• বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ২০২০
  • " />

     

    জাকিরের ৪২ বলে ৬৩, খুলনার বোলারদের চাপে হাঁসফাঁস বরিশালের

    জাকিরের ৪২ বলে ৬৩, খুলনার বোলারদের চাপে হাঁসফাঁস বরিশালের    

    জেমকন খুলনা ১৭৩/৬, ২০ ওভার (জাকির ৬৩, ইমরুল ৩৭, মাহমুদউল্লাহ ২৪, রাব্বি ৩/৩৩, তাসকিন ২/৪৩)
    ফরচুন বরিশাল ১২৫ অল-আউট, ১৯.৫ ওভার (তামিম ৩২, হৃদয় ৩৩, শুভাগত ২/১৮, শহিদুল ২/১৭, হাসান ২/১৮) 
    খুলনা ৪৮ রানে জয়ী 


    টুর্নামেন্টে ৪ রাউন্ড পেরিয়ে যাওয়ার পর প্রথমবার সুযোগ পাওয়া জাকির হাসানের ৪২ বলে ৬৩ রানের পর নাটকীয় শেষ ২ ওভারে-- যে দুটিতে এসেছে ৩৩ রান-- ১৭৩ পর্যন্ত যাওয়া জেমকন খুলনার বোলারদের কাছে হাঁসফাঁস অবস্থা উঠে যাওয়া বরিশাল হেরেছে বড় ব্যবধানে। তামিম ইকবাল ভাল একটা শুরু এনে দিলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি, এরপর তৌহিদ হৃদয় ছাড়া বরিশালকে সে অর্থে আশাও জোগাতে পারেননি কেউ। খুলনা জিতেছে নিজেদের তৃতীয় ও টানা দ্বিতীয় ম্যাচ, বরিশালের প্রাপ্তি ৫ ম্যাচে ১ জয়ই।

    প্রথম ইনিংসের শেষদিকে নাটকীয় দুই ওভারে মোমেন্টাম হারিয়ে ফেলেছিল বরিশাল, ভাল একটা ভিতের পর খুলনার আগেরদিনের জয়ের নায়ক শুভাগত হোমের ৪ বলের ব্যবধানে দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও তামিমকে হারিয়ে লড়াই থেকে মোটামুটি ছিটকে গেছে তারা এরপর। আফিফ হোসেনের রান-আউট, খুলনার আঁটসাঁট বোলিং ফিরতে দেয়নি তাদের। শুভাগতর মতো ২টি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান ও শহিদুল, ১টি করে নিয়েছেন সাকিব ও আল-আমিন। 

    শুক্রবার এগিয়ে আসা ম্যাচে শেষ ২ ওভারের নাটকের আগে খুলনা ভাল একটা ভিতই পেয়েছিল জাকির-ইমরুলের ২য় উইকেটে ৯০ রানের জুটিতে। ওপেনিংয়ে এদিন বদল এনেছিল খুলনা, জহুরুল ইসলাম অবশ্য ভুগেছেন ১০ বলে ২ রান করে তাসকিনের বলে ইনসাইড-এজে বোল্ড হওয়ার আগে। তবে জাকির ছিলেন দারুণ, ১৫০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করলেও তাকে ছয় মারতে হয়নি কোনও। 

    দারুণ সব ড্রাইভের সঙ্গে করেছেন রিভার্স সুইপও, ৩৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করেছিলেন রাহিকে চার মেরে। ১৬তম ওভারে তাসকিনের জায়গা থেকে দূরের স্লোয়ার ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে কাভারে ক্যাচ দেওয়ার আগে এই বাঁহাতি মেরেছেন ১০টি চার। জাকিরের আগে ফিরেছিলেন ইমরুল, মিড-অফে তাসকিনের বলে ক্যাচ দিয়ে। জাকিরের সঙ্গে জুটিতে তাকে দারুণ সমর্থন দিয়ে গেছেন, ৩৪ বলে ৩৭ রান করে। 

