। দলে তিনি ছাড়াও রয়েছেন রবি বোপারা, রস হোয়াইটলি এবং রুলফ ফন ডার মারওয়ে সহ আরও বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার।

    ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এমসিসির দলটি পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটের চারটি দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলবে।