• বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ২০২০
  • " />

     

    ইয়াসির-আকবরের লাফের পর মুক্তারের লাগামে রাজশাহীকে আটকে দিল ঢাকা

    ইয়াসির-আকবরের লাফের পর মুক্তারের লাগামে রাজশাহীকে আটকে দিল ঢাকা    

    বেক্সিমকো ঢাকা ১৭৫/৫, ২০ ওভার (রাব্বি ৬৭, আকবর ৪৫*, মুশফিক ৩৭, মুগ্ধ ২/৩৮, মাহাদি ১/২৩) 
    মিনিস্টার রাজশাহী ১৫০ অল-আউট, ১৯.১ ওভার (রাব্বি ৫৮, রনি ৪০, মুক্তার ৪/৩৭, শফিকুল ৩/৩১) 
    ঢাকা ২৫ রানে জয়ী 


    ইয়াসির আলি রাব্বি ও আকবর আলি ঠিক সময়ে লাফ দিলেন, আর ঠিক ঠিক সময়ে রাজশাহীর লাফ আটকে দিলেন মুক্তার আলি। ইয়াসির ও আকবরের যথাক্রমে ৩৯  বলে ৬৭ ও ২৩ বলের অপরাজিত  ৪৫ রানের ইনিংসে ভর করে, শেষ ৯.৫ ওভারে ১১১ রান তুলে ১৭৫ পর্যন্ত যাওয়া বেক্সিমকো ঢাকা শেষ পর্যন্ত মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে আটকে দিয়েছে ১৫০ রানে। রনি তালুকদারের ২৩ বলে ৪০ বা ফজলে রাব্বির ৪০ বলে ৫৮ রানে লাফ দিতে চাওয়া রাজশাহী মূলত থমকে গেছে মুক্তারের বোলিংয়ে। এ দুজন ছাড়াও তিনি নিয়েছেন মাহাদি হাসান ও ফরহাদ রেজার উইকেটও।  

    টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকা এদিন ওপেনিংয়ে পাঠিয়েছিল নাঈম হাসানকে, তবে সে টোটকা কাজে লাগেনি তাদের। মাহাদির করে প্রথম ওভারেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন তিনি। আরেক নাইম-- নিয়মিত ওপেনার শেখও ভুগেছেন, ১৯ বলে ৯ রান করে আরাফাত সানিকে কাট করতে গিয়ে এজড হয়েছেন তিনি, সে উইকেট রাজশাহী পেয়েছে রিভিউ নিয়ে। 

    এরপর মুগ্ধর বলে তানজিদ ৪ বলে ২, আর ১১তম ওভারে মুগ্ধর অফস্টাম্পের বাইরের বলে লেট-কাট করতে গিয়ে গ্লাভড হয়ে ২৯ বলে ৩৭ রান করা মুশফিকুর রহিম ফিরলে বেশ চাপেই পড়ে গিয়েছিল ঢাকা। রাব্বি ও আকবর এর আগে একটি করে আশা-জাগানিয়া ইনিংস খেলেছিলেন, তবে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি নিজেদের। 

    এদিন ঝলসে উঠলেন তারাই। রাব্বি শুরুতে আউটসাইড-এজে একটা বাউন্ডারি পেয়েছিলেন, এরপর রেজাকে কাভার ড্রাইভে মেরেছিলেন আরেকটি চার। তবে মুশফিকের উইকেটের পর একটু ধীরগতিতে এগিয়েছেন, একই অবস্থা ছিল আকবরেরও। আকবর প্রথম ৮ বলে করেছিলেন সমানসংখ্যক রান, তিনি খোলস ছেড়েছেন আরাফাত সানিকে সুইপ করে চার ও লং-অফ দিয়ে ছয় মেরে। 

