০.৫ পয়েন্ট বাঁচাতে ১১৪/৪-এ রানে ইনিংস ঘোষণা, হিসাবের গড়বড়ে এরপর নিজেরাই বিপদে রাজ্জাকরা
ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন- বিসিবি সাউথ জোন
২য় দিন, স্টাম্পস
সেন্ট্রাল জোন ১ম ইনিংস ২৩৫ অলআউট, ২য় ইনিংস ২০৯/৬ (শান্ত ১২২*, রকিবুল ৩৯; নাসুম ৩/৫৫)
সাউথ জোন ১ম ইনিংস ১১৪/৪ ডিক্লে. (নুরুল ৪৮*, শামসুর ২৫ ; ইফরান ২/৪২)
সেন্ট্রাল জোন ৩৩০ রানে এগিয়ে
বিসিএলে সেন্ট্রাল জোনকে বোনাস পয়েন্ট বঞ্চিত করতে গিয়ে অনেকটা যেন নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনছে টেবিলের শীর্ষে থাকা সাউথ জোন। তৃতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয় দিন ২ উইকেটে ২৯ রান নিয়ে খেলতে নামা সাউথ জোন প্রথম ইনিংসে ২৮.৪ ওভার ব্যাটিং করেই ৪ উইকেটে ১১৪ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করেছে। তবে সেন্ট্রালের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহের চেয়ে তখনো তারা ১২১ রান পিছিয়ে।
মূলত বোনাস পয়েন্টের হিসেবে প্রতিপক্ষকে পিছিয়ে দিয়ে ফাইনালে যাওয়ার জন্যই এই দান খেলেছিল সাউথ জোন। বিসিএলের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, প্রথম ইনিংসে ১০০ ওভারের মাঝে প্রতিপক্ষের ৫ম, ৭ম ও ৯ম উইকেটের প্রতিটির জন্য ০.৫০ করে বোনাস পয়েন্ট পায় বোলিংয়ে থাকা দল। সেন্ট্রালের সঙ্গে ফাইনালে যাওয়ার লড়াই চলতে থাকায় এই বোনাস পয়েন্টটি তাদের হাতে তুলে দিতে চায়নি সাউথ। পয়েন্ট টেবিলে ১৬.৩৯ পয়েন্ট নিয়ে এই রাউন্ডের আগে শীর্ষে ছিল সাউথ জোন। এই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে সেন্ট্রাল জোনকে ২৩৫ রানে আটকে দেওয়ায় আরও ১.৫০ পয়েন্ট যোগ হয়েছে সাউথের খাতায়। তাই সাউথ জোনের পয়েন্ট হয়েছে ১৭.৮৯।
বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণিতে বোনাস পয়েন্টের হিসাব আসার পর থেকে এমন ইনিংস ঘোষণা অবশ্য নতুন নয়। ২০১৮-১৯ মৌসুমে ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৫৯ রান তুলেই ইনিংস ঘোষণা করে দিয়েছিল ঢাকা মেট্রো। সেবারও ওই ০.৫ পয়েন্টের হিসাবই ছিল তাদের। অবশ্য শেষ পর্যন্ত সেই ম্যাচ হেরেছিল মেট্রো।
তড়িঘড়ি ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্তটা শেষ পর্যন্ত বুমেরাং হয়ে যেতে পারে সাউথের জন্যও। কারণ এই ম্যাচে জয় পেলে সেন্ট্রাল এখান থেকে পাবে ৮ পয়েন্ট, বর্তমান পয়েন্ট ৯.৫-এর সঙ্গে। তবে এই ম্যাচ জিতলে টানা দুই ম্যাচ জিতবে তারা, সেক্ষেত্রে আরেকটি বোনাস পয়েন্টও মিলবে তাদের। ফলে তখন তাদের মোট পয়েন্ট সংখ্যা হবে ১৮.৫। তখন সাউথ জোনকে টপকে ফাইনালে চলে যাবে তারাই। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে সেন্ট্রাল জোন। এই ইনিংসে ১২১ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিং শুরু করা সেন্ট্রাল দিন শেষ করেছে ৩৩০ রানে এগিয়ে থেকে। এই রাউন্ডের অপর ম্যাচে যদি ইস্ট জোন নর্থের বিপক্ষে জিতে যায়, তাহলে সেন্ট্রাল এবং ইস্ট উঠে যাবে ফাইনালে, সেক্ষেত্রে বাদ পড়ে সাউথের পাশার দান পুরোপুরি উল্টে যাবে।
আগের দিন দুই উইকেট হারিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা সাউথের দিনের শুরুটা মনমতো হয়নি আজও। দিনের চতুর্থ ওভারে ইনিংসে ইফরান হোসেনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে বিদায় নেন ওপেনার এনামুল হক। আগের দিনের ১৩ রানের সঙ্গে আর ৭ রান যোগ করা এনামুল ইফরানের গুড লেংথে পড়া বলটিকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে লিডিং-এজ হয়ে গালিতে ধরা পড়েন। এরপর চতুর্থ উইকেটে শামসুর রহমান ও নুরুল হাসান ৭২ রানের জুটিতে সাউথকে দৃঢ় অবস্থার দিকেই নিয়ে যাচ্ছিলেন, তবে দলীয় ১১৪ রানে শুভাগত হোমের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে শামসুর ফিরতেই ইনিংস ঘোষণা করে দেয় সাউথ জোন।
১২১ রানের বড় লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে সাইফ হাসান প্রথম ইনিংসের মতো আবারও ১ রানে ফিরে গিয়ে দলের উপর চাপ বাড়ান। তবে সে চাপ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি তিন নম্বরে নামা শান্তর বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে। তৃতীয় উইকেটে রকিবুল হাসানের সঙ্গে ১১১ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন তিনি। ১২ চার এবং ৪ ছয়ে ১৫৩ বলে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে সপ্তম সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। নাসুম আহমেদের বলে এলবিডব্লিউর হওয়ার আগে রকিবুল করেছেন ৩৯ রান।
আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মার্শাল আইয়ুব আজ নিজের ইনিংস খুব বড় করতে পারেননি। স্পিনার নাসুমের বলেই স্টাম্পড হন মাত্র ১১ রানে । শেষবেলায় শুভাগত ও মেহেদি হাসান মিরাজকেও হারিয়ে ফেলেছে সেন্ট্রাল। তবে লিডটা তাদেরকে নিয়ে গেছে দারুণ এক পজিশনেই। সেন্ট্রালের হয়ে ১২২ রান করে ক্রিজে আছেন শান্ত, তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন কোনো রান না করা জাবিদ হোসেন।