    অবশ্য এ দুজনের এনে দেওয়া ভিতে উড়ানটা শীঘ্রই দিতে পারেনি খুলনা। চারে আসা সাকিব ২ চারের পর তানভিরের বলে ক্যাচ দিয়েছেন লং-অনে, জাকির আউট হওয়ার পর ১৬ বলে উঠেছিল ২৩ রান। তবে এরপরের ২ ওভার খুলনার জন্য হয়ে এসেছে আশির্বাদ হয়ে, ২ উইকেট হারানোর পরও। 

    ১৯তম ওভারে তিনটি ওয়াইড থেকে ৭ রান দিয়েছিলেন তাসকিন, যার একটি ওয়াইড ছিল ক্রিজের বাইরেই, সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ মেরেছিলেন আরও দুই চার। সে ওভারে ১৯ রান আসার পর শেষ ওভারের প্রথম বল কামরুল ইসলাম রাব্বি করলেন ওয়াইড, বীভৎস কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিল যা। পরের বলে শামিম হোসেন সহজ একটা জীবন পেলেন, এরপরের বলে খেললেন বড় শট। মিডউইকেটে সেটি নেওয়ার পর শেষ মুহুর্তে মিরাজ ওপরে ছুঁড়ে বাউন্ডারির ওপার থেকে এপারে এসে ক্যাচ নিলেন, তবে তার পা ছিল সীমানার খুব কাছেই। শেষ পর্যন্ত শামিম আউট হয়েছেন মূলত অন-ফিল্ডের সফট সিগন্যালের কারণেই, যেটি পক্ষে গেছে বরিশালের। পরের বলে ইনসাইড-এজে বোল্ড মাহমুদউল্লাহ, রাব্বি ঘুরে দাঁড়ালেন। কিন্তু শুভাগত হ্যাটট্রিক বলে মারলেন চার, এরপর সিঙ্গেল পেরিয়ে শেষ বলে আরিফুল ছয়, যেটি ছিল লো-ফুলটস। 

    ব্যাটিংয়ে না এলেও বোলিংয়ে এদিন ঠিকই ওপেন করেছেন সাকিব, প্রথম ওভারে দিয়েছিলেন ২ রান। শুভাগতর পরের ওভারে ছয়ের পর চার মেরে তামিম মোমেন্টাম ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন, ইমন অবশ্য একটি ছয় ছাড়া আর কিছু মারেননি। তবে তার ২৬ বলে ১৯ রানের ইনিংসও হয়তো তেমন অসুবিধায় ফেলতো না বরিশালকে, যদি না শুভাগতর লেংথ না বুঝে ব্যাকফুটে গিয়ে ইনসাইড-এজে বোল্ড না হতেন। ইমনের আউটে নিজের হতাশা লুকাননি তামিম, তবে ৩ বল পর মিসটাইমিংয়ে ক্যাচ তুলে তাকেও ডুবতে হয়েছে হতাশায়। 

    ১ বল পর সিঙ্গেল চুরি করতে গিয়ে রান-আউট হয়েছেন আফিফ, শর্ট কাভারে সে রানটা কখনোই ছিল না, হৃদয়ও সেটিতে সাড়া দেননি। বরিশালের এরপরের গল্প ফাস্ট-ফরোয়ার্ড মুডেই বলা যায়। হৃদয় যতক্ষণে আউট হয়েছেন, ততক্ষণে জয় হয়ে গেছে অলৌকিক, এর আগে ইরফান শুক্কুর ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ব্যাটিং করেছেন একশর নিচে স্ট্রাইক রেটে। শেষ ২ ওভারে বরিশাল হারিয়েছে ২টি করে উইকেট। 

    ম্যাচে দুই দলের বড় পার্থক্যই তো হয়ে দাঁড়িয়েছে ইনিংসের শেষ ২ ওভার।