• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    বার্নলিকে ৫ গোল দিয়ে লিভারপুলের অপেক্ষা আরও বাড়াল সিটি

    বার্নলিকে ৫ গোল দিয়ে লিভারপুলের অপেক্ষা আরও বাড়াল সিটি    

    ফুল টাইম

    ম্যানচেস্টার সিটি ৫ - ০ বার্নলি


    শিরোপার জন্য লিভারপুলের অপেক্ষা আরেকটু বাড়িয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। আর্সেনালকে হারানোর পর এবার ঘরের মাঠে বার্নলিকে পাত্তাই দেয়নি সিটিজেনরা। তাই বৃহস্পতিবার ক্রিস্টাল প্যালেসের মাঠে জিতলেও লিভারপুলের শিরোপা নিশ্চিত হচ্ছে না।

    ইতিহাদ স্টেডিয়ামে আর্সেনালের বিপক্ষে জয়ের নায়ক ডি ব্রুইনকে প্রথম একাদশে রাখেননি পেপ গার্দিওলা, ছিলেন না স্টার্লিংও। এসব অবশ্য বার্নলির বিপক্ষে মোটেই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। ম্যাচের প্রথম বাঁশি থেকেই চড়াও ছিল সিটি। বল দখলে ঢের এগিয়ে থাকলেও প্রথম ২০ মিনিট অবশ্য তেমন সুযোগ তৈরি করা হয়নি সার্জিও আগুয়েরোদের। তবে এরপরই অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে স্বাগতিক ম্যানচেস্টার সিটি, ২২ মিনিটে ছোট কর্নার থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান সিটির তরুণ সেনসেশন ফিল ফোডেন। তার বাঁ পায়ের দুর্দান্ত শট এরপর অপ্রস্তুত বার্নলি রক্ষণ এবং গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে জাল কাঁপিয়ে দেয়।


    এরপর প্রথমার্ধের বাকিটা সময় সফরকারীদের একেবারে চেপে ধরে সিটি। ফলস্বরূপ অর্ধের একেবারে শেষদিকে আরও দুইবার বার্নলির জালে বল পাঠাতে সক্ষম হয় তারা। ৪৩ মিনিটে রক্ষণ থেকে ফার্নান্দিনহো উড়ন্ত লং পাস বাড়ান ডান প্রান্তে দাগের পাশ ধরে এগুতে থাকা রিয়াদ মাহরেজের দিকে।

    দুয়েক মৌসুম আগেও প্রিমিয়ার লিগে বার্নলির রক্ষণের নামডাক থাকলেও তা কতটা ভোঁতা হয়েছে তার প্রমাণ হিসেবে মাহরেজের গোলটিকেই ধরা যায়। দারুণ দক্ষতায় বল নামিয়ে দুই বার্নলি ডিফেন্ডারকে রীতিমত নাচিয়ে একক প্রচেষ্টায় বক্সের ভেতর ঢুঁকে যান মাহরেজ। এরপর সোজা ডান পায়ের শটে বার্নলি গোলরক্ষক নিক পোপকে পরাস্ত করেন তিনি।

    তবে প্রথমার্ধে বার্নলির দুর্ভাগ্য সেখানেই শেষ হয়নি। তৃতীয় গোলটি হজম করতে হয়েছে ভিএআরের সৌজন্যে। বক্সের ভেতর আগুয়েরোর পায়ে বার্নলি ডিফেন্ডার বেন মি-র পাড়া দেওয়ার বিষয়টি মাঠের রেফারির দৃষ্টি এড়িয়ে গেলেও ভিএআরের চোখে ধরে পড়ে যায় সেই চ্যালেঞ্জ। রিভিউর পর অর্ধের যোগ করা সময়ে পেনাল্টি পেয়ে যায় সিটি। সেখান থেকে গোল করে ম্যাচ থেকে বার্নলিকে একরকম ছিটকেই দেন মাহরেজ। তবে মি-র সেই চ্যালেঞ্জ থেকে সিটির গোল আরেকটি বাড়লেও চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন আগুয়েরো। চোট কতটা গভীর সেটি নিয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।


    দ্বিতীয়ার্ধেও একই ধারায় চলতে থাকে খেলা। ম্যাচের ৫১ মিনিটের মাথায় চতুর্থ গোল পেয়ে যায় সিটি। আবারও ছোট কর্নার থেকে শুরু হয় আক্রমণ। এরপর দুই সিলভার সংযোগে আবারও কাঁপে বার্নলির গোল। ছোট কর্নার থেকে ফোডেন ঘুরে বল আসে বক্সের ডান দিকে থাকা বার্নার্ডো সিলভার কাছে। সেখান থেকে তার কাটব্যাকে পা ছুঁইয়ে গোল করেন ডেভিড সিলভা। 

    আর ম্যাচের যখন আরও আধঘণ্টা বাকি, তখন ডি ব্রুইনকে জোড়া গোল করা মাহরেজের বদলি হিসেবে নামান গার্দিওলা। মাঠে নামার মিনিট তিনেকের মাঝেই ম্যাচে সিটির পঞ্চম গোলের মুভমেন্ট শুরু করেন তিনি। মধ্যমাঠ থেকে বল পায়ে দারুণ দৌড়ে বক্সের কাছাকাছি চলে আসেন, এরপর বক্সের ডান দিকে বার্নার্ডো সিলভার দিকে বল বাড়ান তিনি। সিলভা থেকে গ্যাব্রিয়েল জেসুস হয়ে বল চলে যায় বাম প্রান্তে থাকা ফোডেনের দিকে। সেখান থেকে দুর্দান্ত শটে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো বার্নলি গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।

    ম্যানচেস্টার সিটির একচেটিয়া আধিপত্যের কারণে খেলায় উত্তেজনা খুব একটা ছিল না। তবে এই ম্যাচে মাঠের বাইরের একটি বিষয় কিছুটা উত্তেজনা ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ পরই ইতিহাদ স্টেডিয়ামের ওপর দিয়ে একটি ব্যানার উড়ে যায়, যাতে লেখা ছিল, ‘হোয়াইট লাইভস ম্যাটার বার্নলি’। বার্নলির একদল কট্টর সমর্থক এই কাজটি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


    বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সাড়া বিশ্বে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে প্রিমিয়ার লিগ ক্লাবগুলো যখন ম্যাচের আগে হাঁটু গেঁড়ে নিয়মিত প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তখনই এমন বর্ণবাদী ঘটনা ঘটল। ম্যাচের মাঝ বিরতিতে বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বার্নলি। বিবৃতিতে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে ক্লাবটি, একইসঙ্গে দোষীদের খুঁজে বের করে আজীবন নিষিদ্ধ করার ঘোষণাও দিয়েছে তারা। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়াতেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে বার্নলি।