• বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ২০২০
  • " />

     

    সাব্বিরের ফিফটি, রবির ৫ উইকেট, টানা ৪ জয়ে প্লে-অফে ঢাকা

    সাব্বিরের ফিফটি, রবির ৫ উইকেট, টানা ৪ জয়ে প্লে-অফে ঢাকা    

    বেক্সিমকো ঢাকা ১৭৯/৭, ২০ ওভার (সাব্বির ৫৬, নাইম ৩৬, আল-আমিন ৩৬, আকবর ৩১; শহিদুল ২/৩১, হাসান ১/২৩, মাশরাফি ১/২৬) 
    জেমকন খুলনা ১৫৯ অল-আউট, ১৯.৩ ওভার (জহুরুল ৫৩, শামিম ২৪, রবি ৫/২৭, রুবেল ২/৩০, মুক্তার ২/৩৫)
    ঢাকা ২০ রানে জয়ী  


    আগের ম্যাচে টেবিলের শীর্ষে থাকা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের জয়রথ থামিয়েছিল বেক্সিমকো ঢাকা। এবার দুইয়ে থাকা জেমকন খুলনাকে গুঁড়িয়ে দিল তারা। সাব্বির রহমানের ফিফটির সঙ্গে নাইম শেখ, আল-আমিন ও আকবর আলির ক্যামিওতে ১৭৯ রান তোলা ঢাকা খুলনাকে আটকে দিয়েছে ১৫৯ রানেই, রবিউল ইসলাম রবির ৫ উইকেটে। ক্যারিয়ারে প্রথমবার রবি নিলেন ৫ উইকেট, এ টুর্নামেন্টেও এটি প্রথম ৫ উইকেট। ১ ম্যাচ বাকি রেখেই খুলনার সমান ৮ পয়েন্ট এখন ঢাকার, গ্রুপপর্বের খেলা শেষ খুলনার।

    রানতাড়ায় খুলনার লম্বা ব্যাটিং লাইন-আপ ধসে পড়েছে একে একে। জহুরুল ইসলাম করেছেন ৩৬ বলে ৫৩, শেষদিকে ৯ বলে ২৪ রানের ক্যামিও খেলেছেন শামিম হোসেন, তবে এছাড়া সে অর্থে কেউ হুমকিই তৈরি করতে পারেননি। খুলনার প্রথম দুই উইকেটই নিয়েছিলেন অফস্পিনার রবি-- জাকির হোসেন হয়েছিলেন কট-বিহাইন্ড, বাইরের বলে আলগা শট খেলে ক্যাচ তুলেছিলেন সাকিব। টুর্নামেন্টে সাকিবের ব্যাটিং-দুঃস্বপ্ন এখনও কাটেনি তাই, এদিন দুই অঙ্কও ছোঁয়া হয়নি তার। 

    পাওয়ারপ্লেতে ৪০ রান তোলা খুলনা আরেকবার ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল ১২তম ওভারে, মুক্তার ৩ বলের ব্যবধানে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও মাশরাফিকে ফেরালে। প্রথমজন ক্যাচ দিয়েছেন লং-অনে, পরেরজন কট-বিহাইন্ড। অন্যদিকে উইকেট পড়ে যাওয়া চাপে ফেলেছিল ছন্দে থাকা জহুরুলকে, ছয় মেরে ফিফটি করার পর আবারও ব্যাট চালিয়ে নাসুম আহমেদের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৪টি চার ও ২টি ছয় মেরেছেন তিনি। পরের ওভারে ফিরেছেন আরিফুলও, রবির তৃতীয় শিকার তিনি। 

    শেষ ৩৬ বলে খুলনার প্রয়োজন ছিল ৮২ রান, খুলনাকে শেষ লাইফ-সাপোর্ট দিয়েছিলেন শামিম হোসেন। মুক্তারের করা সে ওভারে এসেছিল ২২ রান, দুটি ছয়ের সঙ্গে মেরেছিলেন দুটি চার। রুবেলের করা পরের ওভারে অবশ্য আবারও ভেস্তে গেছে সব-- শামিম মিডউইকেটে ধরা পড়েছেন, শুভাগত ধরা পড়েছেন পয়েন্টে। 

