• বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ২০২০
  • " />

     

    শান্তর ফিফটিতে খুলনার বিপক্ষে অনায়াস জয় রাজশাহীর

    শান্তর ফিফটিতে খুলনার বিপক্ষে অনায়াস জয় রাজশাহীর    

    জেমকন খুলনা ১৪৬/৬, ২০ ওভার (আরিফুল ৪১*, শামিম ৩৫, এনামুল ২৬, শহিদুল ১৭*, মুগ্ধ ২/৪৪, সানি ১/১৭, মাহাদি ১/২৩)
    মিনিস্টার রাজশাহী ১৪৭/৪, ১৭.২ ওভার (শান্ত ৫৫, রনি ২৬, আশরাফুল ২৫*, ফজলে ২৪, রিশাদ ২/৩৪, আল-আমিন ১/১৩) 
    রাজশাহী ৬ উইকেটে জয়ী 


    দুই দলই এসেছিল প্রথম ম্যাচে দারুণ জয় নিয়ে। তবে জেমকন খুলনা ও মিনিস্টার রাজশাহীর লড়াইটা শেষ পর্যন্ত হয়ে গেল একপেশেই। বোলারদের সমন্বিত পারফরম্যান্সে খুলনাকে ১৪৬ রানে আটকে দেওয়ার পর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ৩৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংসে ভর করে শেষ পর্যন্ত সেটি সহজেই পেরিয়ে গেছে রাজশাহী। এর আগে আরিফুল হকের অপরাজিত ৩১ বলে ৪১, শামিম হোসেনের ২৫ বলে ৩৫ এর সঙ্গে শেষদিকে শহিদুল ইসলামের ১২ বলে ১৭ রানের ক্যামিওতে ভর করে তখন পর্যন্ত মোটামুটি লড়াই করার মতো স্কোর পেয়েছিল জেমকন খুলনা। টসে জিতে ব্যাটিং নিলেও শুরু থেকেই চাপে ছিল খুলনা, মাঝের ওভারগুলিতে রীতিমতো ভুগেছেন তাদের ব্যাটসম্যানরা। তবে শেষদিকে সেটি একটু সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন আরিফুল-শামিমরা। এবাদতের পর রাজশাহীদ দুই স্পিনার মাহাদি ও আরাফাত সানি করেছেন দারুণ আঁটসাঁট বোলিং, দুজনই পেয়েছেন উইকেটও। 

    টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া খুলনা প্রথম উইকেট হারিয়েছিল ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে, নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত করেছিলেন আগেরদিনের জয়ের নায়ক মাহাদি, তার টসড-আপ ডেলিভারিতে স্লগ করতে গিয়ে টপ-এজড ইমরুল কায়েস। পাওয়ারপ্লেতে খুলনা হারিয়েছে সাকিব আল হাসানকেও, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েছেন তিনি। সে ওভারেই সাকিব মেরেছিলেন দুই চার। পাওয়ারপ্লেতে খুলনা তুলেছিল ৩৬। 

    পরের ৬ ওভারে খুলনার সংগ্রাম বলতে গেলে বেড়েছে আরও। এই সময়ে উঠেছে ২৭ রান, খুলনা হারিয়েছে আরও ৩ উইকেট, টানা ৩ ওভারে। ডাবলস চুরি করতে গিয়ে রান-আউট হয়েছেন এনামুল হক বিজয়, মুগ্ধকে জোরের ওপর খেলতে গিয়ে এজড জহুরুল, আরাফাত সানিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। 

    ১৩তম ওভারে মুকিদুলকে ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে পুল করে ছয় মেরে খুলনার শেকলটা ভাঙার চেষ্টা করেছেন শামিম, পরের বলে এক্সট্রা কাভার দিয়ে মেরেছেন চার। তাকে দেখেই কিনা জেগে উঠলেন আরিফুলও, মাহাদিকে মারলেন ছয়। পরের কয়েক বল চুপচাপ থাকলেও শামিম এক ওভার পর এবাদতকে মারলেন চার-ছয়, আউটও হলেন সে ওভারেই। উইকেটকিপারের ওপর দিয়ে খেলতে গিয়ে সেখানেই ধরা পড়েছেন। এরপর আগেরদিনের জয়ের নায়ক আরিফুল, সঙ্গে শহিদুলের অবিচ্ছিন্ন ৪৬ রানের জুটি, যেখানে শেষ ২ ওভারে উঠেছে ৩০ রান। ১৯তম ওভারে মুগ্ধ করেছেন প্রথম তিনটি বলই ওয়াইড, সে ওভারে আরিফুল তাকে মেরেছেন দুটি ছয়। আর শেষ ওভারের শুরুটা ভাল করলেও শেষ দুই বলে শহিদুলের কাছে টানা দুই চার খেয়েছেন রেজা। 

    এরপর ওপেনিংয়েই সাকিবকে বোলিংয়ে এনেছিলেন মাহমুদউল্লাহ, সে ওভারে বেশ আঁটসাঁটই করেছিলেন তিনি। শান্ত আক্রমণ শুরু করলেন পরের ওভারে শফিউলকে ফ্লিক করে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছয় মেরে। এরপর আল-আমিনের বলে একবার বটম-এজড হয়েছিলেন, তবে সেটিও হয়েছে চার। এরপর ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে মেরেছেন আরেকটি ছয়। 

    আনিসুল ইসলাম ইমন এদিন শুরুই করতে পারলেন না, আল-আমিনকে পরপর দুবার তুলে মারতে গিয়ে মিসহিট হলো, দ্বিতীয়বার ধরা পড়লেন মিড-অফে। তবে সে উইকেটও ব্যাকফুটে ঠেলতে পারলো না রাজশাহীকে, শান্তকে ৪৭ রানের জুটিতে ভাল সঙ্গ দিলেন রনি তালুকদার। 

    রিশাদের বাইরের বলে টেনে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলার আগে রনি করেছেন ২০ বলে ২৬। এক ওভার পর ফিরেছেন শান্ত, তবে তার আগেই ফিফটি হয়ে গেছে তার। রিশাদকে ছয় মেরে ৩২ বলে মাইলফলকে গেছেন রাজশাহী অধিনায়ক, এরপর আরেকটি চার, তবে ঠিক পরের বলেই ব্যাকফুটে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন তিনি। ইনিংসে ৬টি চারের সঙ্গে তিনি মেরেছেন ৩টি ছয়। 

    এ ম্যাচে প্রথম খেলতে নামা রিশাদ ২ উইকেট নিয়েছেন, তবে রানও দিয়েছেন। তার তৃতীয় ওভারে দুটি ছয় মেরেছেন ফজলে রাব্বি, দুটিই কাউ কর্নার দিয়ে। অতি-আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে শহিদুলের স্লোয়ারে বোল্ড হয়েছেন তিনি, ১৬ বলে তিনি করেছেন ২৪। 

    একাধিকবার প্রান্ত পরিবর্তন করে শেষ ওভার করতে আসা সাকিবের বলে দুই চার মেরেছেন এতক্ষণ মোটামুটি চুপচাপ থাকা আশরাফুল। মাঝে শহিদুলকে সোহানের এক ছয়ের পর শামিমকে মারা আশরাফুলের লেট-কাটের চারে জয় নিশ্চিত হয়েছে রাজশাহীর।