• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    ইউসিএলে গোলের রাত : ইতালিতে জতার হ্যাটট্রিক, সালজবুর্গের ওপর রাগ ঝাড়ল বায়ার্ন

    ইউসিএলে গোলের রাত : ইতালিতে জতার হ্যাটট্রিক, সালজবুর্গের ওপর রাগ ঝাড়ল বায়ার্ন    

    চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল উৎসবের রাতে বড় জয় পেয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ এবং প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। আর ঘরের মাঠে গ্রিক ক্লাব অলিম্পিয়াকোসকে ধরাশায়ী করেছে পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি।

    জতার হ্যাটট্রিকে আটালান্টা উড়িয়ে দিল লিভারপুল
    (আটালান্টা ০-৫ লিভারপুল)

    রবার্তো ফিরমিনোর বদলে একাদশে এসেছিলেন। এসেই বাজিমাত করলেন দিয়গো জতা। লিভারপুলে আসার পর থেকেই দলটির ভয়ংকর আক্রমণভাগকে আরও শক্তিশালী করেছেন তিনি। সালাহ-মানেদের উপস্থিতিতেও আলাদাভাবে নজর কাড়ছেন প্রতি ম্যাচে। আটালান্টার বিপক্ষে ম্যাচের ১৬ মিনিটে অ্যালেক্সান্ডার-আর্নল্ডের থ্রু বল ধরে ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশে গোল করে শুরুতেই লিভারপুলকে ছন্দে তুলে দিয়েছিলেন জতা। ৩৩ এবং ৫৪ মিনিটে আরও দুই গোল করে লিভারপুলের হয়ে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পূরণ করেছেন তিনি।

    গত মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইউরোপে মোট তিনটি হ্যাটট্রিক করা হয়ে গেল জতার। দলবদলের মৌসুমে এবার খুব বেশি খরচ করবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল লিভারপুল, তবে শেষ পর্যন্ত করোনাকালে ৪০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে তাকে দলে টেনেছিল অলরেডরা। এরপর থেকেই প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। শেফিল্ড ইউনাইটেড, ওয়েস্টহামের বিপক্ষে টানা দুই লিগ ম্যাচে জয়সূচক গোল এসেছিল জতার পা থেকেই। গেল সপ্তাহে চ্যাম্পিয়নস লিগেও মিদজিলান্ডের বিপক্ষে ধুঁকতে থাকা লিভারপুলকে গোল করে পথ দেখিয়েছিলেন তিনি। আটালান্টা ম্যাচের পর লিভারপুলের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১০ ম্যাচে মাঠে নেমে ৭ গোল  করা হয়ে গেছে জতার।


    জতা বাদে লিভারপুলের বাকি দুইটি গোল করেছেন তার আক্রমণের দুই সতীর্থ মোহামেদ সালাহ ও সাদিও মানে। বিরতির পর ৫ মিনিটের ভেতর গোল করেছেন দুইজনই। তখনই ম্যাচে বড় জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল লিভারপুলের। ম্যাচ শেষে এটি হয়ে গেছে ইতালিতে লিভারপুলের সবচেয়ে বড় জয়। 

    লিভারপুলের দাপটের কাছে একেবারেই বিবর্ণ ছিল আটালান্টা। ইউরোপের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক দল হিসেবে ভালোই খ্যাতি ছিল ইতালির ক্লাবটির। গতবার এই প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালেও খেলেছিল তারা। কিন্তু লিভারপুলের কাছে পাত্তাই পায়নি আটালান্টা।

    গ্রুপের অন্য ম্যাচে সব বাধা জয় করে চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম জয় পেয়েছে আয়াক্স। ম্যাচের আগে দলের ১১ জন খেলোয়াড়ই ছিলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ১৭ জনের স্কোয়াড নিয়ে ডেনমার্কে খেলতে গিয়েছিলে আয়াক্স। শেষ পর্যন্ত মিদজিল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে নক আউট পর্বে যাওয়ার আশা টিকিয়ে রেখেছে তারা।

    সালজবুর্গের ওপর রাগ ঝাড়ল বায়ার্ন
    (সালজবুর্গ ২-৬ বায়ার্ন মিউনিখ)