    ১৭তম ওভার শেষেও ১২৬ রান ছিল ঢাকার, তবে ততক্ষণে একটা জীবন পেয়েছেন ইয়াসির, ৩১ রানে রেজার বলে লং-অনে তার সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন ইমন। মুগ্ধর করা ১৮তম ওভারে উঠেছে ২৩ রান, যার ২১ রানই এনেছেন রাব্বি-- ৩ চার ও ১ ছয়ে। এর মাঝে ছয়টি দিয়ে ফিফটি পূর্ণ হয়ে ইয়াসিরের, ৩২ বলে। 

    মুগ্ধর পর এবাদতের ওপর চড়াও হয়েছিলেন তিনি, তার দুটি ও আকবরের একটি বাউন্ডারিতে উঠেছিল ১৫ রান। শেষ ওভারে রেজার ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে ফিরলেও ঢাকাকে নিয়ে গেছেন দারুণ এক পজিশনে। রাব্বি ৯টি চারের সঙ্গে মেরেছেন একটি ছয়, আকবর তার ইনিংসে ৩ চারের সঙ্গে মেরেছেন দুটি ছয়, যার শেষটি এসেছে শেষ ওভারের পঞ্চম বলে, রেজাকে কাউ কর্নার দিয়ে মেরে। দুজনের শুধু হিটিং নয়, রানিং বিটুইন দ্য উইকেটও ছিল দারুণ।  

    ১৭৬ রানের লক্ষ্যে যেমন শুরু করতে হতো, রাজশাহী করেছিল ঠিক তার বিপরীত। ৪.১ ওভারের মাঝেই ৩ উইকেট হারিয়েছিল তারা ১৫ রানে। নাজমুল হোসেন শান্ত রবির বলে স্কয়ার লেগে, রুবেল হোসেনের বলে আনিসুল ইসলাম ইমন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেওয়ার পর মোহাম্মদ আশরাফুল এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন শফিকুল ইসলামের বলে, শেষ উইকেটটি ঢাকা পেয়েছিল রিভিউ নিয়ে।  

    পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ১৩ রান তুলেও ৩২ পর্যন্ত রাজশাহীকে নিতে পেরেছিলেন রনি তালুকদার। ১২তম ওভারে মুক্তারের বল স্টাম্পে ডেকে আনার আগ পর্যন্ত আলোচনায় ছিলেন তিনিই, তার ২৪ বলে ১ চার ও ৩ ছয়ে ৪০ রানের ইনিংসই ছিল রাজশাহীর রানতাড়ার প্রথম সরব অংশগ্রহণ। 

    রনির সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি ছিল ফজলে রাব্বির, যিনি মূলত গিয়ার বদলেছেন তার সঙ্গী আউট হওয়ার পরই। প্রথম ২৬ বলে ২৮ রান করা রাব্বি পরের ১৪ বলে করেছেন ৩০ রান। মুক্তারকে লং-অফ দিয়ে ছয় মেরে ফিফটি করার পরের বলে একটা চার, তবে এরপরই শেষ হাসিটা মুক্তারের। শট খেলার পরই রাব্বি বুঝেছিলেন, আদতে তার টাইমিংটা যুত হয়নি। 

    রাব্বির আগেই মাহাদি হাসানকেও ফিরিয়েছেন মুক্তার, তার স্লোয়ারে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটের ফাঁদে ধরা পড়েছিলেন যিনি। এরপর নুরুল হাসান সোহান শফিকুলকে একটা ছয় মারার পরপরই শরীরঘেঁষা বলে ডাউন দ্য লেগে এজড হয়েছেন। রাজশাহীকে নিয়ে শেষ একটা লাফ দিতে চেয়েছিলেন রেজা, মুক্তারকে পরপর দুই ছয় মেরে। তবে এরপরই লেংথ কমিয়ে আনলেন মুক্তার, রেজার হলো মিসটাইমিং। এরপর শফিকুল ও রুবেল এসে সেরেছেন ঢাকার দ্বিতীয় জয়ের আনুষ্ঠানিকতা, প্রথম তিন ম্যাচই হেরেছিল যারা।