    শফিকুলকে ১৯তম ওভার করিয়ে শেষ ওভার রবির ওপরই ভরসা করেছিলেন মুশফিক, শহিদুল ও হাসান মাহমুদকে করতে হতো অলৌকিক কিছু। তবে প্রথম বলে শহিদুল, তৃতীয় বলে নাজমুলের উইকেট দিয়ে উলটো ৫ উইকেট হয়ে গেল রবির। স্বীকৃত ক্রিকেটে রবির এটি প্রথম ৫ উইকেট। 

    শেষ পর্যন্ত ২০ রানের জয় পাওয়া ঢাকার নাগালে ২০০ আচে, একসময় মনে হচ্ছিল এমন। সাব্বিরের ৩৮ বলে ৫৬, মোহাম্মদ নাইম ও আল-আমিনের যথাক্রমে ১৭ ও ২৫ বলে ৩৬ রানের দুটি ইনিংসের সঙ্গে আকবর আলির ১৪ বলে ৩১ রানে ভর করে ১৭৯ রান তোলা ঢাকা শেষ ৩ ওভারে তুলেছিল মাত্র ১২ রান। 

    টসে জিতে ফিল্ডিং-- টুর্নামেন্টে এ অলিখিত নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি এদিনও। তবে দ্বিতীয় ওভারেই সাকিব আল হাসানের ওপর চড়াও হয়েছিলেন নাঈম শেখ, ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে চার ছয়ে তুলেছেন ২৬ রান। চতুর্থ ওভারে শহিদুলের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে মেরেছেন ৫টি ছয়। প্রথম ২ ওভারে ৬ রান দেওয়া মাশরাফি বিন মুর্তজা তৃতীয় ওভারে গুণেছেন ১৫, পাওয়ারপ্লেতে ৬৩ রানের ভাল ভিত পেয়েছিল ঢাকা। 

    সাব্বিরের সঙ্গে আল-আমিনের জুটি রানরেটকে পাওয়ারপ্লের পরও উঁচুতেই রেখেছিল, প্রথম ১০ ওভারে ঢাকা তুলেছিল ১০১ রান। তবে এরপর থেকে টানা ৩ ওভারে ৩ উইকেটে ছন্দপতন হয়েছিল তাদের, এর মাঝে শামিম হোসেনের আছে দারুণ দুটি ক্যাচ, কোনো বল না খেলেই রান-আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে ইয়াসির রাব্বিকে। নাজমুল অপুকে স্লগ করেছিলেন আল-আমিন, ডিপ মিডউইকেটে সীমানার ভেতর ক্যাচ নিয়ে সেটি ছুঁড়ে দিয়ে ফিরে এসে ধরেছিলেন শামিম। মাশরাফির স্লোয়ারে ফ্লিক করতে যাওয়ার মুশফিকের লিডিং-এজের ক্যাচটি ছিল আরও দুর্দান্ত। শর্ট থার্ডম্যানে বাঁদিকে ডাইভ দিয়ে ছোঁ মেরেছেন শামিম। 

    হুট করেই একটু চাপে পড়ে যাওয়া খুলনাকে এরপর আবারও টেনে তুলেছেন আকবর আলি। আবারও এসেছে চার ছয়ের ওভার, এবার শিকার নাজমুল অপু। সবগুলোই স্লটে পেয়েছিলেন আকবর, সেগুলোর সদ্ব্যবহার করেছেন দারুণভাবে, ১৫তম ওভারে উঠেছিল ২৪ রানই। 

    পরের ওভারে হাসান মাহমুদের বলে ফিরেছেন আকবর। তবে সাব্বির ছিলেন, শহিদুলকে চার মেরে ৩৫ বলে ফিফটির পর মেরেছিলেন আরেকটি বাউন্ডারি। তবে অতি-আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে সে ওভারেই ক্যাচ তুলেছেন তিনি। রানখরায় ভুগতে থাকা সাব্বির অবশেষে রানে ফিরলেন, ঢাকার জন্য স্বস্তির হয়তো সেটিই। তবে সাব্বিরের ফেরার পর আর স্বস্তি পায়নি ঢাকা। রবিকে নিচের দিকে পাঠিয়ে লাভ হয়নি তাদের, মুক্তারও উড়ান দিতে পারেননি।