• বাংলাদেশের জিম্বাবুয়ে সফর
  • " />

     

    সৌম্যের ফিফটির পর মাহমুদউল্লাহ-শামীমে জিম্বাবুয়ের পাহাড় টপকাল বাংলাদেশ

    সৌম্যের ফিফটির পর মাহমুদউল্লাহ-শামীমে জিম্বাবুয়ের পাহাড় টপকাল বাংলাদেশ    

    লক্ষ্য ছিল প্রায় ২০০ ছুঁই ছুইঁ। এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে কেবল একবারই জিতেছিল বাংলাদেশ। তার ওপর আজ নেই তামিম, মুশফিক, লিটনরা। আগের ম্যাচ হেরে বাংলাদেশ ছিল চাপেও। কিন্তু সৌম্যর ফিফটি, সাকিবের ক্যামিও, মাহমুদউল্লাহ ও শামীমের ফিনিশিংয়ে দুর্দান্ত একটা ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করল ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়। টেস্ট ও ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতল। 

    ১৯৫ রানের লক্ষ্যটা শেষ ওভার পর্যন্ত গেছে, তবে শেষ পর্যন্ত অতটা কঠিন হয়নি বাংলাদেশের জয়। একটা সময় মনে হচ্ছিল শেষ বল পর্যন্ত লড়তে হবে বাংলাদেশকে। কিন্তু শেষ দিকে এসে কাজটা আসলে সহজ করে দিয়েছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। অভিষেকেই আলো ছড়ীয়েছিলেন, কিন্তু জয় পাওয়া হয়নি তার। আজ যখন নেমেছিলেন, তখন ওভারপ্রতি ১০ এর মতো রান তুলতে হতো বাংলাদেশকে। মাহমুদউল্লাহকে তেমন কিছু করার সুযোগ না দিয়ে শামীম কাজটা একাই ঘাড়ে তুলে নিয়েছেন। 

    শেষ ৪ ওভারে যখন ৪০ রান দরকার, তখন দুজনের জুটিটাই পথ দেখিয়েছে বাংলাদেশকে। শেষ ৩ ওভারে দরকার ২৮ রান, তখনও ম্যাচে ছিল জিম্বাবুয়ে। তবে বাংলাদেশ আসলে ম্যাচটা বের করে নিয়েছে ১৮তম ওভারে। মায়ার্সের শেষ তিন বলেই আসলে কাজটা সেরে ফেলেছেন শামীম। পর পর তিন বলে তিন চার মেরে সমীকরণটা একদম সহজ করে ফেলেছেন। ১৯তম ওভারে জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার মুজারাবানি এসেও তাই কিছু করতে পারেননি। মাহমুদউল্লাহ তার বলে আউট হলেও এই ওভার থেকে ৮ রান তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে তাই লক্ষ্য ছিল মাত্র ৫। প্রথম বলে চার মেরেই শামীম নিশ্চিত করে ফেলেছেন প্রায়। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়েই মেতেছেন উল্লাসে। 

    তার আগে বাংলাদেশকে ভিত্তিটা এনে দিয়েছিলেন সৌম্য-সাকিব। শুরুতে মোহাম্মদ নাঈম আউট হয়ে যাওয়ার পর সৌম্য খেলছিলেন ভালো। কয়েকটি শতে ভাগ্য তার পক্ষে ছিল, তবে সৌম্য ফিফটি পেয়ে যান ৪০ বলে। এরপর আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে ওঠেন, টি-টোয়েন্টিতে তার সর্বোচ্চ স্কোরও হয়ে যায়। ওদিকে ১৩ বলে ২৫ রানের ক্যামিও খেলে সাকিব ফিরে যাওয়ার পর মাহমুদউল্লাহর সাথে তার জুটিতেও দ্রুত রান উঠতে শুরু করে। সৌম্য ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ রান করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আউট হয়ে যান ৪৯ বলে ৬৮ রান করে।

    তার আগে দিনের প্রথম ভাগটা বাংলাদেশের জন্য ছিল দুই ভাগে ভাগ করা। এক ভাগে ছিলেন সাকিব, শরিফুল ও সৌম্য। এই তিন জন বল করেছেন দারুণ। বিশেষ করে শরিফুলের স্লগ ওভারের বোলিং ম্যাচটা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। শেষ দিকে তাই ঝড় তুলেও ২০০ হয়নি বাংলাদেশের। অন্যদিকে শুরুতে মারমানি-মাধেভেরের ঝড়ের পর সাকিব এসে লাগাম টেনেছেন। আর মাঝের ওভারে দুই উইকেট নিয়ে সৌম্য জিম্বাবুয়েকে আকাশে উড়তে দেননি। 

    কিন্তু বাংলাদেশের অন্য এক ভাগ গেছে দুঃস্বপ্নের মতো। তাসকিনের এক ওভার থেকে টানা পাঁচ চারে ২০ রান নিয়েছেন মাহেভেরে, শেষ দিকে আর বল পাননি তাসকিন। সাইফ উদ্দিন শুরুতে খারাপ না করলেও শেষ দিকে এসে রান দিয়েছেন অকাতরে। টানা শর্ট পিচ করে শেষ ২ ওভারেই দিয়েছেন ৩৬ রান। ৪ ওভারে তাই ৫০ রান দিয়েছেন শেষ পর্যন্ত। আর নাসুমের ওপর দিয়ে ঝড় চালিয়েছেন চাকাবভা। ৩ ওভারে নাসুম দিয়েছেন ৩৭। 

    জিম্বাবুয়ের হয়ে মাদেভেরে করেছেন ৩৬ বলে ৫৪। তবে বড় হুমকি হচ্ছিলেন চাকাবভা, তাকে থামাতে শামীম-নাঈমের বাউন্ডারি লাইনে দুর্দান্ত কম্বো ক্যাচ না হলে ম্যাচের ভাগ্য অন্যরকম হতে পারত। শেষ পর্যন্ত চাকাবভা ২২ বলে করেছেন ৪৮। শেষ দিকে বার্ল ১৫ বলে ৩১ করলেও ২০০ হয়নি জিম্বাবুয়ের।