• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব: কোন গ্রুপে কারা এগিয়ে?

    চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব: কোন গ্রুপে কারা এগিয়ে?    

    খুব বেশিদিন হয়নি বায়ার্নের হাতে গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা উঠেছে। এই মৌসুমের গ্রুপ পর্বও শুরু হয়ে যাচ্ছে আজ। চ্যাম্পিয়নস লিগ নিয়ে কিছু অনুমান করাও কঠিন। গত মৌসুমেই যেমন শেষ চারে স্পেন, ইংল্যান্ড বা ইতালির কোনো ক্লাবই ছিল না। দুই জার্মান আর দুই ফ্রেঞ্চ ক্লাব খেলেছিল সেমিতে। এবার শেষ পর্যন্ত কার হাতে শিরোপা উঠবে সেটা অনুমান করা কঠিন। তার আগে কোন গ্রুপ থেকে কাদের ওঠার সম্ভাবনা বেশি সেটা অনুমান করা যেতে পারে।

     

    গ্রুপ এ

    বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন আছে এই গ্রুপে, আছে গত বার লিভারপুলকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা অ্যাটলেটিকো। আর অন্য দুই ক্লাব অস্ট্রিয়ার আরবি সালজবুর্গ ও রাশিয়ার লোকোমোটিভ মস্কো। স্বাভাবিকভাবে গ্রুপ পর্বে প্রথম দুই দলকেই এগিয়ে রাখবেন অনেকে। রেকর্ডও বলছে, বায়ারর ও অ্যাটলেটিকো এখন নিয়মিতই নকআউটে খেলছে। সালজবুর্গ গত মৌসুমে গ্রুপ পর্বে ১৬ গোল করলেও তুরুপের তাস আরলিং-হালান্ড এবার নেই। আর মস্কোও অ্যালেক্স মিরানচুককে আটালান্টায় বিক্রি করে কিছুটা খর্বশক্তির হয়েছে। গত মৌসুমেও তারা গ্রুপ পর্বে সবার নিচে ছিল।

    প্রেডিকশন

    ১ বায়ার্ন মিউনিখ ২ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ৩ সালজবুর্গ ৪ লোকোমোটিভ মস্কো

     

    গ্রুপ বি

    এই গ্রুপটা এক কথায় বেশ ‘ট্রিকি’। রিয়াল মাদ্রিদ আর ইন্টার মিলানকে এগিয়ে রাখলেও শাখতার দোনেৎস্ক আর বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখ নিজেদের দিনে অঘটন ঘটিয়ে দিতে পারে। রিয়াল চ্যাম্পিয়নস লিগের সবচেয়ে সফল দল, তবে গত মৌসুমে গ্রুপ পর্বে হোঁচট খেয়ে উঠে বিদায় নিয়েছে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে। ইন্টার অবশ্য গত মৌসুমে গ্রুপ পর্বের বাধা টপকাতে পারেনি, তবে নিজেদের শক্তিটা দেখিয়েছে ইউরোপা লিগে। সিরি আ তে অবশ্য তাদের সময়টা ভালো যাচ্ছে না, যেরকম যাচ্ছে না জার্মান ক্লাব মনশেনগ্লাডবাখেরও। একসময়ের চ্যাম্পিয়ন এই ক্লাব চার বছরের মধ্যে প্রথমবার খেলছে। প্রেসিং ফুটবল দিয়ে চমকে দিতে পারে তারাও।

    প্রেডিকশন

    ১ রিয়াল মাদ্রিদ ২ ইন্টার মিলান ৩ বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখ ৪ শাখতার

     

    গ্রুপ সি

    ম্যানচেস্টার সিটির গ্রুপ ভাগ্যটা অবশ্য বেশ ভালোই ছিল গত কয়েক বছরে, এবারও ব্যতিক্রম হয়নি তার। গ্রুপ সি তে খুব কঠিন প্রতিপক্ষ পায়নি তারা। পেপ গার্দিওলা এই শিরোপাটা এবার যে কোনো মূল্যে চাইবেন, সেজন্য গ্রুপ পর্বেও নিজের সেরা একাদশটা খেলানোর কথা। গ্রুপে আছে পোর্তো, পর্তুগিজ চ্যাম্পিয়নদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ রেকর্ড বেশ ভালোই। তবে ফাবিও সিলভা আর অ্যালেক্স টেলেসকে বিক্রি করে দেওয়ায় তাদের শক্তিটা কমে যাওয়ার কথা কিছুটা। সেই তুলনায় আন্দ্রে ভিলাস বোয়াসের মার্শেই চমকে দিতে পারে সবাইকে। গ্রুপের চতুর্থ দল গ্রিসের অলিম্পিয়াকস, তারা দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলে সেটা হবে চমকই।

    প্রেডিকশন

    ১ . ম্যান সিটি ২. মার্শেই ৩. পোর্তো ৪. অলিম্পিয়াকস

     

