• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    লিডসকে নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফিরছেন মার্সেলো বিয়েলসা

    লিডসকে নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফিরছেন মার্সেলো বিয়েলসা    

    ট্র্যাকস্যুট, পায়ে স্নিকার, চোখে চমশা পরা পাগলাটে এক লোক ডাগআউটে হাঁটু গেঁড়ে বসে আছেন। এই কয়েকটি উপমা দিলেই চোখের সামনে সবার আগে ভেসে ওঠার কথা আর্জেন্টাইন এক লোকের কথা। পেপ গার্দিওলা, ডিয়েগো সিমিওনে, মাউরিসিও পচেত্তিনো গুরু মানেন তাকে। অর্জনের দিক দিয়ে অবশ্য তাদের কারও ধারে কাছেও যেতে পারেননি মার্সেলো বিয়েলসা। কিন্তু কোচ হিসেবে ফুটবলে বিপ্লব ঘটাতে পেরেছেন যে গুটিকয়েকজন তাদের তালিকায় বিয়েলসার নাম থাকে ওপরের দিকেই। সেই বিয়েলসা এবার ফিরছেন প্রিমিয়ার লিগে। ১৬ বছর পর চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে প্রিমিয়ার লিগে প্রমোশন নিশ্চিত হয়ে গেছে লিডসের, সেটাও এসেছে বিয়েলসার হাত ধরে।

    ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয়স্তরের দল লিডসের কোচ হয়ে ইংল্যান্ডে প্রথমবার কোচ হিসেবে এসেছিলেন বিয়েলসা। প্রথম মৌসুমেই প্রায় প্রমোশন পাইয়ে দিয়েছিলেন তিনি লিডসকে। কিন্তু লিগের শেষদিকে খেই হারিয়ে পরে তৃতীয় হয়ে শেষ করেছিল লিডস। পরে প্লে-অফ থেকে আর প্রিমিয়ার লিগে ওঠা হয়নি তাদের।


    এই মৌসুমেও শুরু থেকে পয়েন্টে টেবিলে এক বা দুইয়ে আনাগোণা ছিল বিয়েলসার দলের। এবার আর পথ হারায়নি তারা। লিগের লিডসের বাকি আর দুই ম্যাচ, শীর্ষস্থানে তারা আছে ৫ পয়েন্টের লিড। চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন হয়েই শিরোপা উঁচিয়ে ধরার সুযোগ আছে বিয়েলসার। তবে এর আগেই ওয়েস্টব্রম হাডার্সফিল্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে দেওয়ায় প্রমোশন নিশ্চিত হয়ে গেছে লিডসের। প্রিমিয়ার লিগ আর চ্যাম্পিয়নশিপে ভাগ হওয়ার পর প্রোমোশনের জন্য এতো লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয়নি কোনো দলকে। লিডসের প্রোমোশনে তাই নায়ক হয়ে গেছেন 'এল লোকো'ই। স্প্যানিশ শব্দ এল লোকোর অর্থও 'পাগলা'। নিজের স্বভাব-চরিত্রের কারণেই ওই ডাকনামটা জুটেছিল আর্জেন্টাইনের সঙ্গে।

    নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করা বিয়েলসা ২০০২ বিশ্বকাপে ছিলেন আর্জেন্টিনার কোচ। ফেভারিট হয়েও সেবার গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছিল আর্জেন্টিনা। এরপর ২০০৪ সালে আর্জেন্টিনা প্রথমবারের মতো অলিম্পিকে সোনা জেতানোর পর সরে দাঁড়ান বিয়েলসা। ২০০৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত চিলির কোচ ছিলেন তিনি। চিলির উথানের অনেকটাই ছিল বিয়েলসার কৃতিত্ব।

    ইউরোপে বিয়েলসার প্রথম ক্লাব ছিল এস্পানিওল। সেটা অবশ্য ১৯৯৭ এর দিকে। চিলির চাকরি ছেড়ে অ্যাথলিট বিলবাওয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। এরপর ২০১৪-১৫ মৌসুম কাটান মার্শেইয়ের ডাগআউটে। ২০১৬ সালে লাৎসিওর কোচ হওয়ার দুই দিনের মাথায়েই ছাঁটাই হন বিয়েলসা। ইতালিতে তাই আর কাজ করা হয়নি তার। লিডসের আগে সবশেষ কাজ করেছিলেন ফ্রান্সের ক্লাব লিলের হয়ে।

    প্রিমিয়ার লিগে পেপ গার্দিওলা, ইউর্গেন ক্লপ, কার্লো আনচেলত্তি, হোসে মরিনহোর মতো রথী মহারথীর সঙ্গে আগামী মৌসুমে দেখা যাবে বিয়েলসাকেও। অবশ্য এর বিপরীত কিছুও ঘটতে পারে! উলটো পালটা কান্ড কীর্তি ঘটিয়ে বিনা নোটিশে ক্লাব ছাড়ার অভ্যাস তো বিয়েলসার জন্য পুরনোই।