• বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ২০২০
  • " />

     

    নাইমের সেঞ্চুরির শঙ্কা কাটিয়ে নাটকীয় জয়ে প্লে-অফে বরিশাল, তিনেই থাকল ঢাকা

    নাইমের সেঞ্চুরির শঙ্কা কাটিয়ে নাটকীয় জয়ে প্লে-অফে বরিশাল, তিনেই থাকল ঢাকা    

    ফরচুন বরিশাল ১৯৩/৩, ২০ ওভার (হৃদয় ৫১*, আফিফ ৫০, সাইফ ৫০, আল-আমিন ১/৫, রুবেল ১/২৮) 
    বেক্সিমকো ঢাকা ১৯১/৬, ২০ ওভার (নাইম ১০৫, ইয়াসির ৪১, শুভ ৩/১৩)
    বরিশাল ২ রানে জয়ী 


    নাইম হাসানের হঠাৎ ঝড়ে আসা সেঞ্চুরি, ইয়াসির আলি রাব্বির সঙ্গে তার ১১০ রানের জুটির শঙ্কা কাটিয়ে নাটকীয় জয়ে প্লে-অফে গেছে ফরচুন বরিশাল। ১৯৩ রানের সম্বল নিয়ে অবশ্য ১৮.৩ ওভারের মাঝে ঢাকাকে না জিতলে দিলেই হতো তাদের, আর প্লে-অফে কোয়ালিফায়ার (১ম কোয়ালিফায়ার) খেলতে এ ম্যাচে জয়ের প্রয়োজন ছিল বেক্সিমকো ঢাকার। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৭, কামরুল ইসলাম রাব্বির ওভারে মুক্তার আলি ও শেষ বলে গিয়ে আকবর আলি ছয় মারলেও ২ রানের জয় পেয়েছে বরিশাল। ফলে বিদায় নিতে হয়েছে রাজশাহীর। 

    ক্যাচ মিসে জীবন পাওয়া, এরপর শেষদিকে ওঠা ঝড়-- দ্বিতীয় ইনিংসের মতো প্রথম ইনিংসের চিত্রনাট্যও ছিল এমনই। সাইফ হাসানের ফিফটির পর আফিফ হোসেন ও তৌহিদ হৃদয়ের যথাক্রমে ২৫ ও ২২ বলের আরও দুই ফিফটিতে লাফ দিয়ে ১৯৩ পর্যন্ত গিয়েছিল ঢাকা, শেষ ৬ ওভারে তারা তুলেছিল ৮৯ রান! টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশাল পাওয়ারপ্লেতে তুলেছিল ৫০ রান, ৬ষ্ঠ ওভারে রবিকে টানা তিন চার মেরেছিলেন সাইফ। আল-আমিনকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলার আগে তামিম করেছেন ১৭ বলে ১৯, একটা করে চার-ছয়ের পরও সমানসংখ্যক বলে ১৩ রান করে মুক্তারের বলে ক্যাচ তুলেছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। 
     


    প্রথম ১০ ওভারে ৮০ রানের ভাল একটা ভিত পেলেও পরের ৪ ওভারে ২৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি বরিশাল। তবে এরপরই আফিফ হোসেন একটা জীবন পেলেন, ১২ রানে শফিকুলের বলে ক্যাচ তুলেও রবির হাতে বাঁচলেন তিনি, পেলেন ছয়। এর আগে অবশ্য একটা ছয় পেতে পারতেন, সেবার শফিকুলই বাউন্ডারি লাইনে বল আটকালেও রাখতে পারেননি, তবে টিভি আম্পায়ার দেননি ছয়ও। 

