চট্টগ্রামের জয়রথ থামিয়ে ঢাকার টানা তিনের কারিগর মুশফিক ও বোলাররা
বেক্সিমকো ঢাকা ১৪৫/৪, ২০ ওভার (মুশফিক ৭৩*, ইয়াসির ৩৪, নাহিদুল ১/১৬, মোস্তাফিজুর ১/১৯)
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ১৩৮/৯, ২০ ওভার (লিটন ৪৭, জয় ২৬, মুক্তার ৩/৩৯, রবি ২/২৩, রুবেল ২/২৪, শফিকুল ১/২৫)
ঢাকা ৭ রানে জয়ী
মুশফিকুর রহিমের ৫০ বলে ৭৩*, ইয়াসির রাব্বির সঙ্গে তার ৪র্থ উইকেটে ৮৬ রানে ভর করে ১৪৫ পর্যন্ত যাওয়া বেক্সিমকো ঢাকা বোলারদের দৃঢ়তায় আটকে দিয়েছে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে টানা ৪ ম্যাচ জয়ের পর অবশেষে হেরেছে চট্টগ্রাম, এ ম্যাচ জিতলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে যেত তাদের। লিটন দাসের ৪৭ রানের সঙ্গে মাহমুদুল হাসান জয়ের ২৬ রানের পর মিঠুন, মোসাদ্দেক, শামসুর শুরু করেও শেষ করতে পারেননি, চট্টগ্রামও পার হতে পারেনি। চট্টগ্রামের প্রথম হারের দিনে ঢাকা জিতলো টানা তিন ম্যাচই, যারা হেরেছিল প্রথম ৩টি।
অথচ এক সময় ঢাকার এ স্কোরটাও মনে হচ্ছিল ‘বিলো-পার’, সামনে চট্টগ্রাম বলেই হয়তো। তবে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ঢাকার জন্য এটিই মোটামুটি অনেকখানি এগিয়ে আসা। ওপেনিংয়ে এদিন নাইম শেখের সঙ্গে সাব্বির রহমানকে পাঠিয়েছিল ঢাকা। তবে কার্যকর হয়নি সেটি। নাইম দারুণ শটে একটি ছয় ও চার মারার পর আবারও তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন দ্বিতীয় ওভারেই, শরিফুলের বলে। এরপর তানজিদ হাসান তামিম ও সাব্বির রহমান যথাক্রমে এলবিডব্লিউ হয়েছেন নাহিদুল ইসলাম ও রাকিবুল হাসানের বলে। এ ম্যাচ দিয়ে দলে ফেরা সাব্বির ১০ বলে করেছেন ৭, টুর্নামেন্টে প্রথমবার খেলতে নামা রাকিবুল শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়েছেন ১টি।
পাওয়ারপ্লেতে ২৩ রান ওঠার পর মুশফিক ও রাব্বি এগিয়েছেন ধীরলয়ে। ১৪তম ওভার পর্যন্ত মুশফিকের স্ট্রাইক রেট ছিল ১০০-এর একটু বেশি, রাব্বির কম। রাব্বি শেষ পর্যন্ত ১৭তম ওভারে আউট হয়েছেন মোসাদ্দেককে ফ্লিক করতে গিয়ে। মুশফিক এরপর ৪২ বলে পূর্ণ করেছেন ফিফটি, ১৮তম ওভারে শরিফুলকে মারা চার-ছয়ে ভর করে এসেছিল ১৫ রান। শেষ ২ ওভারে ঢাকা তুলতে পেরেছে ১৯ রান।
রানতাড়ায় চট্টগ্রাম হোঁচট খেয়েছিল প্রথম ওভারেই, রুবেল হোসেনের বলে প্লাম্ব ইনফ্রন্ট হয়েছেন সৌম্য সরকার। যদিও বলটা পড়েছিল লেগসাইডের বাইরে, তবে লিটনের সঙ্গে পরামর্শে রিভিউ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। লিটন ও মাহমুদুল হাসান জয়ের জুটি অবশ্য চট্টগ্রামকে আগলে রেখেছিল, তাদের ব্যাটিংয়ের সময় চট্টগ্রামকে মনে হচ্ছিল নিরাপদই।
দারুণ কিছু শট খেলার পর রবিউল ইসলাম রবিকে স্লগ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েছেন জয়, লিটন ছিলেন আরও কিছুক্ষণ। মাঝে ঢাকার একটা রিভিউ পেরিয়ে অবশেষে আউট হলেন ফাইন লেগে শফিকুলের সামনে ডাইভ দিয়ে নেওয়া দুর্দান্ত একটা ক্যাচে। ৩৯ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে লিটন মেরেছেন ৩টি চার আর ১টি ছয়।
সেই ক্যাচ নেওয়ার ঠিক পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে শফিকুল আবার আঘাত করলেন, এবার তাকে ফ্লিক করতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ দিলেন অধিনায়ক মিঠুন, ২০ বলে ২১ রান করে। শেষ ৫ ওভারে চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ৪৭ রান, মোসাদ্দেক, জিয়ার সঙ্গে ছিলেন শামসুর রহমানও।
১৮তম ওভারে মুক্তারের বলে শামসুর রহমান দিলেন ক্যাচ, এরপর জিয়া হলেন রান-আউট। তবে শেষ দুই বলে নাহিদুলের দুই চার ম্যাচে রাখলো চট্টগ্রামকে, মোসাদ্দেক ছিলেন তখনও। রুবেলের প্রথম বলে চার মারলেন মোসাদ্দেক, এরপর ডট, ডাবলস পেরিয়ে ডিপ পয়েন্টে দিলেন ক্যাচ। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান, মোস্তাফিজ নেমেই একটা ছয়ে রোমাঞ্চ জাগিয়েছিলেন। তবে পঞ্চম বলে আরেকটি বড় শটের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে তার। চট্টগ্রামের অসম্ভব আশাও শেষ হয়ে গেছে সেখানেই।