• ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফর
  • " />

     

    বীভৎস অ্যাডিলেডের পর ৩৬-এর পেছনের যে কারণ দেখছেন কোহলি

    বীভৎস অ্যাডিলেডের পর ৩৬-এর পেছনের যে কারণ দেখছেন কোহলি    

    যেন চোখের পলকে শেষ হয়ে গেল সব। 

    প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানের লিড নেওয়া দলটা দিন শুরু করেছিল ৬২ রানে এগিয়ে থেকে, সেই তারাই ম্যাচটা হারলো দুই সেশন শেষ না হতেই। এতখানি বললে আদতে কতখানি বলা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। অ্যাডিলেড ওভালে অস্ট্রেলিয়ার সামনে ভারতের বীভৎস ব্যাটিং ছিল এমনই। নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানে অল-আউট হয়ে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে হেরে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ শুরু করেছে ভারত। বিরাট কোহলির অনুভূতিটা একটু অনুমান করাই যায়। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা মুশকিল, এমন বললেও এটি যে কষ্ট দিচ্ছে-- সেটি লুকোননি তিনি। সঙ্গে বলেছেন, এদিন তাদের এমন মহাবিপর্যয়ের পেছনে দায়ী ব্যাটসম্যানদের ইতিবাচক মানসিকতা না থাকা। আর অ্যাডিলেডে প্রথম ইনিংসে পিচ্ছিল ফিল্ডিংয়ে এই হারের পেছনের বড় একটা কারণ বলে মনে করেন তিনি। 


    জশ হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্সের দ্বিতীয় ইনিংসের ধ্বংসযজ্ঞ ছাপিয়ে অ্যাডিলেডে ম্যাচসেরা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক টিম পেইন। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে একবার জীবন পেয়েছিলেন ৭৯ রানে ৫ উইকেট যাওয়ার পর নামা পেইন, শেষ পর্যন্ত যিনি করেছেন ৭৩ রান। সঙ্গে ৪৭ রান করা মারনাশ ল্যাবুশেনও পেয়েছেন একাধিক জীবন। 

    “টেস্ট ক্রিকেটে আপনার সুযোগ নিতে হবে, যখনই আসুক না কেন। নাহলে এগুলোর চড়া মূল্য গুণতে হয়, এবং খুবই বাজেভাবে আমরা এটির প্রমাণ পেয়েছি আজ। মানে টেস্ট ক্রিকেটে সুযোগ না নেওয়ার ফলটা কী হতে পারে। বারবার তো কেউ সুযোগ দেবে না। যখনই আসবে, সেসব নিতে হবে, এবং মোমেন্টামে ভর করে ফায়দা নিতে হবে। অবশ্যই আরেকটু বেশি লিড হলে সেটা আমাদের জন্য বাড়তি প্রেরণার হতো, আর এরপর একটা ভাল শুরু করলেই প্রতিপক্ষ ঘাবড়ে যাওয়া শুরু করতো”, অ্যাডিলেড টেস্টের পর বলেছেন কোহলি। 

    তবে এমন গুবলেট পাকিয়ে ফেলার কারণ অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী বোলিং-ই কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, প্রথম ইনিংসেও অস্ট্রেলিয়ানরা এমন লেংথেই বোলিং করেছে, তবে তারা সেসব সামলেছিলেন ভালভাবে, “দল হিসেবে যতই পরিকল্পনা করা হোক না কেন, এসব গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে ব্যক্তিগত দিক দিয়ে খুবই পরিস্কার একটা মানসিকতা থাকতে হবে এবং ম্যাচকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে। এভাবেই তো জয়ের দিকে যেতে হবে। যদি মানসিকতাই ঠিক না থাকে, যেমন আজ আমাদের ছিল না, আমাদের একাগ্রতার অভাব ছিল। এসব প্রতিপক্ষরা আঁচ করতে পারে, এবং অনেক চাপে ফেলে দেওয়া হবে এরপর আপনাকে। আজ সেটিই হয়েছে। সবাইকে আলাদা করে বুঝতে হবে, তাদের মনোভাব কেমন, কীভাবে দলের পরিস্থিতি বুঝে খেলাটা এগিয়ে নেওয়া যায়।” 
     


    ৫০-৬০ রানের লিড মাঝে মাঝে গোলমাল পাকিয়ে ফেলে, কোহলি বলেছেন এমনও, “একটু লিড থাকলে যা হয়, ব্যাটিং দল হিসেবে এমন একটা মানসিকতা থাকে যে, ‘আমরা শুধু ৫০ বা ৬০ রানে এগিয়ে, ফলে আগে উইকেট দেওয়া যাবে না, প্রতিপক্ষকে ম্যাচে ফিরতে দেওয়া যাবে না। ফলে সবসময়ই ইতিবাচক থাকতে হবে, এভাবে ভাবা যাবে না। এ কারণেই বলেছি, আমাদের আসলে দৃঢ়তার অভাব ছিল। ফলে আমরা শুধু এটাই দেখেছি যে ম্যাচ এখন কোথায়, বরং আমাদের দেখা উচিৎ ছিল, এরপর থেকে এটিকে কোথায় নিতে হবে, সেখানে কীভাবে নিতে হবে। আমরা যেভাবে ব্যাটিং করেছি, সেটিতেই তাদের বোলারদের আরও পরাক্রমশালী মনে হয়েছে বেশি। প্রথম ইনিংসে তারা এমন বোলিং-ই করেছিল, তবে আমরা এর চেয়ে অনেক অনেক বেশি ভাল ব্যাটিং করেছিলাম।” 

    এ ম্যাচের পরই দলকে ছেড়ে প্রথম সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর কাছে ফিরে যাবেন কোহলি। অ্যাডিলেড থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে তাই ভারত তাকে পাবে না। তবে কোহলির বিশ্বাস, তাদের দল ঘুরে দাঁড়াবে অবশ্যই। 

    অবশ্য অ্যাডিলেডে এদিন যা হয়েছে, কেন হলো, কীভাবে হলো, এসব ভাবার সময়টাই তো ভারতকে দেয়নি অস্ট্রেলিয়া।