    গ্রুপ ডি

    ভার্জিল ভ্যান ডাইককে হারানো এবার লিভারপুলের জন্য অনেক বড় একটা ধাক্কা। গ্রুপ স্টেজেই প্রায় নিশ্চিতভাবেই থাকছেন না এই ডিফেন্ডার, সেটার জন্য মূল্য দিতে হতে পারে লিভারপুলকে। গ্রুপটা সহজ নয়, আটালান্টা গত মৌসুমেই দেখিয়েছে তারা কী করতে পারে। আক্রমণাত্মক আর গতিময় ফুটবলে এবারও চমকে দিতে পারে তারা। হাকিম জিয়েখ, ডনি ভ্যান ডি বিক আর সার্জিও ডেস্টকে হারিয়ে আয়াক্সের শক্তি কমলেও ডাচ চ্যাম্পিয়নরা সমীহ জাগানোর মতো দল। গ্রুপের ডেনিশ চ্যাম্পিয়ন চতুর্থ দল মিরশিল্যান কোনো জয় পেলেই অবশ্য সেটা চমক হবে।  

    প্রেডিকশন

    ১. আটালান্টা ২. লিভারপুল ৩. আয়াক্স ৪. মিরশিল্যান

    গ্রুপ ই

    আপাতদৃষ্টিতে সবচেয়ে সহজ গ্রুপগুলোর একটি, তবে এই গ্রুপটাও হতে পারে ‘ট্রিকি’। এবারের দলবদলে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় চেলসি আছে, আর আছে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন সেভিয়া। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগে সেভিয়ার রেকর্ড সুবিধার নয়, এই মৌসুমে তারা হারিয়েছে বানেগা, রিকো আর রেগুলিয়নকে।  চেলসিও ডিফেন্সটা গোছাতে পারেনি ঠিক। অন্যদিকে ফ্রেঞ্চ লিগে রেনে শুরুটা করেছে দুর্দান্ত, অন্য দুই দলকে চমকে দিতে পারে। আর চতুর্থ দল রাশিয়ার ক্রাসনোডারের একমাত্র সুবিধা তাদের হোম গ্রাউন্ডে যেতে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে অন্য ক্লাবগুলোকে।

    প্রেডিকশন

    ১. চেলসি ২. রেনে ৩. সেভিয়া ৪. ক্রাসনোডার

     

    গ্রুপ এফ

    আরও একটি সহজ গ্রুপ, সম্ভবত সবচেয়ে সহজতম। ডর্টমুন্ড এখানে সবচেয়ে এগিয়ে থাকবে, এবার সাঞ্চোকে রেখে দেওয়ায় তাদের শক্তিও কমেনি। লাৎসিও আর রাশিয়ান চ্যাম্পিয়নস জেনিত সেন্ট পিটাসবার্গের মধ্যে দুই আর তিন নম্বর নিয়ে লড়াইটা জমজমাটই হওয়ার কথা। আর বেলজিয়ামের ক্লাব ব্রুশে বাকিদের তুলনায় পিছিয়ে থাকবে।

    প্রেডিকশন

    ১. ডর্টমুন্ড ২. জেনিত ৩. লাৎসিও ৪. ক্লাব ব্রুশ

     

    গ্রুপ জি

    চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে মেসি-রোনালদো দেখা হচ্ছে এবারই প্রথম। বার্সা আর জুভেন্টাসের অবশ্য এর আগেও দেখা হয়েছে গত পাঁচ বছরে, তবে মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথ তাতে যোগ করছে বাড়তি মাত্রা। এই গ্রুপের ফেবারিট এই দুই দলই। বাকি দুই দল ইউক্রেনের ডায়নামো কিয়েভ আর হাঙ্গেরির ফেরেংকভারোসের পরের রাউন্ডে যেতে হলে দুর্দান্তের চেয়েও বেশি কিছু করতে হবে।

     

    প্রেডিকশন

    ১. জুভেন্টাস ২. বার্সেলোনা ৩. কিয়েভ ৪. ফেরেংকভারোস

     

    গ্রুপ এইচ

    এবার সেই অর্থে গ্রুপ অব ডেথ নেই, কিন্তু এই গ্রুপটাই সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন। পিএসজি গত বারের ফাইনালিস্ট, এবারও শিরোপার বড় দাবিদার। ম্যান ইউনাইটেড কয়েক বছর ধরে নিয়মিত নয় চ্যাম্পিয়নস লিগে, এবারও তাদের অবস্থা ছন্নছাড়া। তারপরও বড় দলের একটা ভার তো আছেই। লাইপজিগ গতবারের সেমিফাইনালিস্ট, নাগেলসমানের দল বুন্দেসলিগায় এখন পর্যন্ত শীর্ষে আছে। ইউনাইটেডের চেয়ে তাদের সম্ভাবনা হয়তো বেশি দেখবেন অনেকে। আর গ্রুপের চতুর্থ দল তুর্কি চ্যাম্পিয়ন ইস্তাম্বুলের জন্য বাকিদের কাছ থেকে পয়েন্ট পাওয়া অনেক কঠিন।

    প্রেডিকশন

    ১. পিএসজি ২. লাইপজিগ ৩. ম্যান ইউনাইটেড ৪. ইস্তাম্বুল