    সে ওভারের মতো পরের ওভারেও এলো ১১ রান, ১৭তম ওভারে ১৫। ততক্ষণে আফিফ ও হৃদয় হয়ে উঠেছেন আগুনে। মুক্তার আলির করা ১৯তম ওভারে উঠেছে ২২ রান, হৃদয়ের দুই ছয়ের পর আফিফ মেরেছেন আরেকটি। শেষ ওভারে শফিকুলকে ছয় মেরে ফিফটি হয়েছে আফিফের, শেষ বলে স্কুপ করে মারা চারে হৃদয়ের। দুজন মিলে মেরেছেন ৯টি ছয়, সঙ্গে ৩টি চার। 

    রানতাড়ায় বরিশালের মতোই শুরু করেছিল ঢাকাও, নাইম শেখ ও সাব্বির রহমান অতি-আক্রমণ করেননি, আবার খুব একটা ধীরগতিরও ছিলেন না। ৬ ওভারে উঠেছিল ৫২ রান, ৭ম ওভারে গিয়ে বরিশাল প্রথম ব্রেকথ্রু পেয়েছিল এ ম্যাচেই খেলতে নামা সোহরাওয়ার্দি শুভর কাছ থেকে। তাকে পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়েছিলেন সাব্বির রহমান, ১১ বলে ১৯ রান করে। 

    শুভ তার পরের ওভারে করেছেন জোড়া আঘাত-- প্রথমে রিভার্স সুইপ মিস করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন মুশফিকুর রহিম, এরপর কাট করতে গিয়ে এজড হয়েছেন আল-আমিন, যে উইকেট বরিশাল পেয়েছে রিভিউ নিয়ে। ততক্ষণে ঢাকার ওপর আসা বেশ চাপ একটু আলগা করেছিলেন নাইম ও ইয়াসিরই, ১২তম ওভারে এদিন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কত্ব করা মিরাজকে দুই ছয় মেরে। তামিম এদিন ফিল্ডিং করেননি ঠান্ডাজনিত কারণে। 

    ৬ষ্ঠ বোলার হিসেবে আসা কামরুল ইসলাম রাব্বি উইকেট পেতে পারতেন শুরুতেই, ফ্লিক করতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছিলেন নাইম। মিডউইকেটে সেই লোপ্পা ক্যাচ ছাড়লেন পারভেজ হোসেন ইমন, কী ভুলটা করলেন, সেটি বুঝতে তার খুব বেশি সময় লাগলো না। সেই ক্যাচ মিস থেকে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পূর্ণ হয়েছিল নাইমের, ৪৩ বলে। এরপর চললো ধ্বংসযজ্ঞ। 

    নাইম পরের ফিফটি করলেন মাত্র ১৭ বলে, দারুণ সঙ্গ তাকে দিয়ে গেলেন ইয়াসির আলি রাব্বি। ততক্ষণে জয়ের বদলে রানরেটের সমীকরণ সামনে বরিশালের, নাইমের সোজা ব্যাটের ব্যাটিং ছিল এমনই। অবশেষে তাকে থামালেন সুমন খান, লো-ফুলটসে লং-অফে ধরা পড়লেন নাইম, ৬৪ বলে ৮ চার ও ৭ ছয়ে ১০৫ রান করে। প্রথমভাগে তাকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি ভুগছেন, তবে এরপরই লং-অন থেকে অফের দিকে বাউন্ডারিটা নিজের করে নিয়েছিলেন। নাইম আউট হওয়ার আগে ৩১ বলে ঢাকা তুলেছিল ৭৫ রান। ঠিক পরের বলেই লং-অফে ইয়াসিরের ক্যাচ ফেললেন আফিফ, তবে এ দফা তেমন মাশুল গুণতে হয়নি। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৭, ইয়াসিরের রান-আউট, আকবরের সিঙ্গেল পেরিয়ে মুক্তারের ছয় আবারও আশা জুগিয়েছিল ঢাকাকে। সেই মুক্তারকে ফিরিয়েছেন রাব্বি, আর শেষ বলে গিয়ে ছয় মেরেছেন আকবর, তবে ততক্ষণে আশা শেষ হয়ে গেছে ঢাকার। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে এ দুই দলই।