• অন্যান্য
  • " />

     

    দুর্নীতির দায়ে ৮ বছর নিষিদ্ধ হিথ স্ট্রিক

    দুর্নীতির দায়ে ৮ বছর নিষিদ্ধ হিথ স্ট্রিক    

    দুর্নীতির দায়ে সাবেক জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক, বাংলাদেশের সাবেক বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিককে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। মূলত ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে জাতীয় ও বিভিন্ন ঘরোয়া লিগের কোচ থাকার সময় স্ট্রিকের করা দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করার পর এ সিদ্ধান্তে এসেছে আইসিসি। দুর্নীতিবিরোধি কোডের মোট ৫টি ধারা ভঙ্গের দায়ে এ শাস্তির কারণে ২০২৯ সালের মার্চ পর্যন্ত সব রকম ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে হবে তাকে। 

    স্ট্রিকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলির মূলে রয়েছে জুয়ার কাজে লাগতে পারে এমন আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট ম্যাচের তথ্য ফাঁস, একজন জাতীয় অধিনায়কসহ চারজন ক্রিকেটারকে জুয়াড়ি হতে পারেন এমন ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় ও এমন কাজে উদ্বুদ্ধ করা, অন্তত দুটি বিটকয়েন (৩৫ হাজার ইউএস ডলার) এবং একটি আইফোন গিফট পাওয়ার কথা দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটকে না জানানো, একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে চলা তার প্রায় ১৫ মাসের আলাপের ব্যাপারে না জানানো, তদন্তের আলামত নষ্ট করার চেষ্টা। 

    মূলত ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ‘মিস্টার এক্স’ নামে উল্লেখিত ওই ব্যক্তির সঙ্গে স্ট্রিকের হোয়াটসঅ্যাপ শুরু হয় বলে তদন্তে জানিয়েছে আইসিসি। জিম্বাবুয়েতে নতুন লিগ চালু করতে চান, এবং সেখান থেকে স্ট্রিক বাড়তি আয় করতে চান কিনা, সে হিসেবে আলোচনা শুরু হয় তাদের। তবে সে আলোচনাতেই সেই ব্যক্তি পরিষ্কার করেন যে তিনি জুয়াড়ি, এবং জিম্বাবুয়ের বাইরে স্ট্রিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণও চান।

    এরপর সে বছরের বিপিএলে সেই ব্যক্তি স্ট্রিকের কাছে দলের অধিনায়ক, মালিক, ক্রিকেটার বা সম্পৃক্ত কারও যোগাযোগের বিবরণী চান। স্ট্রিক সেই ব্যক্তিকে এরপর একজন জাতীয় অধিনায়কসহ বিপিএলের তিন ক্রিকেটারের এমন বিবরণী দেন। ২০১৮ সালে পাকিস্তান সুপার লিগেও এমন তথ্য চান স্ট্রিকের কাছে সেই ব্যক্তি। 
     


    ২০১৮ সালে আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগে একজন ক্রিকেটারের সঙ্গে সেই ব্যক্তিকে পরিচয় করিয়ে দেন স্ট্রিক, উদ্যত হয়েছিলেন আরেকজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেও। সে লিগের তথ্যও সে ব্যক্তির কাছে পাচার করেন স্ট্রিক। সেই ব্যক্তির কাছ থেকে দুটি বিটকয়েন নিয়েছেন স্ট্রিক, যেটির কোনো রশিদ দেখাতে পারেননি তিনি। সেই এপিএলের সময় স্ট্রিকের স্ত্রীর জন্য এই আইফোনও উপহার দেন সেই ব্যক্তি। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে স্ট্রিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলে সেই ব্যক্তির সঙ্গে আগে যোগাযোগ করেন তিনি, যার সঙ্গে আগেই কথা বলেছিল আইসিসির দুর্নীতিবিরোধি ইউনিট। কী কী বলেছেন জিজ্ঞাসাবাদে, সে ব্যাপারে জানতে চান, এবং পরে হোয়াটসঅ্যাপের কনভারসেশন ডিলিট করেন স্ট্রিক।

    এছাড়া ২০১৮ সালের আইপিএল, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ, জিম্বাবুয়ে-আফগানিস্তান সিরিজের তথ্যও স্ট্রিক পাচার করেছেন বলে উল্লেখ করেছে আইসিসি। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সেই সিরিজে জুয়াড়ি দিপক আগারওয়ালের সঙ্গে কথা হয়েছিল সাকিবের, পরে সাকিবকে তথ্য গোপনের অভিযোগে নিষিদ্ধ করার সময় যেটি উল্লেখ করেছিল আইসিসি।এছাড়া স্ট্রিকের ক্ষেত্রে যে বিপিএলের কথা বলা হয়েছে, সাকিবের ক্ষেত্রেও ছিল সে মৌসুমই।  

    আইসিসির দেওয়া বিস্তারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুরুতে স্ট্রিক তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকারের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছেন সেসব। সব মিলিয়ে ৫টি ধারা ভঙ্গ করেছেন বলেও স্বীকার করেছেন এবং মেনে নিয়েছেন শাস্তিও। ফলে আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন পড়েনি আর।

    ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া স্মিথ জিম্বাবুয়ের জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন ২০০৯ থেকে ২০১৩ এবং ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ ছিলেন তিনি। এছাড়া ২০১৮ সালে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স, ২০১৮ সালে আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগে কাবুল জাওয়ানানের বোলিং কোচ ছিলেন তিনি।