• অন্যান্য
  • " />

     

    অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড : ওরা এগারো জন

    অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড : ওরা এগারো জন    

    ম্যাচের বাইশ ওভারের খেলা চলছে তখন। করুণারত্নের সাথে গুনাথিলাকার শতরানের ওপেনিং জুটিটা মাত্র ভেঙেছে। পোলার্ডের ওভারের প্রথম বলটা গুনাথিলাকা আলতো করে ঠেলে দিলে রান নিতে চাচ্ছিলেন নন-স্ট্রাইকে থাকা নিশানকা। তবে বল বেশিদূর যায়নি, পিচের উপরেই ছিল। পোলার্ড ছুটে আসছিলেন রান আউট করার জন্য। বোলার কাছাকাছি চলে আসতেই গুনাথিলাকা পপিং ক্রিজে ফিরতে চাচ্ছিলেন তড়িঘড়ি করে। দুর্ভাগ্যই বলতে পারেন, বুটের তলায় লেগে বল গেল সরে। পোলার্ড বলের নাগাল না পেয়ে আবেদন করে বসলেন আম্পায়ারের কাছে। দেখেশুনে থার্ড আম্পায়ার ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট দিয়ে বসলেন গুনাথিলাকাকে। শ্রীলঙ্কান ওপেনারের কাছে ব্যাপারটা বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছিল বোঝাই যাচ্ছিল বেশ। 

    তবে এই ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ অবশ্য একদম নতুন না ওয়ানডেতে। প্রথম শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান হিসেবে গুনাথিলাকা এরকম আউটের শিকার হলেও আন্তর্জাতিক ওয়ানডে এরকম ঘটনা দেখেছে আরও সাতবার। প্রথমবার ঘটেছিল (১৯৮৭) পাকিস্তানের রমিজ রাজার সাথে। সেই ঘটনাটা আরও দুর্ভাগ্যের, কারণ করাচিতে সেদিন রমিজ রাজা শতক থেকে মাত্র এক রান দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ম্যাচের শেষ বলে ডাবলস নিয়ে সেঞ্চুরি করতে গিয়ে ব্যাট দিয়ে বল সরিয়ে রান-আউট ঠেকাতে গিয়েছিলেন তিনি।   

    দুই বছর পরেই শ্রীলংকার বিপক্ষে ভারতের মহিন্দর অমরনাথ শিকার হয়েছিলেন এই অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড-এর। এর পরের ঘটনাটা আরও ১৭ বছর পরের, সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাতটিও। পেশোয়ারে ভারতের বিরুদ্ধে সুরেশ রায়নার থ্রো ইনজামাম-উল-হক ব্যাট দিয়ে বল ঠেকিয়ে ফিরেছিলেন প্যাভিলিয়নে। পরের দুই ঘটনা একই বছরে (২০১৩), দু’টিতেই জড়িয়ে আছে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানের নাম (মোহাম্মদ হাফিজ ও আনোয়ার আলি)। আট মাসের ব্যবধানে দুইজনই একইভাবে আউট হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। 

    বেন স্টোকসকে (২০১৫, লর্ডস) দিয়ে প্রথমবারের মত উপমহাদেশীয় ব্যাটসম্যানের বাইরে ওয়ানডেতে কেউ আউট হয়েছিলেন এভাবে। আর ওয়ানডেতে আজকের আগে এরকম সর্বশেষ ঘটেছিল শারজায় হাভিয়ের মার্শালের সাথে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যাটসম্যান এভাবে আউট হয়েছিলেন স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে। 

    ওয়ানডেতে আটবার ঘটলেও টেস্টে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট হয়েছিলেন মাত্র একজনই। ৭০ বছর আগে ওভাল টেস্টে (১৯৫১) স্যার লেন হাটন এরকম কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। টেস্ট ইতিহাসে ‘একমেবাদ্বিতীয়ম’ ঘটনার নায়ক হাটনের সেটা ছিল আবার ১০০-তম টেস্ট ইনিংস। 

    টি-টোয়েন্টিতেও এমন ঘটনা ঘটেছে দুইবার। প্রথমবার ইংল্যান্ডের জেসন রয় (২০১৭), পরেরবার মালদ্বীপের হাসান রশিদ (২০১৯)।

    ক্রিকেট রুলবুকের এই ‘৩৭’ নম্বর নিয়মের প্রয়োগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০ বছর আগে প্রথমবার হলেও এতদিন পরে এসে একাদশ ঘটিত হল দুর্ভাগা ব্যাটসম্যানদের।