• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    এক হালি গোল দিয়ে অ্যাটলেটিকোকে গুঁড়িয়ে দিল বায়ার্ন

    এক হালি গোল দিয়ে অ্যাটলেটিকোকে গুঁড়িয়ে দিল বায়ার্ন    

    ফুলটাইম
    বায়ার্ন মিউনিখ
    ৪-০ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ


    এই বায়ার্ন মিউনিখকে কে হারাবে? পিএসজিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের কাটায় কাটায় দুই মাস পর নতুন মিশনে ঘরের মাঠে খেলতে নেমেছিল বায়ার্ন। প্রতিপক্ষ রক্ষোণের দিক দিয়ে ইউরোপের সবচেয়ে গোছানো দল। কিন্তু গত মৌসুমের বিধ্বংসী বায়ার্নের চেহারায় পালটায়নি একটুও। অ্যাটলেটিকোর রক্ষণও দাঁড়াতে পারল না ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের সামনে। অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় অসহায় আত্মসমর্পণ করে দুই অর্ধে দুইটি করে মোট ৪ গোল খেয়েছে ডিয়েগো সিমিওনের দল। আর সেই প্রশ্নটা উঠে গেল প্রথম ম্যাচের পরই, এই বায়ার্নকে হারাবে কে?


    দুই মাস আগে যার গোলে ফাইনাল জিতেছিল বায়ার্ন, সেই কিংসলে কোমানই নতুন মৌসুমে গোলের সূচনা করেছিলেন ম্যাচের ২৮ মিনিটে। এর আগ পর্যন্তও বায়ার্ন অ্যাটলেটিকোর রক্ষণে হানা দিয়ে যাচ্ছিল। নিকোলাস সুলে বল লাগিয়েছিলেন বারপোস্টে, রবার্ট লেভানডফস্কির দুর্দান্ত ভলিও লক্ষ্যও মিস করেছিল। সে হিসেবে প্রথম গোলের জন্য বায়ার্নের অপেক্ষাটা ছিল 'দীর্ঘ'।

    গোলটা কোমানের হলেও, তার রুপকার আসলে জশুয়া কিমিখ। আগেরদিন দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর এই ম্যাচে যার খেলা নিয়েই সংশয় ছিল। হোয়াও ফেলিক্সের কাছ থেকে মিডফিল্ডে বল ছিনিয়ে নিয়ে প্রথম কাজটা করেছিলেন কিমিখ। এরপর বক্সের ভেতর বাম পাশে উড়িয়ে মেরেছেন ইঞ্চি মাপা এক বল। কোমান দৌড়ে গিয়ে বাম পায়ে বল রিসিভ করে, ডান পায়ের আড়াআড়ি শটে দূরের পোস্টে বল জড়িয়েছেন সেখান থেকে। ওই এক গোলে কিমিখ বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন তিনি বহুমুখী গুণে গুণান্বিত এক মিডফিল্ডার।

    ওই গোলের পর আসলে অ্যাটলেটিকোকে আর প্রথমার্ধে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। অথচ ম্যাচের একেবারে শুরুতে দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিল অ্যাটলেটিকো রেনান লোদির ক্রস ধরে দূরের পোস্টে পা ছোঁয়াতে পারলে লুইস সুয়ারেজ হয়ত বায়ার্নকে ভড়কে দিতে পারতেন। শুরুর ওই একটি সুযোগ ছাড়া বিরতির আগ পর্যন্ত অ্যাটলেটিকো আর তেমন আক্রমণই সাজাতে পারেনি। উলটো অবস্থা বায়ার্নের। ইয়ান অবলাককে পুরোটা সময়ই ব্যস্ত রেখেছিল বায়ার্ন। বিরতির মিনিট চারেক আগে এবার কোমানের পাস থেকে লিওন গোরেতজকা ডান পায়ের জোরালো শটে বল জড়িয়ে দেন অবলাকের জালে। 

    দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা অবশ্য ভালোই করেছিল অ্যাটলেটিকো। সিমিওনের দলের কাছ থেকে সেটা অনুমিতও ছিল। কিন্তু ভাগ্যও সহায় হয়নি তাদের। বিরতির পর দুই মিনিটের মাথায় ফেলিক্স বায়ার্নের জালে বল জড়ালেও বাতিল হয়েছে সেই গোল। অফসাইডে থাকা সুয়ারেজ আটকে দিয়েছিলেন ম্যানুয়েল নয়্যারের দৃষ্টিসীমা। এর কিছুক্ষণ পর সেই ফেলিক্সই দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন ইয়ানিক কারাস্কোকে। বক্সের ভেতর ঢুকে ভালো জায়গা থেকেও  কারাস্কো তখন বল মেরেছেন গোলের বহু বাইরে দিয়ে।

    অ্যাটলেটিকো ম্যাচে ফেরার নিভু নিভু আলো দেখছিল তখনই কোরেন্টিন তোলিসোর দুর্দান্ত এক স্ট্রাইকে সব শেষ হয়ে যায় তাদের। ২৫ গজ দূর থেকে ডান পায়ের রকেট গতির শটে টপ কর্নারে বল জড়িয়ে অবলাককে রীতিমত হতভম্ভ করে দেন তোলিসো।  ৬৬ মিনিটে ওই গোলের ৬ মিনিট পর আবার ব্যবধান বাড়ান সেই কোমান। সে দফায় নিজের ঝলক পুরোপুরি দেখিয়েছেন ফ্রেঞ্চ উইঙ্গার। কোমান দৌড় শুরু করেছিলেন হাফলাইন থেকে। এরপর ডিফেন্ডার ফেলিপেকে বোকা বানিয়ে দারুণ এক টার্ন নিয়ে অবলাকের সামনে গিয়ে আবারও ডান পায়ে বল জড়িয়ে দেন তিনি।

    অ্যাটলেটিকো বিপক্ষে দলে ছিলেন না সার্জ গ্যানাব্রি। থিয়াগো আলাকান্তারাও ক্লাব ছেড়েছেন। রবার্ট লেভানডফস্কিও গোল পাননি। এমন রাতেও বায়ার্ন দিয়েছে ৪ গোল। এরপর ওই প্রশ্নটা ওঠাই তো স্বাভাবিক!  ইউরোপে এমন আধিপত্য তো খুব বেশি দল দেখাতে পারেনি।