• ক্রিকেটে ফেরা
  • " />

     

    লক্ষ্য ছাড়া অনুশীলনের চ্যালেঞ্জ দেখছেন ডমিঙ্গো, সঙ্গে স্কিল-টেকনিক নিয়ে কাজ করার সুযোগও

    লক্ষ্য ছাড়া অনুশীলনের চ্যালেঞ্জ দেখছেন ডমিঙ্গো, সঙ্গে স্কিল-টেকনিক নিয়ে কাজ করার সুযোগও    

    অদ্ভুত সময়। যা কিছু নিয়ম, যা কিছু চিরায়ত বলে ধরে নেওয়া, যে সময়ে সেসবের অনেক কিছুই বদলে যায়। ক্রিকেট দলের অনুশীলনের ধারাও যে বদলে যাবে, তা আর বিস্ময়ের কি! বাংলাদেশ জাতীয় দল অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে, ক্যাম্পের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে, শুরু হয়েছে প্রস্তুতি ম্যাচ। তবে সামনে কী, নিশ্চিত নয় সেটি। কীসের লক্ষ্যে অনুশীলন, সে ফোকাসটা ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। এসব মানছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তবে এর মাঝে ক্রিকেটারদের স্কিল নিয়ে কাজ করার সুযোগটাও দেখছেন তিনি। 

    শ্রীলঙ্কা সফরকে সামনে রেখে বায়ো-সিকিউর বলয়ের মাঝে ক্যাম্প শুরু হয়েছিল জাতীয় দলের, ডাকা হয়েছিল ২৭ জন ক্রিকেটারকে। সে সফর স্থগিত হয়ে গেলেও ক্যাম্প চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। ১৯৯ দিন পর প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ম্যাচেও নেমেছেন ক্রিকেটাররা, মিরপুরে শুক্রবার দুই দিনের আন্তঃস্কোয়াড অনুশীলন ম্যাচ খেলছেন তারা। তবে সে অনুশীলন ম্যাচের পর কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ-- সেটি তো এখনও জানা নেই। তবে শ্রীলঙ্কা সফর স্থগিত করা নিয়ে বিসিবির সিদ্ধান্তের তার সমর্থন আছে, এমন বলেছেন জাতীয় দলের হেড কোচ।

    “আমার মনে হয় এই চ্যালেঞ্জটা থাকবেই”, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়া অনুশীলনে নিজেদের উজ্জীবিত করার প্রশ্নে বলেছেন ডমিঙ্গো, “এ কারণেই অনুশীলনে আমাদের উদ্ভাবনী হতে হবে। আমাদের এখন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছে। কিছু ম্যাচ খেলার চেষ্টা করছি, কারণ নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া বারবার একই জিনিস করে যাওয়াটা খুবই চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার।” 
     


    “শুধুই অনুশীলনের জন্য অনুশীলন করার কোনো মানে হয় না। একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য তো থাকতে হবে। ব্যাপারটার ফোকাস ঠিক থাকতে হবে, পেশাদার হতে হবে, একটা নির্দিষ্ট দিক দিয়ে হতে হবে। শুধু কয়েকটা নিয়মিত ব্যাপার করলাম, লোকজনকে খুশি রাখলাম, মিডিয়াকে দেখালাম যে আমরা অনুশীলন করলাম (তা তো নয়)। অনুশীলন হতে হবে নিজেদের আরও ভাল করতে, আবার ক্রিকেটারদের বিরতিও দিতে হবে, যাতে তারা তরতাজা থাকে, ম্যাচে যাতে আরও কঠোর পরিশ্রম করে, সেটার জন্য উজ্জীবিত করতে হবে। তাদের জীবন, চাওয়া-পাওয়া, এসব ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে আমাদের।”

    অনুশীলনে উদ্ভাবনী হওয়ার ব্যাপারেই ক্রিকেটারদের স্কিলে দিকে মনযোগ দিয়েছেন তারা, “হয়তো আমরা দুই-একটা টেকনিক্যাল পরিবর্তন আনতে পারি, কারণ টানা ম্যাচের সময় এসবের সময় থাকে না। শীঘ্রই ম্যাচ নেই, এমন পরিস্থিতির দুই একটা সুবিধাও আছে। আমরা ক্রিকেটারদের টেকনিকে প্রভাব রাখতে পারি। অবশ্য এরপরও আমরা একটা লক্ষ্য নিয়ে অনুশীলন করতে চাই।” 

    টেকনিকের পরিবর্তনের দুই-একটা উদাহরণও দিয়েছেন তিনি, “আমরা সাদমানের স্ট্যান্স একটু বদলাতে চাচ্ছি। তার ব্যাটসুইংটা। সে স্ট্যান্সে একটু সটান হয়ে দাঁড়াতো। তার ব্যাটটা একটু নিচে নামানোর চেষ্টা করছি, যাতে করে হিটিংয়ের সময় বাড়তি একটু বল পায়। এসব পরিবর্তন কিন্তু ম্যাচ থাকলে কঠিন হয়ে যায়। কারণ এসব পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সপ্তাহখানেক, এমনকি মাসখানেকও লেগে যায়। 

    “ওটিস (গিবসন) ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে ভেতরের দিকে বল ঢোকানো নিয়ে মোস্তাফিজের সঙ্গে কাজ করছে। আশা করছি আগামীকাল (শনিবার) এটা আমরা দেখতে পাব, সে নতুন বলে কাজ করলে। (আবার) (নাজমুল হোসেন) শান্ত যেভাবে স্পিন খেলে, তার মাথা ঝুঁকে যায়। আমরা তারা মাথা যাতে আরেকটু ওপরে থাকে, সেই চেষ্টা করছি।” 

    তবে সবকিছুর ওপর ম্যাচ খেলার ওপরে কিছু দেখছেন না ডমিঙ্গো, “ম্যাচ খেলার বিকল্প নেই কোনো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার আগে যতো বেশি সম্ভব ম্যাচ খেলতে হবে। সব দলেরই একই অবস্থা হবে। হয়তো সবাই নিজেদেরকে খুঁজে ফিরবে, ফিল্ডিং নিয়ে ভুগবে। ইংল্যান্ড একটু খেলেছে, তাদের জন্য সেটা একটা সুবিধা। আবার দক্ষিণ আফ্রিকা আট মাস ধরে খেলেনি। অন্যরা হয়তো একই জায়গা থেকেই শুরু করবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার আগে শীর্ষ পর্যায়ের ম্যাচ খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য, সেসবের সময় বের করতে হবে তাই।” 

    বিসিবির দেওয়া সূচি অনুযায়ী, ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ দফা অনুশীলন চলবে, যার মাঝে তিনটি ম্যাচ খেলার কথা আছে। শীঘ্রই ঘরোয়া ক্রিকেট শুরুর কথাও বলেছে বিসিবি।