    সালজবুর্গের বিপক্ষে ম্যাচটি এমনভাবে শুরু হবে সেটা হয়ত ভাবতেও পারেননি হানসি ফ্লিক। মাত্র চার মিনিটেই বক্সের ভেতর আনমার্কড মেরগিম বেরিশার গোলে পিছিয়ে পড়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। তবে এরপরই শুরু হয় বায়ার্ন ঝড়, ২১ মিনিটে পোলিশ গোলমেশিন রবার্ট লেভানডফস্কির গোল দিয়ে দিয়ে সমতায় ফেরে বায়ার্ন। এরপর ম্যাচ জুড়ে বায়ার্নের স্টিমরোলার সামলাতেই ব্যস্ত ছিল সালজবুর্গ। তবে বায়ার্ন ম্যাচে এগিয়ে গেছে ভাগ্যের জোরেই। ৪৪ মিনিটে সালজবুর্গের ক্রিস্টেনসনের আত্মঘাতী গোলে প্রথমবার লিড নেয় বাভারিয়ানরা।

    এরপর ৬৬ মিনিটে মাসায়া ওকুগায়ার গোলে আবারও সমতায় ফিরে বায়ার্নের মনে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভয় ধরিয়ে ছিল সালজবুর্গ। তবে এরপর নির্ধারিত সময়ের শেষ ১১ মিনিট এবং যোগ করা সময়ে গোলের পসরা সাজিয়ে সালবুর্গকে ধ্বংসস্তুপে ফেলে বায়ার্ন। ৭৯ মিনিটে জেরোম বোয়াটেং, ৮৩ মিনিটে লেরয় সানে, ৮৮ মিনিটে আবার লেভানডফস্কি এবং ৯২ মিনিটে লুকাস হার্নান্দেজের গোলে বড় জয় নিশ্চিত হয় বায়ার্নের।

    গত মৌসুমে গোল উৎসব করা বায়ার্ন এবার গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে করেছিল ৬ গোল, আর এই ম্যাচেই আরও ৬ গোল করে গ্রুপপর্বে এখন সবচেয়ে বেশি গোল তাদেরই। এতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই।

    ফিরেই গোল করলেন জেসুস
    (ম্যান সিটি ৩-০ অলিম্পিয়াকোস)

    স্ট্রাইকার সঙ্কটের হাত থেকে রেহাই মিলল পেপ গার্দিওলার। চোট থেকে ফিরে ম্যাচের ৬৯ মিনিটে বদলি হিসেবে প্রথমবারের মতো মাঠে নেমেছিলেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। এরপর ৮১ মিনিটে গোলও করেছেন তিনি। অলিম্পিয়াকোসের সঙ্গে জয়ের রাতে আপাতত এটিই পেপ গার্দিওলার দলের জন্য সবচেয়ে স্বস্তির খবর।  

    গত মৌসুম থেকেই পেপ গার্দিওলার ‘রোবোটিক’ ম্যান সিটির জৌলুস কমে আসছিল। সে কারণেই লিভারপুলের কাছে লিগও হারাতে হয়েছিল। এবারের মৌসুমের শুরুটাও নড়বড়ে ধাঁচেই করেছে ম্যান সিটি। তবে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে তারা। ফলাফল বের করে আনার মতো পারফরম্যান্স এখন নিয়মিত করে যাচ্ছে গার্দিওলার দল।

    চ্যাম্পিয়নস লিগে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে ম্যাচের সেই ‘ক্লিনিক্যাল’ সিটির দেখা মিলেছে। আগের ম্যাচের মতো এবারও ফেরান তোরেসকে মূল ফরোয়ার্ডের পজিশনে নামিয়েছিলেন গার্দিওলা। তিনিই আরেকবার  সিটিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। ম্যাচের ১২ মিনিটেই ফেরান তোরেসের গোলে এগিয়ে যায় তারা। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরিভাবে সিটির হাতে থাকলেও দ্বিতীয় গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেকটা সময়।

    জেসুস কঠিন আঙ্গেল থেকে জোরালো শটে গোল করে ম্যাচের ৯ মিনিট বাকি থাকতে সিটির জয় নিশ্চিত করেন। যোগ করা সময়ে আরেক বদলি হোয়াও ক্যান্সেলো বাম পায়ের শটে ব্যবধান আরও একবার বাড়িয়ে নেন।